আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভাগ্য ফেরাতে গিয়ে ঘটল ঘোর বিপত্তি! কালীপুজোর রাতে জুয়া খেললে এবং জিতলে সারা বছর জুয়া খেলায় জেতা যায়, এমনই এক 'মিথ' চালু রয়েছে বছরের পর বছর জুড়ে। আর সেই মিথের ওপর ভর করে  কালীপুজোর রাতে জুয়া খেলতে গিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গ্রেপ্তার হল প্রায় ২০০ জন জুয়াড়ি। উদ্ধার হয়েছে নগদ লক্ষাধিক টাকা। মঙ্গলবার ধৃত জুয়াড়িদের মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন আদালতে পেশ করা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট  আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। 

কালীপুজোর রাতে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় জুয়া খেলতে গিয়ে সবথেকে বেশি জুয়াড়ি গ্রেপ্তার হয়েছে মুর্শিদাবাদের সাগরপাড়া থানা এলাকায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কালীপুজোর রাতে সাগরপাড়া থানার নটিয়াল, সাগরপাড়া, খয়রামারি-সহ একাধিক  গ্রামে বোর্ড বসিয়ে সংগঠিতভাবে জুয়া খেলা হবে এমন খবর পুলিশের কাছে আগে থেকেই ছিল। সেই খবরের ভিত্তিতে সোমবার মাঝরাতের পর সাগরপাড়া থানার পুলিশ বিভিন্ন গ্রামে একের পর এক হানা দিতে শুরু করে। সেখান থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে ৫২ জন জুয়াড়ি। ধৃত জুয়াড়িদের হেফাজত  থেকে ৫০ হাজার টাকার বেশি নগদ এবং অন্য বেশ কিছু সামগ্রীর সঙ্গে জুয়া খেলার জন্য ব্যবহৃত তাস এবং আরও কিছু জিনিসপত্র উদ্ধার রয়েছে। 

আরও পড়ুন: বোলপুরে অনুব্রত মণ্ডলের পাড়ায় ভোলেনাথের চোখে জল: কালীপুজো বন্ধের বেদনায় কি কেঁদে উঠলেন দেবাদিদেব

দীপান্বিতা কালীপুজোর রাতে দেবীর পায়ে প্রণাম করে জুয়া খেলতে বসে  মুর্শিদাবাদের সুতি থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে ৩০ জন জুয়াড়ি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত জুয়াড়িরা বিভিন্ন এলাকায় সংঘঠিত ভাবে  জুয়ার আসর বসিয়েছিল। তাদের থেকে নগদ প্রায় ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে, বহরমপুর থানার অন্তর্গত ছোট বসন্ততলা, কোর্ট বাজার এলাকা ,খাগড়া নতুন বাজার এলাকায় কালীপুজোর রাতে ভাগ্য ফেরানোর উদ্দেশ্যে জুয়া খেলতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হল ২৩ জন ভাগ্যান্বেষী। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত জুয়াড়িদের হেফাজত থেকে মোট ১.১ লক্ষ টাকা নগদ উদ্ধার হয়েছে। লালগোলা থানায় বিভিন্ন এলাকায় কালীপুজোর রাতে  জুয়া খেলতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে ১৪ জন ব্যক্তি। মঙ্গলবার  ধৃতদের আদালতে পেশ করা হচ্ছে। 

আরও পড়ুন: কোথাও বিপত্তি বাজি থেকে, কোথাও উলটে গেল প্রদীপ, কালীপুজোর রাতে জ্বলে গেল ঘর-বাড়ি, পুড়ে ছাই দোকান

জেলা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, কালীপুজোর রাতে মুর্শিদাবাদ জেলার সমস্ত থানা এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পুলিশের তরফ থেকে বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছে। সেই সময় প্রায় সমস্ত থানা এলাকায়  বেশ কয়েকজন জুয়াড়ি গ্রেপ্তার হয়েছে এবং তাদের থেকে সব মিলিয়ে লক্ষাধিক টাকার বেশি উদ্ধার করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, অনেকেই মনে করেন কালীপুজোর রাতে জুয়া খেললে এবং সেই খেলায় যদি কেউ জেতে তাহলে সারাবছর জয়ের ভাগ্য তাঁর সঙ্গে থাকবে। এই 'মিথ' থেকেই কালীপুজোর রাতে বহু জুয়ারি  সংগঠিতভাবে জুয়া খেলে বলে জানা গিয়েছে।