আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজ্যে এসআইআর প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ শেষে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। গত শনিবার থেকে সেই খসড়া তালিকার ভিত্তিতে শুনানি প্রক্রিয়া শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। শুনানি প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই দেখা গিয়েছে ভোটারদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। বয়স্ক ভোটারদের বিশেষ করে হেনস্থা হতে হয়েছে প্রবল। সোমবার তৃণমূল কংগ্রেসের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক (সিইও)-এর দপ্তরে গিয়ে এই বিষয়ে জানিয়েও আসে তারপরেই পদক্ষেপ করল কমিশন। সোমবার সন্ধ্যায় একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কমিশন জানিয়ে দিয়েছে যে ৮৫ বছর বা তার উপরে বয়স হলে, বিশেষ ভাবে সক্ষম, অসুস্থ, অন্তঃসত্ত্বা ক্ষেত্রে বাড়ি গিয়ে তথ্য যাচাই করা হবে। একরকম তৃণমূলের দাবিকেই মান্যতা দিল কমিশন।

রাজ্যের সিইও দপ্তর সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যায় সমস্ত জেলাশাসককে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেই চিঠিতেই জানানো হয়েছে, ৮৫ বছর বা তার উপরে বয়স্ক ব্যক্তি, বিশেষ ভাবে সক্ষম, অসুস্থ ব্যক্তিদের শুনানিতে ডাকতে হবে না। যদি তাঁদের নোটিস পাঠানো হয়ে থাকে, তা হলে ফোনে তাঁদের শুনানিতে উপস্থিত হতে হবে না বলে জানিয়ে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে তাঁদের বাড়িতে গিয়েই তথ্য যাচাই করা যেতে পারে। 

কমিশনের এই বিজ্ঞপ্তির পরেই টুইট করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি। নিজের এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, “তৃণমূল ধারাবাহিকভাবে জনগণের উদ্বেগ নিরসনের কাজ করছে। আমাদের প্রতিনিধিদল আজ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে এই বিষয়টি উত্থাপন করেছে এবং আমরা আনন্দিত যে পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”

তিনি ওই পোস্টেই আরও লিখেছেন, “আমরা বিনীতভাবে অনুরোধ করছি যে, প্রবীণ নাগরিকদের, বিশেষ করে ৬০ বছরের বেশি বয়সি এবং যারা কোনও শারীরিক অসুস্থতা বা কো-মর্বিডিটিতে ভুগছেন, তাদের বিষয়গুলিও মানবিকতার খাতিরে বিবেচনা করা হোক। আমরা আশা করি, এই ধরনের ব্যক্তিদের শুনানির জন্য ডাকা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে, যাতে কোনও অপ্রয়োজনীয় দুর্ভোগ এড়ানো যায়। মানবতাই সর্বদা আমাদের নীতি হওয়া উচিত।”

প্রসঙ্গত, রবিবার বিএলএ–২-দের সঙ্গে বৈঠকে অভিষেক ব্যানার্জি ঘোষণা করেছিলেন যে, এসআইআর শুনানিতে বয়স্কদের হেনস্তার প্রতিবাদে সোমবার সকালে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে যাবে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সেই ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার প্রতিনিধিদলের সদস্যেরা সিইও মনোজ আগরওয়ালের সঙ্গে দেখা করে তিন দফা দাবি পেশ করেন। দলে ছিলেন, পার্থ ভৌমিক, শশী পাঁজা, বাপী হালদার, পুলক রায় এবং বিরবাহা হাঁসদা। যে তিন দফা দাবি তৃণমূলের প্রতিনিধদল পেশ করেছিল সেগুলি হল- ১. ‘যৌক্তিক অসঙ্গতি’ তকমা দিয়ে চিহ্নিত ভোটারদের সম্পূর্ণ তালিকাটি অবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে, যেখানে বিধানসভা কেন্দ্রভিত্তিক এবং বিভাগভিত্তিক সুস্পষ্ট বিভাজন থাকবে। ২. এই বিভাগটি তৈরি করার জন্য ব্যবহৃত মানদণ্ড, পদ্ধতি এবং আইনি কর্তৃত্ব অবিলম্বে জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। ৩. ৮৫ বছরের বেশি বয়সী প্রবীণ নাগরিক এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য, এসআইআর-এর অধীনে সমস্ত নথি যাচাই, শুনানি এবং অন্যান্য কাজ তাঁদের বাড়িতেই সম্পন্ন করতে হবে। এই তিন নম্বর দাবি নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কমিশন।