আজকাল ওয়েবডেস্ক: মগরাহাটে একটি শুনানি কেন্দ্রে গিয়ে নথি খতিয়ে দেখছিলেন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক সি. মুরুগান। সেখানে গিয়ে ভোটারদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন তিনি। এসআইআর-এর শুনানির পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। রাজ্য জুড়ে চলছে এসআইআরের শুনানিপর্ব। প্রতি দিন ‘নো ম্যাপিং’ ভোটারদের ডেকে তথ্য ও নথি সংগ্রহ করছে কমিশন। তবে অনেকের অভিযোগ, শুনানিপর্বে ভোটারদের প্রবল ঝক্কি সামলাতে হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে বয়স্কদের। সোমবার সেই ক্ষোভ উগড়ে পড়ল মগরাহাট সিরাকল হাইস্কুলে এসআইআরের শুনানিকেন্দ্রে। ওই কেন্দ্রে শুনানির কাজ তদারকি করতে গিয়েছিলেন মুরুগান। সে সময় গ্রামবাসীদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি।

জানা গিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন মহিলা। তাঁদের অভিযোগ, বাড়িতে বাড়িতে না-গিয়ে স্কুলে বসে এসআইআরের কাজ করা হচ্ছে। ডেকে পাঠানো হচ্ছে গ্রামবাসীদের। বহু সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে বয়স্কদের। কমিশন বিনা কারণে সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করছে। একই সঙ্গে উঠেছে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা দেওয়ার দাবিও। মুরুগানকে কাছে পেয়ে তাঁর কাছে এই দাবিই জানান বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ এসআইআরের নামে দিনের পর দিন হয়রানি করা হচ্ছে। কেন বিএলএ ২ দের হিয়ারিং সেন্টারের মধ্যে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। বিক্ষোভের মাঝেও পর্যবেক্ষক মাইক্রো অবজারভারদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। পর্যবেক্ষক, জানতে চান, সমস্ত নথি ঠিক মতো খতিয়ে দেখা হচ্ছে কিনা। এমনকী কোথাও কোনও সমস্যা হলে কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শও দেন তিনি।

সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ তথা তৃণমূল নেতা মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে বিক্ষোভকারীরা আবার ঘিরে ধরে একই দাবি জানাতে থাকেন। 

প্রসঙ্গত, রবিবার তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিএলএ-দের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে তাঁদের হিয়ারিংয়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। বিএলএ-দের কাজের প্রশংসা করে তিনি বলেন, "এখন যুদ্ধের সময়। এক ইঞ্চি জায়গাও ছাড়বেন না। হিংয়ারিংয়ে থাকবেন।" 

১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকার দাবিতে এবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বকেয়া আদায়ের লড়াইকে সরাসরি 'যুদ্ধ' বলে অভিহিত করে দলের নেতা-কর্মীদের দিল্লির আন্দোলন এবং শুনানিতে উপস্থিত থাকার কড়া নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

তৃণমূল সূত্রে খবর, দলীয় বৈঠকে অভিষেক সাফ জানিয়েছেন যে এই লড়াইয়ে কোনও রকম ঢিলেমি বরদাস্ত করা হবে না। প্রতিটি ব্লকের মানুষ যাতে এই আন্দোলনের গুরুত্ব বোঝেন, তা নিশ্চিত করতে নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, শুনানিতে থাকার কথা নয় বিএলএ-দের। মাইক্রো অবজারভারদের থাকার কথা।শুনানিতেও গড়মিল হতে পারে, সেই আশঙ্কা থেকেই অভিষেকের এই পরামর্শ। আর ঠিক তার পরই কোমর বেঁধে নেমে পড়েন তৃণমূল নেতৃত্ব। হুগলির চুঁচুড়ায় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার একই দাবিতে হিয়ারিং বন্ধ করে দেন। যদিও এই ঘটনার পর থেকে কমিশন স্পষ্ট করে দিয়েছে, হিয়ারিং সেন্টারে বিএলএ ২ রা থাকতে পারবেন না।