আজকাল ওয়েবডেস্ক: লাঠিই ছিল একসময়ে বাঙালির শক্তির উৎস। লাঠি রক্ষা করত জমির ফসল আবার মা-বোনের সম্মানও। যে বর্গীরা একসময় বাংলা জুড়ে তৈরি করেছিল আতঙ্কের পরিবেশ তাদের ঠেকাতেও বাঙালির অস্ত্র ছিল এই লাঠি। এরকমভাবেই বীরভূমের কৃষ্ণনগর ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বর্গী হামলা থেকে বাঁচতে বাড়িতে লাঠি রাখার রেওয়াজ হয়। 

 

শেখা হয় লাঠি খেলার নানারকম কায়দা কসরত। সেই স্মৃতি মাথায় রেখে এবং সেই রীতিকে অনুসরণ করে আজও বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের কৃষ্ণনগর গ্রামে বিজয়া দশমীর পর বসে ঐতিহ্যবাহী লাঠির মেলা। দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে এই মেলা বসলেও লাঠি কেনাবেচাই এই মেলার ঐতিহ্য। তবে লাঠি কেনাবেচার পাশাপাশি মেলায় বসে বিভিন্ন খাবারের দোকানও।

 

এখানে মূলত লাঠি নিয়ে আসেন মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষরা। অন্যদিকে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের উদ্দেশ্যে আসেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষরা। মেলা শুরু হয় দুপুর থেকে‌। চলে রাত্রি পর্যন্ত। তবে মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা লাঠি নিয়ে এলেও লাঠির ক্রেতা কিন্তু হিন্দু, মুসলিম সকলেই। ছোট থেকে বড়, নানা আকারের লাঠি মেলায় বিক্রি হয়। মেলা পরিচালনার দায়িত্বে আছে স্থানীয় যশপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে থাকে পুলিশ।  হয়ত লাঠি আর সেভাবে ব্যবহার হয় না। কিন্তু তারপরও শতাব্দী প্রাচীন এই মেলা ঘিরে আজও রয়ে গিয়েছে মানুষের মধ্যে উৎসাহ। মেলা দেখার পাশাপাশি লাঠি কিনতে দূরদূরান্ত থেকে আসেন‌ বহু মানুষ।