আজকাল ওয়েবডেস্ক: নদিয়ার শান্তিপুর থানার অন্তর্গত বাবলা পঞ্চায়েতের নিকুঞ্জ নগর এলাকায় শুক্রবার এক চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনা সামনে এসেছে। দিনের আলোতেই ঘটে গেল এমন এক ঘটনা, যা এলাকায় বিস্ময়ের পরিবেশ তৈরি করেছে।

নিজেদের মধ্যে মোবাইল গেম খেলার সময় তিন কিশোরকে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে গাছে তুলে দিয়ে তাদের মোবাইল ফোন চুরি করে চম্পট দিয়েছে এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। কিশোরদের সকলের বয়সই ১২ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ওই তিন কিশোর একটি বাগানে বসে নিজেদের মোবাইল ফোনে গেম খেলছিল। সেই সময় এক অচেনা ব্যক্তি তাদের দিকে এগিয়ে এসে বলে, গাছে থাকা বেলপাতা পেড়ে দিলে সে তাদের পুরস্কার হিসেবে টাকা দেবে।

কিশোরেরা প্রথমে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত থাকলেও অর্থের লোভে রাজি হয়ে যায়। তাদের একজনের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনজন গাছে ওঠার পর নিচে কেউ ছিল না। সেই সুযোগে ওই ব্যক্তি তিনটি মোবাইল ফোন নিয়ে চম্পট দেয়। বেলগাছে কাঁটা থাকায় তারা তাড়াতাড়ি নামতেও পারেনি।

নাম এবং পরিচয়হীন সেই লোক মুহূর্তের মধ্যেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। ছেলেরা নিচে নেমে দেখেই চমকে যায়। দেখা যায়, তিনজনের তিনটি মোবাইলই উধাও। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

শুক্রবার বেলা প্রায় ১২টা নাগাদ তিন কিশোরের পরিবারের পক্ষ থেকে শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কিশোরদের বর্ণনা অনুযায়ী, সন্দেহভাজনের স্কেচ তৈরির চেষ্টাও চলছে‌। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। দিনের আলোয় এভাবে কৌশলে শিশু-কিশোরদের প্রতারণা করে চুরি সংঘটিত হওয়ায় অভিভাবক মহলে দুশ্চিন্তা বাড়ছে।

এলাকার বাসিন্দারা পুলিশের কাছে দাবি তুলেছেন, যেন এমন দুষ্কৃতীরা দ্রুত ধরা পড়ে এবং ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা না ঘটে।  এর জন্য এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানোর দাবি তুলেছেন তাঁরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্ভাব্য সব দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত চলছে।

তবে এই ধরনের কৌশলী প্রতারণার ঘটনা যে কিশোরদের মধ্যেও ভয়ের বাতাবরণ সৃষ্টি করেছে, তা নিয়ে সংশয় নেই। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে অভিভাবকদের আরও সচেতন হওয়া এবং শিশু ও  কিশোরদের একা ছেড়ে না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। 

পাশাপাশি এই ঘটনা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, শিশু ও কিশোরদের লক্ষ্য করে কীভাবে প্রতারকরা নতুন নতুন ফাঁদ পেতে বসে আছে। শুধুমাত্র মোবাইল চুরি নয়, এর পিছনে আরও কোনও অপরাধমূলক উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা নিয়েও তদন্তে নজর দিয়েছে পুলিশ।