আজকাল ওয়েবডেস্ক: নদিয়ার কৃষ্ণনগরে এক বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে এক প্রৌঢ়ের অশালীন আচরণ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল।

অভিযোগ, স্কুল ছুটির আগে আগে ওই ব্যক্তি স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে নিজের যৌনাঙ্গ দেখিয়ে আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করছিলেন। প্রথমে বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় কয়েকজন এগিয়ে যান এবং পরিস্থিতি বুঝে অভিযুক্তকে ঘিরে ফেলেন।

বেগতিক বুঝে অভিযুক্ত পালানোর চেষ্টা করলেও তাঁকে ধাওয়া করে আটক করেন আশপাশের বাসিন্দারা। কিছু লোকজন প্রকাশ্যেই তাকে কান ধরে উঠবোস করান।

ঘটনার ভিডিও এবং ছবি দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই ব্যক্তিকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। 

পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি অশালীন আচরণের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে পুলিশ জানিয়েছে, সমস্ত অভিযোগ এখনও তদন্তের আওতায়।

ঘটনার সত্যতা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই ব্যক্তিকে দীর্ঘদিন ধরে স্কুল শুরুর সময়ে আশপাশে ঘোরাফেরা করতে দেখা যেত। 

এলাকার একাধিক মানুষ জানান, ওই ব্যক্তির চলাফেরা বরাবরই সন্দেহজনক। বেশ কয়েকবার ছাত্রীদের দিকে ইঙ্গিত করে ওই প্রৌঢ়কে অশালীন ইঙ্গিত করতে দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা। কিছুদিন আগে একই ধরনের আচরণের জন্য এলাকাবাসী তাকে সতর্ক করেছিলেন বলেও জানা যায়। 

সতর্ক করার পর কয়েকদিন তাকে দেখা যায়নি। তবে সম্প্রতি আবার স্কুলের সামনে নিয়মিত তাকে দেখা যেত বলে অভিযোগ।

অভিভাবক ও স্থানীয়দের দাবি, বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলের দুই ছাত্রী এবং এক শিক্ষিকাকে লক্ষ্য করে ওই ব্যক্তি আপত্তিকর ইশারা করছিলেন। 

এই ঘটনা স্থানীয়দের নজরে পড়লেই ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকাবাসীরা দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তাকে আটক করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ব্যক্তি জানান, তার বাড়ি কোতোয়ালি থানার আমঘাটা এলাকায়। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ব্যক্তি নিজেকে নাকি একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যাপক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।

পুলিশের পক্ষ থেকেও সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোঁজ নেওয়া হয়, কিন্তু তেমন কোনও তথ্য মেলেনি। তবে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ধৃত ব্যক্তির নাম সঞ্জয় বিশ্বাস। তবে ঘটনায় তার ভূমিকা, মানসিক অবস্থা, এবং অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

তদন্তের স্বার্থে পুলিশ আপাতত তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ নথিভুক্ত করেছে। ঘটনার পর স্কুল পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এলাকাবাসী দাবি করেছেন, ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে স্কুলের সামনে বাড়তি নজরদারি প্রয়োজন।