আজকাল ওয়েবডেস্ক: এবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের রিপোর্টেও উঠে এসেছে বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষী জনগণের উপর অত্যাচার। শনিবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক ট্যুইটার) একথা জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি জানান, আমেরিকার নিউ ইয়র্ক-এর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচ আর ডব্লিউ) তাদের রিপোর্টে তুলে ধরেছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষী জনগণকে হেনস্থা, ধর্মীয় বা অন্যান্য বিষয় তুলে তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ছাড়াও বেআইনিভাবে তাঁদেরকে দেশছাড়া করা হচ্ছে। 

 

এবিষয়ে মমতা বলেন, এই সংগঠনের এশিয়া ডিরেক্টর এলাইন পিয়ারসন সরকারিভাবে জানিয়েছেন, বাংলাভাষীদের যাকে খুশি তাকে দেশছাড়া করে বিজেপি ভেদাভেদকেই প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। এমনকী এই দেশ থেকে বিতারিত হওয়া বাসিন্দাদের মধ্যে ভারতীয় নাগরিকরাও আছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন তাঁরা অনুপ্রবেশ আটকাচ্ছেন। কিন্তু সেটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। 

 

আরও পড়ুন: চাকরির পরীক্ষায় জ্ঞান হারান, হাসপাতালে যাওয়ার পথে চলন্ত অ্যাম্বুল্যান্সেই গণধর্ষণ! তরুণীর বর্ণনায় শিউরে উঠল পুলিশ

 

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এইচ আর ডব্লিউ'র প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্য অসম, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, ওড়িশা এবং দিল্লিতে ভারত সরকারের গৃহ মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশে এই জিনিসগুলি একেবারে 'সিস্টেমেটিক্যালি' করা হচ্ছে। যা লজ্জার এবং এখনই বন্ধ করতে হবে বলে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলিও এই সমস্ত বিষয়গুলি নিয়ে সরব হচ্ছে। 

 

?ref_src=twsrc%5Etfw">July 26, 2025

ইতিমধ্যেই বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষী মানুষের উপর এই অত্যাচারের ঘটনা একাধিকবার সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে। কোনও আটকে রেখে অত্যাচারের অভিযোগ আবার কোথাও জল বা বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়ার মতো অভিযোগ উঠে এসেছে। এমনকী বাংলাদেশি সন্দেহে বাংলাদেশে 'পুশব্যাক' করা এবং পরে যখন জানা যায় ওই ব্যক্তি আদতে ভারতীয় তখন তাঁকে ফিরিয়ে আনার ঘটনাও ঘটেছে। অভিযোগ, ভোটার, রেশন কার্ড বা আধার কার্ড দেখালেও মানতে রাজি হয়নি সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পুলিশ।‌ এর সঙ্গে যোগ হয়েছে এনআরসি'র মতো বিষয়। ইতিমধ্যেই কোচবিহারের দুই বাসিন্দার কাছে এই নোটিশ এসে পৌঁছেছে। ওই জেলার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন তাঁদের কাছে সমস্ত কিছু প্রমাণপত্র থাকা সত্ত্বেও তাঁরা এনআরসি আতঙ্কে ভুগছেন। ইতিমধ্যেই ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া এরাজ্যের বাসিন্দাদের সহায়তার জন্য রাজ্য পুলিশের তরফে চালু করা হয়েছে একটি হেল্পলাইন। 

 

আরও পড়ুন: খেলার মাঝে বিরক্ত! খপ করে ধরল কোবরা, কামড় দিয়েই দুই টুকরো, এক বছরের শিশুর কীর্তিতে চক্ষু চড়কগাছ সকলের

গত ২১ জুলাই ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে বাংলাভাষী মানুষের উপর এই অত্যাচারের অভিযোগে তীব্র প্রতিবাদ জানান তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি। পরিষ্কার ভাষায় মমতা ঘোষণা করেন তিনি কোনওভাবেই এই জিনিস মেনে ‌নেবেন না। দিনের পর দিন বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য বাঙালির উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে বড় আন্দোলনের পথে নামবেন। প্রয়োজনে গড়ে তোলা হবে তীব্র আন্দোলন। ওই মঞ্চ থেকেই তিনি ডাক দেন 'ভাষা আন্দোলন'-এর। যা আগামী ২৭ জুলাই বীরভূম থেকে শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে।