আজকাল ওয়েবডেস্ক: বারাসতের পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখার্জী জনগণের সমর্থনে তৃতীয় বারের জন্য যখন পুরপ্রধান পদে শপথ নিয়েছিলেন, তখনই জনগণের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছিলেন ‘গ্রীন বারাসাত, ক্লিন বারাসাত’। যেমন কথা তেমন কাজ। শুক্রবার সকালে বারাসত ডাকবাংলা মোড় থেকে জঞ্জাল সাফাইয়ের কর্মসূচির সূচনা করেন সুনীল। এদিন তিনি নিজে ঝাড়ু হাতে বারাসত পৌরসভার জঞ্জাল বিভাগের সমস্ত কর্মীদের নিয়ে রাস্তা সাফাইয়ের কাজে হাত লাগান। এদিন সকালে ওনার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বারাসত পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের পৌরপিতা দেবব্রত পাল, বিবর্তন সাহা ও অন্যান্য পুরপ্রতিনিধিরা।
বারাসত পুরসভার পুরপ্রধান হিসেবে শপথগ্রহণের সময় সুনীল বারাসতবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে অঙ্গীকার করে বলেছিলেন ‘গ্রিন শহর, ক্লিন শহর’। সেদিন তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছিলেন তাঁর একটাই লক্ষ্য, বারাসতকে গ্রীন শহর বানানো। এর জন্য তিনি সকল সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করেছিলেন তাঁরা যেন যত্রতত্র ময়লা রাস্তায় না ফেলেন। পুরসভার যে গাড়ি বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যায়, তাতেই যেন তাঁরা ময়লা ফেলেন। কিন্তু মানুষের মধ্যে এখনও সচেতনতার অভাব রয়েছে স্পষ্ট। তাই শুক্রবার সাত সকালে রাস্তায় নামতে হল খোদ পুরপ্রধানকে। ডাকবাংলা মোড় থেকে দক্ষিণপাড়া হয়ে চাঁপাডালি মোড় পর্যন্ত বেশ কিছুটা রাস্তা নিজের হাতে ঝাঁটা হাতে নিয়ে এদিন ঝাড় দিয়ে পরিষ্কার করেন তিনি। এদিন চেয়ারম্যানের সঙ্গে কর্মসূচিতে শামিল হতে দেখা যায় বারাসত পুরসভার বেশ কিছু কাউন্সিলরদের।

সুনীল বলেন, “আমি শপথ নেওয়ার সময় বলেছিলাম বারাসতকে জঞ্জাল মুক্ত করব। তারই অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছি আজ। তাই সাধারণ মানুষকে বলতে চাই আমি যখন রাস্তায় নেমে রাস্তা পরিষ্কার করে ঝাড় দিতে পারি, তখন সাধারণ মানুষেরও উচিত নিজের বারাসতকে পরিষ্কার রাখার জন্য যত্রতত্র ময়লা না ফেলা।” তিনি আরও বলেন, “বারাসত পুরসভার তরফ থেকে রোজ সকালে বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহের গাড়ি পৌঁছে যায়। কিন্তু বারাসত পুরসভার বেশ কিছু অঞ্চলে এখনও দেখা যাচ্ছে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা রাতের অন্ধকারে কেউ বা কারা ফেলে যাচ্ছেন।” সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে দিন তিনি বলেন, “যদি আপনারাই এই ভাবে শহরকে নোংরা করেন তাহলে বারাসত কোনও দিনই পরিষ্কার হবে না। তাই আমি অনুরোধ করছি আপনারা যত্রতত্র ময়লা ফেলবেন না। পুরসভার নির্দিষ্ট গাড়িতেই ময়লা ফেলবেন।”
সুনীল আরও জানান, এরপরেও যদি কোনও মানুষ যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা রাস্তার যেখানে সেখানে ফেলে যান, তাহলে আগামী দিনে তাঁদের বড় অঙ্কের ফাইন করার কথা ভাবতে হতে পারে পুরসভাকে।
এখন দেখার বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান যখন রাস্তায় নেমে ময়লা পরিষ্কার করছেন, সে ক্ষেত্রে তার এই কর্মকাণ্ড দেখে সাধারণ মানুষ কতটা ময়লা ফেলার বিষয়ে সচেতন হন।
গত নভেম্বর মাসে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে আচমকাই পুরপ্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দেন অশনী মুখার্জি। এর পরেই সুনীলের নাম ভেসে ওঠে। এই নিয়ে তৃতীয় বার তিনি বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান হয়েছেন।
