আজকাল ওয়েবডেস্ক: দীপাবলির আগের রাতে বেআইনি অস্ত্রপাচার রোধে বড়সড় সাফল্য অর্জন করল মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রবিবার বিকেলে অভিযান চালায় পুলিশ।

আটক করা হয় লালগোলা থানার কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা সাধনা হালদার নামে বছর পঁয়ষট্টির এক মহিলাকে। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে পাঁচটি সেমি-অটোমেটিক ৭ এমএম পিস্তল, পাঁচটি খালি ম্যাগাজিন এবং ২৪ রাউন্ড গুলি।

সূত্রের খবর, দীপাবলির আগেই বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের পরিকল্পনা চলছিল। সেই সূত্রে খবর পেয়েই রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ ও জেলা ক্রাইম মনিটরিং সেল যৌথভাবে ওমরপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালায়। ফরাক্কাগামী একটি বাসে তল্লাশি চালিয়ে ধরা হয় সাধনা হালদারকে। তাঁর ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি।

জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার অমিত কুমার সাউ জানান, ‘রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ ও ক্রাইম মনিটরিং সেলের দক্ষতা ও দ্রুত পদক্ষেপেই এই পাচারচক্রের হদিশ মিলেছে। ধৃত মহিলার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের পরিমাণ যথেষ্ট উদ্বেগজনক।’

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাধনা হালদার ফরাক্কা থানার এনটিপিসি এলাকার এক আগ্নেয়াস্ত্র কারবারির কাছ থেকে এই অস্ত্র, গুলি ও ম্যাগাজিন সংগ্রহ করেছিলেন। সেগুলি মুর্শিদাবাদেরই সাগরপাড়া থানার এক অস্ত্র ব্যবসায়ীর হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল।

জেলা গোয়েন্দা দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সাধনা হালদার এই পাচারচক্রের একজন ‘ক্যারিয়ার’ মাত্র। আর্থিক দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে চক্রের মূল মাথারা তাঁকে ব্যবহার করছিল। পুলিশের অনুমান, বয়সের কারণে তাঁকে সন্দেহ করবে না ভেবে এর আগেও তাঁকে দিয়ে একাধিকবার আগ্নেয়াস্ত্র পাচার করানো হয়েছে।’

গোয়েন্দাদের আরও ধারণা, উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রগুলি বিহারের মুঙ্গের জেলায় তৈরি। ফরাক্কায় এনে সেগুলি সাগরপাড়ায় পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। পুলিশ এখন এই পাচারচক্রের মূল সূত্র ও যোগসূত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

পুলিশ সুপার অমিত কুমার সাউ আরও বলেন, ‘ধৃত মহিলাকে সোমবার জঙ্গিপুর আদালতে পেশ করা হবে এবং তাঁর ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানানো হয়েছে।’

উল্লেখ্য, চলতি মাসের ৫ তারিখে বহরমপুর থানার পুলিশ তিনজন অস্ত্রপাচারকারীকে গ্রেপ্তার করে, যাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছিল আটটি ৭.৬৫ এমএম পিস্তল, ১৬টি খালি ম্যাগাজিন, আটটি তাজা কার্তুজ ও জাল নোট। গত এক মাসে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন থানায় একাধিকবার বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।

জেলার পুলিশকর্তাদের মতে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও বিস্ফোরক মজুতের চেষ্টা শুরু করেছে। এখন তারা বয়স্ক ব্যক্তিদেরও পাচারের কাজে ব্যবহার করতে পিছপা হচ্ছে না।