আজকাল ওয়েবডেস্ক: দীপাবলির রাত। আলোর রাত। কিন্তু আলোর, উৎসবের রাতেই পরপর বিপদ। রাজ্যের একাধিক জায়গায় দীপাবলির রাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পরপর। খড়দহ, বেহালার পর, দীপাবলির রাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে কেশিয়াড়ি, মুর্শিদাবাদেও। 

স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার রাতে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে একটি পোশাকের দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। দোকানের মালিক জানিয়েছেন, ফোনে তাঁকে খবর দেওয়া হয়। তখন মধ্যরাত পেরিয়ে গিয়েছে। দোকানের মালিকের দাবি, বাজি থেকেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলাও জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি।

অন্যদিকে কালী পুজোর রাতে বহরমপুর শহরের খাগড়া এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সবকিছু পুড়ে গিয়েছে। দমকলের দু'টি ইঞ্জিন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে  আধ ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে আগুন লাগার এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। আগুন লাগার পরই ওই বহুতলের সমস্ত বাসিন্দা নিজেদের ঘর খালি করে দ্রুত নীচে নেমে চলে আসেন। 

সূত্রের খবর, খাগড়া এলাকায় যে বহুতলে আগুন লেগেছিল, তার একতলাটি বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হয়। বাকি চারটি তলায় আবাসিকরা থাকেন। কালীপুজোর রাতে চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটের মধ্যে হঠাৎ করেই আগুন লেগে যায়। কিছুক্ষণ পর ওই বহুতলের কয়েকজন বাসিন্দা ফ্ল্যাটের জানলা দিয়ে আগুন এবং কালো ধোঁয়া বের হতে দেখেন। 

আরও পড়ুন: কালীপুজোর পরের দিনই বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড খড়দহে, পুড়ে ছাই কারখানা 

ফ্ল্যাটের কয়েকজন বাসিন্দা প্রথমে  'ফায়ার এক্সটিংগুইশার' দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় দ্রুত দমকলে  খবর দেওয়া হয়।  তবে খাগড়া এলাকার সরু গলির মধ্যে বহুতলটি অবস্থিত হওয়ায় দমকলের ইঞ্জিন সেখানে ঢুকতে যথেষ্টই বেগ পায়। দমকলের কর্মীরা  কিছুক্ষণের চেষ্টায় বাইরে বড় পাইপ ব্যবহার করে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। 
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ফ্ল্যাটটিতে আগুন লেগেছিল তার মালিক বিমল মুকিম । যদিও আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে তিনি কিছুই বলতে রাজি হননি। 

প্রসেনজিৎ মন্ডল নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, 'প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি ওই ব্যক্তির বাড়ির  ঠাকুর ঘরে প্রদীপ জ্বলছিল। সেখান  কোনওভাবে  প্রদীপটি পড়ে গিয়ে ঠাকুর ঘরে থাকা অন্যান্য জিনিসে আগুন লেগে যায়। ওই ঘরে দাহ্য পদার্থ বেশি থাকায় দ্রুত ওই ফ্ল্যাটটি আগুনের গ্রাসে চলে যায়।'

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, যে বহুতলটিতে আগুন লাগে তার আশেপাশে বেশ কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান-সহ একটি মিষ্টির দোকান রয়েছে। ওই দোকানের জন্য বহুতলের কাছে বেশ কিছু গ্যাস সিলিন্ডার মজুত করে রাখা হয়েছিল। আগুন লাগার ঘটনা দেখতে পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত ওই গ্যাস সিলিন্ডারগুলি সরিয়ে নিয়ে যান। 

বহরমপুর ফায়ার স্টেশনের ওসি মলয় মজুমদার বলেন, ‘কালীপুজোর রাত হওয়ায় দমকল দপ্তরের কর্মীরা আগে থেকেই যেকোনও ধরনের অগ্নিকাণ্ডের মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন।‘ম
 
দীপাবলীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেল পুরো বাড়ি। সোমবার রাতে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জঙ্গলমহল অধ্যুষিত হাজরা গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়চাটি গ্রামে। জানা গিয়েছে, কেশিয়াড়ি ব্লকের খাজরা গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়চাটি গ্রামের বাসিন্দা সুরেন্দ্রনাথ মাইতি ও সর্বেশ্বর মাইতির মাটির বাড়িতে রাতের অন্ধকারে হঠাৎই আগুন লাগে। খড়ের ছাউনি হওয়ায় আগুন মুহূর্তের মধ্যে পুরো বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে পুরো বাড়ি। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় পুরো গ্রাম। বাড়িতে আগুন জ্বলতে দেখে পরিবারের সমস্ত সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। এলাকায় খবর ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাস্থল গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে কেশিয়াড়ি থানা পুলিশ ও খড়গপুর দমকল বাহিনী পৌঁছে কয়েক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে যায় বাড়ির সমস্ত আসবাবপত্র। প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবারের দাবি দীপাবলীর রাতে আতশবাজি থেকে আগুন লেগেছে। এদিকে আগুনে বাড়ি পুড়ে পরিবারটি আর্থিক ও অন্যান্য সামগ্রিক দিক থেকে একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।  পুলিশ ও দমকল সূত্র জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর নেই। ঘটনার নির্দিষ্ট কারণ জানতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।