আজকাল ওয়েবডেস্ক: অপারেশন সিঁদুর অভিযানে নিহত ভারতীয় সেনার জওয়ান ঝন্টু আলি শেখ এবং পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় নিহত বাংলার যুবক বিতান অধিকারীর পরিবারে হাতে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে এক লক্ষ টাকা করে তুলে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। সোমবার ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চে উপস্থিত ছিল এই দুই শহিদের পরিবারের পরিজনেরা। প্রথমে দুই পরিবারের পরিজনদের সম্মান জানানো হয় এবং তারপর দলীয় কর্মীদের এক টাকা করে অনুদানের মোট এক লক্ষ টাকা করে তুলে দেওয়া হয় বিতানের মা-বাবা এবং ঝন্টুর বাবার হাতে।

গত ২২ এপ্রিল দক্ষিণ কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরণে নৃশংস জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয় ২৬ জন পর্যটকের। নিহতদের মধ্যে তিনজন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন বিতান অধিকারী। বৈষ্ণবঘাটার বাসিন্দা সস্ত্রীক কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়েছিলেন। ফ্লোরিডায় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী হিসেবে কাজ করতেন তিনি। স্ত্রী-ছেলেকে নিয়ে শ্রীনগরে উদ্দেশ্যে ১৬ এপ্রিল রওনা দেন তারা। ২৪ এপ্রিল তাঁদের ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ২২ এপ্রিল জঙ্গিদের হামলায় মৃত্যু হয় বিতানের। তাঁর স্ত্রী এবং ছেলে অক্ষত ছিলেন। বিতানের পরিবারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেছিলেন মমতা ব্যানার্জি। তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছিলেন তিনি।

কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার দায় স্বীকার করেছিল লস্কর-ই তইবার শাখা সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)। জঙ্গি হামলার প্রত্যাঘাতে অপারেশন সিঁদুর অভিযান চালায় ভারতীয় সেনা। পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে)-এর ন’টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে ফেলে ভারত। সেই হামলায় ১০০ জনেরও বেশি জঙ্গিকে নিকেশ করা গিয়েছিল বলে জানিয়েছিল সেনা। পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তানও। সেই হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন বাংলার সন্তান ঝন্টু আলি শেখ।
নদীয়ার তেহট্টে পাথরঘাটার বাসিন্দা ঝন্টু কাশ্মীরে উগ্রপন্থীদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে শহিদ হয়েছিলেন। ২০০৮ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছিলেন তিনি। বাবা সুবুর শেখ একসময় চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেছেন তাঁর তিন ছেলেকে নিয়ে। বড় ছেলে এবং ছোট ঝন্টু, দু'জনেই ভারতীয় সেনায় যোগ দেওয়ার পর পরিবারটি আর্থিকভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। মেজ ছেলে দুবাইয়ে কর্মরত। বাকি দুই ছেলের মতো ছোট ঝন্টুর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল সুবুরের। ইউনিটে ফেরার পর বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন ঝন্টু।
গত ৬ মে মুর্শিদাবাদে সফরে গিয়ে ঝন্টুর পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা। সেই সভা থেকে ঝন্টু আলি শেখের স্ত্রীকে দশ লক্ষ টাকার আর্থিক ক্ষতিপূরণ এবং হোম গার্ডের চাকরি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ফের কেন্দ্রের পরীক্ষায় ফেল ১৮৫টি ওষুধ, চারটি চিহ্নিত জাল হিসেবে, কী খাচ্ছেন রোগীরা?
সোমবার ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চে দুই পরিবারের সদস্যরাই। ১২টা ৫৩ মিনিটে মঞ্চে ওঠেন তৃণমূলনেত্রী মমতা। মঞ্চে উঠেই বিতানের মা-বাবাকে আলঙ্গন করেন এবং ঝন্টুর বাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তৃণমূলনেত্রী। এরপর তিনি দুই পরিবারকে সম্মানিত করেন এবং তাঁদের হাতে তৃণমূলকর্মীদের এক টাকা করে অনুদানে জমা টাকা থেকে এক লক্ষ টাকা করে তুলে দেন মমতা।
