আজকাল ওয়েবডেস্ক :  মহকুমা হাসপাতালের সীমিত পরিকাঠামো ব্যবহার করে এক মহিলার দুটি ডিম্বাশয়ে অবস্থিত দু'টি টিউমার অপারেশন করে বাদ দিয়ে তার জীবন বাঁচালেন জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক। 


সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্য জুড়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে  সাধারণ মানুষ যখন বারবার অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন সেই সময় প্রত্যন্ত হাসপাতালে একজন গুরুতর অসুস্থ মহিলার প্রাণ বাঁচিয়ে নয়া নজির স্থাপন করলেন জঙ্গিপুর হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

 
হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত ২২ তারিখ সুতির আহিরণ এলাকার বাসিন্দা বছর আঠাশের আমিনা বিবি পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন । গত কয়েক মাস ধরে তার পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছিল। বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসক দেখিয়েও তার সুরাহা হয়নি। অবশেষে তিনি জঙ্গিপুর হাসপাতালের  শরণাপন্ন হন।  ওই হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমিনার পেটে ব্যথা না কমায় হাসপাতালে ভর্তির পর তার আল্ট্রা সাউন্ড পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষাতে ধরা পড়ে তার দুটি ডিম্বাশয়ে দুটি বড় আকারের টিউমার রয়েছে এবং সেগুলোর জন্যই তার পেটে ব্যথা কমছে না।

 
এরপরই হাসপাতালের গাইনোকোলজিস্ট চিকিৎসক শুভঙ্কর হালদারের কাছে আমিনা বিবিকে রেফার করা হয়। হাসপাতালের অ্যানাথেসিস্ট চিকিৎসক গোলাম হোসেন এবং নার্সিং স্টাফদের সাহায্য নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অপারেশন করে আমিনা বিবির ডিম্বাশয় থেকে টিউমার দু'টি বার করা হয়। 

 
জঙ্গিপুর হাসপাতালের চিকিৎসক তথা জঙ্গিপুর আইএমএ-র সভাপতি চিকিৎসক সুব্রত মাঝি বলেন," এই ধরনের অপারেশন মহকুমা হাসপাতালে এক প্রকার বিরল। মহকুমা হাসপাতালের পরিকাঠামো কিছুটা কম থাকায় এই ধরনের অপারেশনে সব সময় কিছুটা ঝুঁকি থেকে যায় । তবে রোগীর পরিবারের অনুমতি নিয়ে চিকিৎসক হালদার যথেষ্ট কৃতিত্বের সঙ্গে অপারেশন করে রোগীকে প্রায় সম্পূর্ণ সুস্থ করে তুলেছেন।" 


তিনি আরও বলেন ,"রোগীকে পর্যবেক্ষণের জন্য এই মুহূর্তে এইচডিইউ-তে রাখা রয়েছে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন।" অপারেশন সফল হওয়ার পর শুভঙ্কর হালদার বলেন ,"যথাসময়ে অস্ত্রপচার  না হলে রোগীর প্রাণহানীর আশঙ্কা ছিল।  অপারেশন করতে গিয়ে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলাম কিন্তু আমরা সাহস করে এগিয়েছি এবং অপারেশন সফল হয়েছে।" অন্যদিকে আমিনার অপারেশন সফল হওয়ায় খুশি তার পরিবারের লোকেরা। তারা বলেন , সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে এত ভালো চিকিৎসা পরিষেবা পেয়ে আমাদের খুবই ভাল লাগছে। হাসপাতালে চিকিৎসক এবং নার্সরা খুব ভালভাবে আমাদের রোগীর চিকিৎসা করেছেন।