আজকাল ওয়েবডেস্ক: শুধু সময়ের অপেক্ষা। আসছে ইংরেজি নতুন বছর। আর এই নতুন বছরে ভ্রমণপিপাসু বাঙালির অন্যতম ঠিকানা সুন্দরবন। ঘন ম্যানগ্রোভ অরণ্য আর লঞ্চ থেকে সেই মনোরম দৃশ্য এবং সুন্দরবনের প্রাণী বৈচিত্র উপভোগ করতে করতে সারাদিন কাটানো জঙ্গল লাগোয়া নদীপথে। 

প্রতিবছর বর্ষবরণের আগে থেকেই সুন্দরবনে পর্যটকদের আনাগোনার ভিড় বেড়ে যায়। ব্যতিক্রম হল না এই বছরও। শীত পড়তেই সুন্দরবনের পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়ে গিয়েছে। সুন্দরবনের সোনাখালি, গদখালি, ঝড়খালি জেটিঘাটগুলিতে ভিড় লাগে পর্যটকদের। সেখান থেকেই লঞ্চে চেপে সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য পাড়ি দেন তাঁরা। সুন্দরবনের ঝড়খালি, সজনেখালি, পাখিরালয়-সহ অন্য পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে ভিড় জমিয়েছেন রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা। সারাদিন লঞ্চে চেপে নদী ও ম্যানগ্রোভ জঙ্গলের প্রাকৃতিক শোভা উপভোগের পাশাপাশি দেদার খাওয়া দাওয়ার আকর্ষণটাও কিন্তু কম নয়। 

সুন্দরবনের ঘুরতে আসা সমস্ত পর্যটকদের কাছেই থাকে এখানকার রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার দেখার আকর্ষণ। কপাল জোরে মেলে সেই সুযোগ। জঙ্গলের রাজা এই হলুদ ডোরাকাটার টানেই মূলত সুন্দরবনের ছুটে আসেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই এই এলাকায় বিভিন্ন 'ট্যুর অপারেটর'গুলি এখন চরম ব্যস্ত। বনদপ্তরের কাছে বৈধ পাসের জন্য আবেদন থেকে সমস্ত ব্যবস্থা করতে হয় তাদের। এ বিষয়ে রাণী ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেল-এর মালিক সুশোভন মিস্ত্রি জানান, "প্রতিবছর ২৫শে ডিসেম্বর থেকে ১লা জানুয়ারি পর্যন্ত সুন্দরবনে ঘুরতে আসা পর্যটকদের ভিড় চোখে পড়ে। এই বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ইংরেজি বর্ষবরণের দিন বা তার আগের দিন, সুন্দরবনে পর্যটকদের সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় এই দিনেই। বনদপ্তর-এর কাছ থেকে সুন্দরবনে প্রবেশ করার জন্য বৈধ পাস ব্যবস্থা করা হয়। আমরা এখন সেই কাজেই ব্যস্ত।" 

কত পর্যটক আসবেন? জানা গিয়েছে, সুন্দরবনের প্রতিদিন পাঁচ হাজার সাতশ পর্যটক প্রবেশ করতে পারবেন। শহরের ব্যস্ত কোলাহল থেকে বেরিয়ে এসে ঘন জঙ্গলের পাশে বেশ কয়েকটা ঘন্টা কাটাতে পর্যটকেরা ছুটে আসছেন দক্ষিণ ২৪ পরগণার এই জায়গায়। এই প্রসঙ্গে জেলা বনদপ্তরের মুখ্য আধিকারিক (ডিফও) নিশা গোস্বামী বলেন, "বনদপ্তর-এর পক্ষ থেকে প্রতিদিনই সুন্দরবনের প্রবেশ করার জন্য বৈধ অনুমতি পত্র দেওয়া হয়। মোট পাঁচ হাজার সাতশো জন মানুষ প্রতিদিন সুন্দরবনে ভ্রমণ করতে পারবেন। বৈধ অনুমতি পত্র নেওয়ার জন্য বনদপ্তরের কাছে আগের থেকে আবেদন করতে হয়। প্রতিবছর ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত পর্যটকদের আনাগোনা সুন্দরবনে লেগে থাকে। সুন্দরবনের বিভিন্ন ট্যুর অপারেটরের কাছ থেকে ইতিমধ্যে আবেদন পত্র আমাদের কাছে চলে এসেছে। ইংরেজি নববর্ষে সুন্দরবনে ঘুরতে আসা পর্যটকদের শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা রইল।"