মিল্টন সেন, হুগলি: আন্দোলনে জুতো হাতে রণংদেহী বিজেপি নেত্রী। বিপত্তি ঘটালেন হাতে থাকা জুতো পুলিশকে লক্ষ করে ছুড়ে মেরে। গ্রেপ্তার হলেন বিজেপি জেলা সম্পাদক পম্পা অধিকারী। বুধবার ভোর রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে চুঁচুড়া মহিলা থানা।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২ সেপ্টেম্বর জেলা শাসক অভিযানের দিন। জেলা শাসকের কার্যালয় ঘেরাও করার ডাক দিয়েছিল হুগলি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক বিজেপি। সেদিন হুগলি জেলা শাসক দপ্তর ঘেরাও করতে যৌথ ভাবে অভিযান করে হুগলি ও শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি নেতা কর্মীরা। ঘড়ির মোড়ে এসে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে বিজেপির মিছিল। পুলিশের ব্যারিকেডে আটকে পরে বিজেপির বিক্ষোভ মিছিল। সেখানেই পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি কর্মীরা। ব্যারিকেড ভাঙতে না পেরে পুলিশি বাধার মুখে উত্তেজিত হয়ে পরেন বিজেপি নেত্রী। ব্যারিকেড ভাঙার যাবতীয় চেষ্ঠা ব্যর্থ হওয়ার পর পম্পা অধিকারীকে দেখা যায় জুতো হাতে পুলিশের উপর চড়াও হতে।
কিছুক্ষণ হাতে জুতো নিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করতে দেখা যায়। তারপর হাতে থাকা সেই জুতো তিনি পুলিশকে লক্ষ করে পুলিশের ভিড়ে ছুড়ে মারেন। পম্পা অধিকারী বর্তমানে বিজেপি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক পদে রয়েছেন। রিষড়া তিন নম্বর জল ট্যাঙ্ক এলাকায় তাঁর বাড়ি। এদিন তাঁর স্বামী বলাই অধিকারী জানিয়েছেন, ভোরে পুলিশের তিনটে গাড়িতে প্রচুর পুলিশ গিয়ে পম্পাকে বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে তিনি জানতে পারেন চুঁচুড়া মহিলা থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে বিজেপি নেত্রীর গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে বুধবার সকালে চুঁচুড়া মহিলা থানায় হাজির হন বিজেপি নেতৃত্ব। হুগলি সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি তুষার মজুমদার জানিয়েছেন, সেদিন অনেকেই বিক্ষোভে ছিল। তাহলে পম্পাকে কেনও গ্রেপ্তার করা হল। তিনি আইনি লড়াই লড়বেন।
বিজেপির দাবি, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রতিবাদ চলছিল। অন্যায় ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সূ্ত্রে জানা গেছে, পুলিশের কাজে বাধা, বেআইনি জমায়েত, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে জড়ো হওয়া সহ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
এদিন ধৃত বিজেপি নেত্রীকে চুঁচুড়া আদালতে পেশ করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা আইনজীবী কাজী ইমরানুল হক বলেছেন, 'গ্রেপ্তার কোনও ভাবেই বেআইনি নয়। কারণ প্রকাশ্যে পুলিশকে লক্ষ্য করে জুতো ছুড়ে ওই নেত্রী সমগ্র প্রশাসনকে অপমান করেছেন। কঠিন শাস্তি হওয়া বাঞ্ছনীয়। যদিও এটাই বিজেপি দলের সংস্কৃতি। ওদের থেকে সুস্থ স্বাভাবিক ব্যবহার আসা করা যায় না।'
ছবি পার্থ রাহা।
