নন্দীগ্রামে সেবাশ্রয় ক্যাম্প নিয়ে কটাক্ষ, প্রকাশ্য সভায় শুভেন্দু অধিকারীর বিস্ফোরক মন্তব্যে তীব্র বিতর্ক

সোমবার নন্দীগ্রামের সভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।

আজকাল ওয়েবডেস্ক: নন্দীগ্রামে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে আয়োজিত ‘সেবাশ্রয়’ শিবিরকে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক আরও তীব্র আকার নিল। বিষয়টি নিয়ে কেবল কিছু বিরোধী নেতা নন, স্বয়ং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সোমবার নন্দীগ্রামে জানকিনাথ মন্দির মাঠে এক প্রকাশ্য জনসভা থেকে সরাসরি কটাক্ষ করেন। তাঁর বক্তব্য, “এই সেবাশ্রয় ক্যাম্পে দেওয়া ওষুধ খাবেন না। এর মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণের ওষুধ থাকতে পারে। ওরা হিন্দুদের সংখ্যা কমাতে চাইছে।” একইসঙ্গে তিনি সাধারণ মানুষকে ব্লাড টেস্ট না করানো এবং ইঞ্জেকশন না নেওয়ার আহ্বান জানান।

বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে প্রবল শোরগোল শুরু হয়েছে। শাসক দলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বিভ্রান্তিকর ও ভয় দেখানোর রাজনীতি বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দাবি, সেবাশ্রয় শিবিরে সরকারি অনুমোদিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরাই পরিষেবা দেন এবং সাধারণ রোগের চিকিৎসা, ওষুধ ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা বিনামূল্যে করা হয়।

এর পাশাপাশি তৃণমূলের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, এই ধরনের স্বাস্থ্য শিবির স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই পরিচালিত হয়। সেইসঙ্গে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা বিভ্রান্তিকর মন্তব্যে সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়ালে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক তরজার মাঝে নন্দীগ্রামে এখন এই সেবাশ্রয় ক্যাম্প ঘিরেই চড়েছে উত্তেজনার পারদ। 

উল্লেখ্য, এই স্বাস্থ্য শিবির উদ্বোধন করতে জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ নন্দীগ্রামে আসছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে বিরোধী দলনেতার এই ধরনের মন্তব্যে যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।

ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা জুড়ে শুরু হয়েছিল এই 'সেবাশ্রয় স্বাস্থ্য শিবির ক্যাম্প'। অভিষেকের মস্তিষ্ক প্রসূত এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছিল ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের বাসিন্দারা। চিকিৎসা পরিষেবা এলাকাবাসীদের দুয়ারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এই উদ্যোগ।  

গতবারের 'সেবাশ্রয় স্বাস্থ্য শিবির' থেকে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্র জুড়ে প্রায় ১২ লক্ষ মানুষ উপকৃত হয়েছিলেন। বহু জটিল রোগের অপারেশন করা হয়েছে এই 'সেবাশ্রয় স্বাস্থ্য শিবিরের' মধ্যে দিয়ে। এই সেবাশ্রয় ক্যাম্প থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা থেকে শুরু করে ওষুধ-সহ চশমা এবং শ্রবণ যন্ত্র পেয়ে উপকৃত হয়েছে এলাকাবাসীরা। ৭৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে এই সেবাশ্রয় স্বাস্থ্য শিবির ক্যাম্প চলেছিল। 

সেবাশ্রয়-২ এর সূচি: 

১-৭ ডিসেম্বর- মহেশতলা বিধানসভা।

৮-১৪ ডিসেম্বর- মেটিয়াবুরুজ বিধানসভা।

১৫-২১ ডিসেম্বর- বজবজ বিধানসভা।

২২-৩০ ডিসেম্বর- বিষ্ণুপুর বিধানসভা।

২-৮ জানুয়ারি- সাতগাছিয়া বিধানসভা।

৯-১৫ জানুয়ারি- ফলতা বিধানসভা।

১৬-২২ জানুয়ারি- ডায়মন্ড হারবার বিধানসভা।