আজকাল ওয়েবডেস্ক: হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে মহিলা জুনিয়র চিকিৎসককে নিগ্রহের ঘটনায় আগেই গ্রেপ্তার হয়েছিল এক ট্রাফিক হোমগার্ড-সহ দু’জন।
মঙ্গলবার রাতে উলুবেড়িয়ার শিসবেড়িয়ার নিজের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আরও একজনকে। এই নিয়ে তৃতীয় অভিযুক্ত ধরা পড়ল পুলিশের জালে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে , ধৃতের নাম শেখ সম্রাট।
হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেই শনাক্ত করা হয় তাকে। অন্য দিকে, অস্থায়ী হোমগার্ডের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে মূল অভিযুক্ত শেখ বাবুলালকেও। অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই তড়িঘড়ি কর্তব্য থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বাবুলালকে।
ওই যুবক উলুবেড়িয়া ট্রাফিক গার্ডে অস্থায়ী হোমগার্ড হিসাবে কর্মরত ছিল। কালীপুজোর রাতে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার পর পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে বলেই দাবি করেছেন রাজ্যে চিকিৎসকদের সংগঠন প্রোগ্রেসিভ হেল্থ অ্যাসোসিয়েশন-এর সহ সভাপতি এবং তৃণমূল বিধায়ক ডাঃ নির্মল মাজি।
আরও পড়ুন: বন্ধুর সঙ্গে কালীপুজোয় ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে আক্রান্ত তরুণী, প্রতিবাদ করলে বেধড়ক মারধর দাদাকেও
এদিন উলুবেড়িয়ার এই হাসপাতালে যান তিনি এবং তৃণমূলের আরেক চিকিৎসক বিধায়ক ডাঃ রানা চ্যাটার্জি প্রমুখ। ঘটনা প্রসঙ্গে নির্মলের দাবি, 'পুলিশ দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে। বিরোধীরা বলছেন হাসপাতালের তরফে নাকি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। এটা একেবারেই সত্যি নয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যথাযথ সময়েই অভিযোগ দায়ের করেছে।'

এদিন কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন এই দুই চিকিৎসক নেতা। বৈঠকের পর নির্মল জানিয়েছেন, 'মহিলা নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা আরও বাড়ানোর বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে ঢোকার জন্য যে গেটটি আছে সেই গেট দিয়ে যাতে একসঙ্গে অনেক লোক ঢুকতে না পারেন সেজন্য গেটে শিকল দিয়ে আটকানোর কথা বলা হয়েছে। মূল বিষয়টি হল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি প্রতিটি সরকারি হাসপাতালেই যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সেগুলি যথাযথ ব্যবহার করতে হবে।'
প্রসঙ্গত, কালীপুজোর রাতে একজন রোগী দেখার সময় হাসপাতালের ভিতরেই একজন জুনিয়র মহিলা চিকিৎসককে নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় এক হোম গার্ড-সহ দু'জন গ্রেপ্তার হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ আরও একজনকে গ্রেপ্তার করে। আপাতত ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনজনকে।
অন্যদিকে ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার বিজেপির বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে অশান্তি ছড়ায় হাওড়ার পাঁচলায়। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বিজেপির মিছিল এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। শুরু হয় তুমুল ঝামেলা ও অশান্তি।
এর পাশাপাশি বুধবার বাম ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকেও উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সেইসঙ্গে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির পক্ষ থেকেও হাসপাতালে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন, অভিযুক্তরা শাসক দলের সঙ্গে যুক্ত।
এই বিষয়ে নির্মল জানিয়েছেন, 'এই অভিযোগ একেবারেই সত্যি নয়। অভিযুক্তদের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। আমি এলাকায় দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তাঁরা জানিয়েছেন, এদের সঙ্গে কোনো অবস্থাতেই দলের সঙ্গে সম্পর্ক নেই।'
আরও পড়ুন: আতঙ্কে প্রাণী সমাজ! আতশবাজির ভয়াবহ শব্দে পথচারীর আশ্রয় মেট্রো, শোরগোল যাত্রীদের মধ্যে
