আজকাল ওয়েবডেস্ক: কালীপুজোর ভিড় সামলাতে আগের বছরের মতোই ট্রাফিক ব্যবস্থা বজায় রাখছে বারাসাত পুলিশ জেলা। তবে এবার একটি বিশেষ নিয়ম ঘোষণা করেছে পুলিশ। যেসব এলাকায় নো-এন্ট্রি জারি থাকবে, সেই এলাকার বাসিন্দারা বাড়ি ফেরার সময় আধার কার্ড দেখালেই প্রবেশের অনুমতি পাবেন।
অর্থাৎ পরিচয়পত্র হিসেবে আধার কার্ড দেখাতে হবে, তাহলেই পুলিশ সেই ব্যক্তিকে ওই এলাকায় ঢোকার ছাড় দেবে। অর্থাৎ, যারা বারাসাতের বাসিন্দা তাঁদের অবশ্যই সঙ্গে করে আধার কার্ড রাখতে হবে, নির্দেশিকায় সেরকমটাই জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে বারাসাত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার প্রতিক্ষা ঝারখারিয়া জানান, ১৯ থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত এই নিয়ম কার্যকর থাকবে। পরিস্থিতি বুঝে কিছুটা রিলাক্সেশনও দেওয়া হবে। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অতীশ বিশ্বাস এবং এসডিপিও বিদ্যাগর অজিঙ্কা অনন্ত।
এছাড়া এবছর চালু হচ্ছে বিশেষ ওয়েবসাইট kalipujabarasat.in। জানা গিয়েছে, এই ওয়েবসাইটে গেলেই দর্শনার্থীরা জানতে পারবেন কোথায় পার্কিং জোন, কোন রাস্তা নো-এন্ট্রি, কোন পুজোমণ্ডপে ভিড় বেশি, এমনকি জরুরি অবস্থায় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের উপায়ও।
কালীপুজো উপলক্ষ্যে শহরজুড়ে বসানো হয়েছে ১০টি ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড ও শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা, দুপুর ৪টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত চলবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ। পুলিশের তরফে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে জাতীয় সড়কে গেট বানালে কোনও সমস্যা হলে তার সম্পূর্ণ দায় নিতে হবে পুজো উদ্যোক্তাদের।
প্রয়োজনে নেওয়া হবে আইনানুগ ব্যবস্থা। ঐতিহ্যবাহী বারাসাতের কালীপুজো এবার পৌঁছতে চলেছে ইউনেস্কোর টেবিলে। আর সেই লক্ষ্যকে সফল করতে বারাসাত পুলিশের পক্ষ থেকে একগুচ্ছ পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খড়িয়া পুজোর দিনগুলিতে বারাসাতবাসী হিসেবে পরিচয় সুনিশ্চিত করতে আধার কার্ড ও কর্মক্ষেত্রের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার কথা বলেছেন। শুক্রবার কালীপুজো নিয়ে সমন্বয় বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বারাসাতের পুরপ্রধান অশনি মুখোপাধ্যায়।
কালীপুজোকে ইউনেস্কোর টেবিল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এদিনের বৈঠকে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কালীপুজোর জন্য আগামী ২০ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর প্রতিদিন দুপুর ২টো থেকে রাত দুটো পর্যন্ত জাতীয় সড়ক নো-এন্ট্রি থাকবে।
তাতে প্রতিমা দর্শনার্থীদের পুজো দেখার সুবিধা হবে বলেই পুলিশ কর্তারা মনে করছেন। উল্টোদিকে পুলিশের ওই সিদ্ধান্তে কর্মস্থল থেকে ছুটির পর বাড়িতে পৌঁছতে কার্যত নাজেহাল সম্ভাবনা রয়েছে বলে বাসিন্দারা মনে করছেন।
বারাসাত শহরের অধিকাংশ পুজো মূলত ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া হওয়ায় ডাকবাংলো থেকে ময়না পর্যন্ত দুপুরের পর থেকেই দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে। সন্ধ্যা গড়াতেই জাতীয় সড়ক কার্যত দর্শনার্থীদের দখলে চলে যায়।
লক্ষ লক্ষ ভিড় সামাল দিতে ট্রাফিক ব্যবস্থাকে চলতি বছর পুলিশ কর্তারা ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। দুর্ঘটনা ও যানজট এড়াতে বারাসাত শহরে ঢোকার চতুর্দিকে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
মধ্যমগ্রামের যশোর রোডের আপনালয় হাইজিং, বাদু রোডের কাঞ্চনতলা, সোদপুর রোডের বাদামতলা, হাবড়ার চোংদা মোড়, গুমা আমডাঙার সন্তোষপুর মোড়-সহ ব্যারাকপুর রোডের নীলগঞ্জ ব্যাংক মোড় পর্যন্ত কোনওভাবেই পণ্যবাহী গাড়ি শহরে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
কলকাতাগামী দূরপাল্লার বাসগুলোকে জাগুলি মোড় থেকে ঘুরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গগামী বাসগুলোকে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে ডাইভার্ট করার কথা জানানো হয়েছে।
