আজকাল ওয়েবডেস্ক: ব্যারাকপুরের অন্যতম জনপ্রিয় খাবারের দোকান ডি বাপি বিরিয়ানি-র মালিক অনির্বাণ দাস ফের দুষ্কৃতীদের নিশানায়। সম্প্রতি তাঁর কাছে ফের আসে ভয়ঙ্কর হুমকি ফোন, যেখানে স্পষ্ট জানানো হয়—২০ লক্ষ টাকা না দিলে তাঁর পরিণতি হবে বেলঘরিয়ার ব্যবসায়ী অজয় মণ্ডলের মতো। ইতিমধ্যে পুলিশ এই ঘটনায় আনিস ঝা নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, গত মাসেই অনির্বাণের ফোনে প্রথম আসে তোলাবাজির হুমকি। ফোনে বলা হয়েছিল, টাকা না দিলে ডি বাপি বিরিয়ানির দোকানেও আবার চালানো হবে গুলি। অতীতে এমন অভিজ্ঞতা থাকায় ভয় পেয়ে নিজেকে ঘরবন্দি করে ফেলেন তিনি। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১৬ মে টিটাগড়ের ওয়্যারলেস মোড়ে তাঁর দোকানে একবার গুলি চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনায় আহত হয়েছিলেন এক কর্মী ও এক ক্রেতা। সিসিটিভি ফুটেজেও সে সময় ধরা পড়েছিল সেই নৃশংস দৃশ্য।
তবে হুমকি এবারেই প্রথম নয়। অনির্বাণ দাস জানিয়েছেন, গত কয়েক মাস ধরেই বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন ও মেসেজে হুমকি পাচ্ছেন তিনি। শুধু তাই নয়, সোমবার রাতে চারজন অজ্ঞাতপরিচয় বাইক আরোহী তাঁর গাড়ির পিছু নেয় মুড়াগাছা থেকে ওয়্যারলেস মোড় পর্যন্ত। অবস্থা বেগতিক দেখে ট্রাফিক পুলিশের সহযোগিতা চাইলে পালিয়ে যায় তারা। অনির্বাণের দাবি, পুলিশে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও সেভাবে কোনও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরিবারে উদ্বেগ-আতঙ্ক চরমে পৌঁছেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই ঘটনার পেছনে জেলবন্দি কুখ্যাত দুষ্কৃতী সুবোধ সিংয়ের গ্যাংয়ের হাত থাকতে পারে। এই গ্যাং আগেও ব্যারাকপুর ও আশেপাশের এলাকায় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তোলা আদায়ের জন্য হুমকি দিয়ে এসেছে। ঠিক একই কায়দায় জুন মাসে বেলঘরিয়ার ব্যবসায়ী অজয় মণ্ডল ও তাপস ভগতের কাছেও গিয়েছিল হুমকি ফোন। এরপর ১৫ জুন জনবহুল বিটি রোডে অজয় মণ্ডলের গাড়িতে চলে গুলির বৃষ্টি—দুই দুষ্কৃতী বাইকে চড়ে টানা আট রাউন্ড গুলি চালিয়ে চম্পট দেয়।
ব্যারাকপুর, মধ্যমগ্রাম সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় সুনাম ছড়ানো ডি বাপি বিরিয়ানি-র এমন সংকটে তোলপাড় এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্বিগ্ন, কেন বারবার একই ব্যবসায়ী ও তাঁর পরিবারের দিকে বন্দুক তাক করছে দুষ্কৃতীরা, অথচ প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে।২০২২ সালের ঘটনার পরও অপরাধীদের শাস্তি না হওয়ায় দুষ্কৃতীরা যেন আরও সাহস পেয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। এক ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্য বলেন, “এভাবে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর ওপর বারবার আক্রমণ হওয়া খুবই উদ্বেগজনক। পুলিশকে আরও কড়া হতে হবে।” প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, তদন্ত চলছে। ধৃত আনিস ঝার সঙ্গে কারা জড়িত এবং এই তোলাবাজি চক্রের নেপথ্যে কারা, তা খুঁজে বের করতে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে।
