মিল্টন সেন, হুগলি,১৯ অক্টোবর: টানা বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসল। পাশাপাশি ক্রমাগত বৃষ্টি মৌমাছি কীট পতঙ্গ আসার ক্ষেত্রে বাঁধা সৃষ্টি করেছে। স্বাভাবিক কারণেই পরাগায়ন হয়নি। ফলে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে গাছে ফুল হলেও ফল ধরেনি। অনেকটাই কমেছে হুগলির বলাগড় ব্লকে সব্জি ফলন। পরিস্থিতি সামাল দিতে এবার চাষের জমিতে পৌঁছে কৃষকদের বোঝালেন কৃষি গবেষকরা। চলতি বছরের অতিবৃষ্টির ফলে সৃষ্ট নানান রোগের কারণে ব্যাপক ক্ষতি সম্মুখীন জেলার সব্জি চাষ।

আরও পড়ুন: শিঙ্গারার টাকা দেওয়ার আগেই ছেড়ে দিল ট্রেন, যাত্রীকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে বেমক্কা মার রেল হকারের

 

অবস্থা সামাল দিতে কৃষকদের পাশে দাঁড়ালেন কল্যাণী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গবেষকরা। চার মাসের টানা বৃষ্টিতে মূলত মাচার ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শশা, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুধুল, করোলা, পটল, লাউ সহ অন্যান্য ফসল। এবছর ক্ষতির পরিমাণ অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকটাই বেশি নজরে পড়েছে। শনিবার কল্যাণী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং গবেষক কৃষকদের বর্তমান অবস্থা সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে করণীয় যাবতীয় পদ্ধতি হাতে কলমে বুঝিয়ে দেন। কৃষি গবেষকরা জানিয়েছেন, জমিতে জল নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থা না থাকলে মাচার ফসল চাষে ক্ষতি লক্ষ্য করা যায়। পাতার মধ্যে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়। যার ফলে আস্তে আস্তে শুকিয়ে গাছের পাতা হলুদ হয়ে যায়। পাশাপাশি অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের ফলেও পরাগ মিলন সম্ভব হচ্ছে না। বেশ কিছু ফসল আছে যেখানে সকালের দিকে পরাগ মিলন হয়। কিন্তু চাষিরা সকালের দিকেই কীটনাশক চাষের জমিতে দেওয়ার ফলে মৌমাছির দেখা মিলছে না। কখন দিতে হবে কীটনাশক আর কি ধরনের সার প্রয়োগ করতে হবে তাও বুঝিয়ে দেন কৃষকদের। তাঁরা বলেন, দিনের বেলায় একটানা বৃষ্টির ফলে ফুলের পরাগ মিলনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টির পাশাপাশি আকাশ মেঘলা থাকার ফলে পরাগ মিলন ঘটাতে সাহায্যকারী মৌমাছি ও বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গরা আসতে পারেনি। অথচ গাছে গাছে ফুল ধরেছে। কিন্তু সেটা থেকে ফল না হওয়ায় ফুল পরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা এমন অবস্থায় নিজেরাই হাতে করে পরাগ মিলন ঘটাতে পারেন। আবার পরাগ রেনু জলের সঙ্গে পরাগরেণু স্প্রে করলেও কাজ হবে, জানান গবেষকরা। সব্জি চাষের জন্য বিখ্যাত হুগলির বলাগড়। এখানকার একতার পুর পঞ্চায়েত, সিজা কামাল পুরের ঢাকছরা গ্রাম, সাখারের পার ইত্যাদি গ্রাম শসা চাষের জন্য বিখ্যাত। তবে এবারে ওই জায়গা গুলিতে শশার ফলন উল্লেখযোগ্য ভাবে কম। তাই শশা চাষীদের সঙ্গেও এবিষয়ে কথা বলেন গবেষকরা।

আরও পড়ুন: বধূর গর্ভে কার সন্তান তা নিয়ে খুনোখুনি প্রেমিক ও স্বামীর মধ্যে! জোড়া খুনে উত্তপ্ত রাজধানী 

ছবি পার্থ রাহা।