আজকাল ওয়েবডেস্ক: হাসপাতালের মধ্যেই মৃতদেহ খুবলে খেল কুকুর। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে। জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে এই হাসপাতালের অঙ্কোলজি বিভাগের সামনে এক ব্যক্তির দেহ পড়ে ছিল। বৃহস্পতিবার সকাল হতে দেখা যায় মৃতের পায়ের বেশ কিছুটা অংশ খেয়ে নিয়েছে কুকুর। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, মৃত একজন ভবঘুরে এবং হাসপাতালের মধ্যেই রাতে শুয়ে থাকতেন। ময়নাতদন্তের জন্য দেহটি পাঠানো হয়েছে। মৃতের পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
মেডিক্যাল কলেজের রেডিওথেরাপি ও ইন্টিগ্রেটেড অঙ্কোলজি বিভাগের করিডরে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির দেহ রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার সকালে এই ঘটনা ঘিরে হাসপাতাল চত্বরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, করিডরের এক কোণে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল মৃতদেহের বিভিন্ন ক্ষতবিক্ষত অংশ। হাসপাতালের সাফাইকর্মীরা দেহটি দেখতে পেয়ে দ্রুত কর্তৃপক্ষকে খবর দেন।
খবর পাওয়া মাত্রই ফাঁড়ির পুলিশও উপস্থিত হয় এলাকায়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ভবঘুরে ব্যক্তি যখন ঘুমিয়ে ছিলেন সেই সময় পথ কুকুরেরা আক্রমণ চালিয়েছে। মৃত ব্যক্তির পায়ের একাংশ খুবলে খেয়েছে কুকুর। দেহটি ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং মৃতের পরিচয় জানার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে সমস্ত বিষয় পরিষ্কার হবে বলে মত পুলিশের আধিকারিকদের।
আরও পড়ুন: কী ঠান্ডা! মন্দিরে ঠাকুরের গয়না চুরি করেও পালাল না চোর, মেঝেতে শুয়ে নাক ডেকে ঘুম, তারপর?
অন্যদিকে ঘটনার খবর জানাজানি হতেই চত্বরে থাকা রোগী ও রোগীর পরিজনদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গের সব থেকে পুরোনো জনপ্রিয় এই স্থানে প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে কয়েকশো মানুষ চিকিৎসা করাতে আসেন। চিকিৎসা ক্ষেত্রে বহু বিরল অস্ত্রোপচারের কৃতিত্ব রয়েছে। কিন্তু এমন ঘটনায় হতবাক সকলে। খোদ মেডিক্যাল করিডোরে এমন ঘটনায় থমথমে পরিবেশ।
এই বিষয়ে মেডিক্যাল কলেজ সুপার সঞ্জয় মল্লিক জানান, 'মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে প্রায় ১৫০টি কুকুর রয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন সময় কুকুর সমস্যা নিয়ে উচ্চ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কোনও সুরাহা মেলেনি। খবর জানতে পেরেই আমি এলাকা সরজমিনে গিয়েছি। তবে আদতেই ব্যক্তির উপর কুকুরের হামলা হয়েছে? নাকি ঘুমন্ত অবস্থায় ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে? তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং পুলিশও তদন্ত শুরু করছে। ময়নাতদন্তের ভিত্তিতেই সত্য বলা সম্ভব।'
কুকুরের সমস্যা মেডিক্যাল কলেজ চত্বরের নিত্যদিনের সমস্যা। যা নিয়ে অনেক বৈঠক ইতি পূর্বে করা হয়েছে। সমস্যা মেটানোর ক্ষেত্রে আগামীতে কোনও স্বেচ্ছা সেবক সংগঠনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে নাকি তা নিয়ে আলোচনা চলছে। এলাকায় কুকুরের উপদ্রব রয়েছে তা অস্বীকার করা যায় না।
ঘটনার পর থেকেই মেডিক্যাল চত্বরে কুকুরদের থেকে সাধারণ মানুষদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার কাজ শুরু হয়েছে। রোগী ও রোগীর পরিজনদের বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। এলাকায় কোনওরকম পাগল কুকুর রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, সমস্যা নিবিরণের ক্ষেত্রে শিলিগুড়ি পুরসভার সাহায্যর কথা চিন্তা করছে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
