আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে এসআইআর (Special Intensive Revision)-এর কাজ। বিশেষ নিবিড় সংশোধনের এই প্রক্রিয়ায় বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন বিএলওরা।

কিন্তু এই কাজ ঘিরেই এখন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক মহল। বিশেষ করে মালদা জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা, যেমন ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদা, সেখানে এই নিয়ে রাজনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে।

গত কয়েক বছরে এই অঞ্চলের জনসংখ্যা বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। অভিযোগ, সীমান্ত পেরিয়ে বহু মানুষ এই এলাকায় এসে বসবাস শুরু করেছেন। এরই মধ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু হওয়ায় তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক।

ইংরেজবাজার পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শুদ্ধোধন মিত্র, যিনি একসময় গুজরাটে কাজ করতেন, বলেন, ‘২০০২ সালে আমি গুজরাটের ভোটার ছিলাম। এখন বহু বছর পরে নিজের শহরে ফিরে এসেছি, আশা করছি এবার নাম উঠবে ভোটার তালিকায়।’

অন্যদিকে, পুরাতন মালদার মুচিয়া এলাকার বাসিন্দা নির্মল কুমার বিশ্বাস জানান, তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের পাবনা জেলা থেকে মালদায় এসেছিলেন এবং তখন থেকেই এখানেই বসবাস করছেন।

কিন্তু ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তার নাম না থাকায় এখন তার কপালে চিন্তার ভাঁজ। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক তরজা ক্রমশ বাড়ছে।

মালদা দক্ষিণের কংগ্রেস সাংসদ ও জেলা সভাপতি ইসা খান চৌধুরী বলেন, ‘এর আগেও এসআইআর হয়েছে, এমনকি বিহারেও হয়েছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বিজেপি ও তৃণমূল উভয়েই অযথা মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করছে। অনেক জায়গায় দেখা যাচ্ছে, বিএলওরা তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে বসে ভোটার তালিকা পরীক্ষা করছেন। এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’

এর জবাবে বিজেপি দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘এসআইআর সম্পর্কে সংসদের কোনও ধারণাই নেই। কংগ্রেস ও তৃণমূল একসঙ্গে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।’

অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি কটাক্ষ করে বলেন, ‘এসআইআর নিয়ে যারা অযথা হৈচৈ করছে, তারা আসলে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে চাইছে। কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপির দ্বিচারিতা এখন মানুষ বুঝে গিয়েছে।’

সীমান্ত অঞ্চলে এসআইআর নিয়ে এই রাজনৈতিক দোষারোপ পাল্টা দোষারোপে এখন সরগরম মালদা। প্রশাসনের দাবি, এসআইআর-এর কাজ সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে এবং নির্দেশিকা মেনে করা হচ্ছে। তবে তার মধ্যেও রাজনৈতিক চাপানউতোরে এলাকায় উদ্বেগ বাড়ছে দিন দিন।