অতীশ সেন: ঝাড়গ্রামে গর্ভবতী হাতির মৃত্যুর ঘটনায় গোটা রাজ্য যখন তোলপাড়, ঠিক এই ঘটনার উল্টো ছবি দেখা গেল গরুমারায়। হাতিদের রাখি পরিয়ে তাদের রক্ষা করার শপথ নিয়ে উদযাপিত হল 'রাখি বন্ধন'। জলপাইগুড়ি জেলার গরুমারা জাতীয় উদ্যানের রামসাই বন বিভাগের মেদলা পিলখানায় থাকা পাঁচ কুনকি হাতিকে পরানো হয় রাখি। জানা গিয়েছে, বিগত কয়েক বছর ধরে স্থানীয় পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের সহায়তায় বনদপ্তরের পক্ষ থেকে এমন ব্যাতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। অন্যদিকে, সোমবার রাখি উপলক্ষে চালসার টিয়াবনে গাছকে রাখি পরিয়ে দিলেন পরিবেশকর্মীরা।
রাখি বন্ধন অনুষ্ঠানের আগে রামশাই ক্যাম্পের পাঁচ কুনকি হাতিকে শিলাবতী, আমনা, রামি, অরণ্য, রাজা'কে দুপুরে স্নান করানো হয়। এর পর খড়িমাটি ও চক দিয়ে চলে তাদের রূপচর্চা। তার পর তাদের নিয়ে যাওয়া হয় কালীপুর ইকো ভিলেজে। সেখানে মাহুতদের সাহায্য নিয়ে ঢাউস আকারের রাখি হাতিদের কপালে পড়িয়ে দিলেন পরিবেশকর্মী ও স্কুল পড়ুয়ারা। অনুষ্ঠানের পর ‘লাঞ্চের’ মেনুতে হাতিদের জন্য ছিল তাদের প্রিয় বিভিন্ন খাবার। হাতিদের পাশাপাশি এদিন মাহুত, পাতাওয়ালা সহ বনকর্মীদেরও রাখি পরিয়ে মিষ্টিমুখ করানো হয়। এদিনের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের সাউথ রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার সুদীপ দে। পাঁচ কুনকি হাতিদের রাখি পরিয়ে বর্তমানে পৃথিবীর বুকে টিকে থাকা বিরাটদেহী এবং অত্যন্ত সংবেদনশীল এই প্রানীদের সুরক্ষার জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য ও কচিকাঁচারা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান বনকর্মীরা।
লাটাগুড়ির পরিবেশকর্মী অনির্বাণ মজুমদার জানান, বিগত সাত বছর ধরে রাখিপূর্ণিমার দিনটি তাঁরা এভাবেই উদযাপন করে চলেছেন। বন দপ্তরের সহযোগিতায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তাঁরা শপথ নিয়েছেন হাতি রক্ষার। তিনি বলেন, 'চারদিকে যেভাবে হাতি-মানুষ সংঘাত বেড়ে চলছে এবং বিভিন্ন দুর্ঘটনায় হাতিদের মৃত্যু ঘটছে, তা যথেষ্ট চিন্তার।' পাশাপশি, চালসা নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার সোসাইটি' নামের পরিবেশপ্রেমী সংস্থার কর্মীরা টিয়াবন এলাকার বনাঞ্চলে গিয়ে গাছের গায়ে রাখি পরিয়ে দেয়। সংস্থার পক্ষে মানবেন্দ্র দে সরকার বলেন, 'পরিবেশের অন্যতম প্রধান অঙ্গ গাছ। গাছকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এই বার্তা দিতেই আমাদের এই উদ্যোগ।'
