অরিন্দম মুখার্জি: পুরুলিয়া জেলা পুলিশের আরও এক বড় সাফল্য। শনিবার পুরুলিয়া জেলায় সাইবার প্রতারণার অভিযোগে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে এই ধরনের নানা অভিযোগ পুরুলিয়া জেলার থানাগুলিতে জমা পড়ছিল। পুলিশ বিভিন্ন স্তরে দীর্ঘদিন ধরে অনুসন্ধানও চালিয়ে যাচ্ছিল, এবং তার ফলস্বরূপ এই পুরুলিয়া জেলা পুলিশের বড় সাফল্য। সাইবার প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার ১৩।
ঘটনাপ্রসঙ্গে পুলিশ সুপার পুরুলিয়ার অভিজিৎ ব্যানার্জি বলেন, 'আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সাইবার প্রতারণার অভিযোগ পেয়েছিলাম। আমরা অনুসন্ধান করে খোঁজ পাই মকরসল থানার সিওলি গ্রামের। যাদের ধরা হয়েছে তারা বেশিরভাগই সিওলি গ্রামের বাসিন্দা।' তিনি আরও জানান, 'যারা সাইবার ক্রাইম করছিল তাদের থেকে বেশ কিছু সিম উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলি নামে বেনামে বিভিন্নভাবে নথিভুক্ত করা রয়েছেছে এবং সেই সিমগুলি কোথা থেকে নথিভুক্ত করা হয়েছে তারও অনুসন্ধান চলছে।'
কীভাবে ঘটছে এই অপরাধ? পুলিশ জানাচ্ছে, যারা এই সাইবার ক্রাইমে যুক্ত, তারা বিভিন্নভাবে ভিকটিম বা অ্যাকিউজডকে বিভিন্ন স্থান থেকে মেসেঞ্জারের মাধ্যমে এবং ফোনের মাধ্যমে কখনও বলছে কাস্টমসে আপনার জিনিসপত্র আটকে আছে আপনারা টাকা দিন, কখন ও তারা বলছে আপনাদের ঘরের আসবাবপত্র আসছে, সেটার জন্য আপনারা টাকা পাঠান, কখনও বলছে আপনাদের ইন্সুরেন্স করা ছিল সেটা ল্যাপস হয়ে গেছে সেই ক্ষেত্রে টাকা দিলে আপনার ইন্সুরেন্সটা আপনারা পেয়ে যাবেন।
কাদের সঙ্গে এই প্রতারণা চলছে? দেখা যাচ্ছে সাধারণ মানুষ, যারা বোঝেন না বিস্তারিত তাঁদেরকেই লক্ষ্য করে এই ধরনের কাজগুলি চালছে। যারা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত তারা কখনও নিজের ব্যাঙ্ক বা নিজের আত্মীয়র ব্যাঙ্কেও বুঝে বা না বুঝে ব্যবহার করেছে, সেই সূত্র ধরেই পুলিশ জানতে পারে প্রতারণা হয়েছে এবং তার ট্রানজাকশনও পেয়েছে পুলিশ। সেগুলি এই মুহূর্তে অনুসন্ধানের আওতায় রয়েছে।
অভিজিৎ ব্যানার্জি বলেন, 'আমরা দেখতে পাচ্ছি এটির এক আন্তরাজ্য চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ আছে, এর সঙ্গে ঝাড়খন্ডে একটি বড় গ্রুপের যোগাযোগ আছে, এবং আমরা অনুধাবন করছি এটা জামতারা সাইবার প্রতারণার সঙ্গেও যুক্ত এবং তাদের অনুসরণ করেই এই প্রতারণা চালিয়েছিল। আমরা খবর পেয়েছি, ঝালদাতেও হোম ডেলিভারির নাম করে বেশ কিছু টাকা প্রতারণা করা হয়েছে তার অনুসন্ধান চলছে। গতকাল আরেকটি অভিযোগ পেয়েছি যে কাস্টমসে কিছু জিনিসপত্র ছাড়তে হবে বলে টাকা চেয়েছে সেটারও আমরা অনুসন্ধান করছি। আমরা এই মুহূর্তে বিভিন্নভাবে সাইবার সেল থেকে শহর এবং গ্রামে সাইবার সচেতনতা প্রচার চালাচ্ছি। '
