আজকাল ওয়েবডেস্ক: ক্ষুব্ধ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল, বুধবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক স্থগিত হতেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বড় ঘোষণা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার রাশিয়ার একাধিক নামী তেল কোম্পানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হল। রাশিয়ার মূলত দু'টি সবচেয়ে বড় তেল কোম্পানির উপরেই নিষেধাজ্ঞার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প।
আজ বৃহস্পতিবার ভোরে বিবৃতি দিয়ে এই ঘোষণা করা হয়েছে। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেই রাশিয়ার তেল কোম্পানির উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। যা ঘিরে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, রাশিয়ান কোম্পানি রসনেফট এবং লুকঅয়েল-এর উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের অফিস অফ ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোলের তরফে এই বড় পদক্ষেপ করা হয়েছে। রাশিয়ার সবচেয়ে বড় এই তেল কোম্পানি দু'টি আন্তর্জাতিক তেল বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ছিল। বিবৃতি দিয়ে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের অফিস অফ ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোলের তরফে জানানো হয়েছে, 'ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না রাশিয়া। আলোচনাতেও আগ্রহী নয়। তাই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে রাশিয়ার অর্থনীতিতে চাপ আরও বাড়বে।'
নিষেধাজ্ঞা চাপাতেই আপাতত রাশিয়ার সবচেয়ে বড় তেল কোম্পানি রসনেফট এবং লুকঅয়েল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনও লেনদেন করতে পারবে না। এই বড় ঘোষণার পরেই হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, 'আশা করছি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ দ্রুত শেষ হবে। এই নিষেধাজ্ঞা বেশিদিন থাকবে না। আমি শুধু চাই, যুদ্ধ এখনই বন্ধ হোক।'
আরও পড়ুন: হাজার হাজার টাকা কমল সোনার দাম, ভাইফোঁটায় ২২ ক্যারাটের দরে বিরাট পতন, মধ্যবিত্তদের মুখে চওড়া হাসি
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের মন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, ‘এখনই হত্যালীলা বন্ধ করার এবং তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণার সময়।’ তাঁর এই মন্তব্যের পর জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলে প্রায় দুই ডলার বেড়েছে। বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোও রাশিয়ার ওপর ১৯তম নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজের অনুমোদন দিয়েছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রাশিয়ার তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসও (এলএনজি) রয়েছে।
গতকাল বুধবার বুদাপেস্টে ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত আলোচনায় বসার কথা ছিল প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের। আচমকাই এই বৈঠক স্থগিত হয়ে গেছে বলে গতকাল জানা গিয়েছিল। ট্রাম্পের বক্তব্য, এই মুহূর্তে মুলত যে এলাকায় সংঘর্ষ চলছে দু’দেশের, সেখানে এখন লড়াই বন্ধ করতে রাজি নয় মস্কো। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে দেওয়া এক বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন, বর্তমান ফ্রন্ট লাইনে যুদ্ধ বন্ধ করতে মস্কোর অস্বীকৃতিই মূল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দু’পক্ষের আলোচনার। এর আগে, হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন অদূর ভবিষ্যতে ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠকের কোনও পরিকল্পনা নেই। কিন্তু, গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেছিলেন যে, দু’সপ্তাহের মধ্যে বুদাপেস্টে আলোচনা করবেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের মধ্যে একটি প্রস্তুতিমূলক বৈঠক এই সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তাও হচ্ছে না বলেই খবর সূত্রের। উল্লেখ্য, ট্রাম্প এবং পুতিন এর আগে বৈঠকে বসেন আগস্ট মাসে। আলাস্কায় আয়োজিত শীর্ষ সম্মেলনের সময় দেখা করেছিলেন তাঁরা। যদিও সেই সময়ও তাঁদের বৈঠক থেকে সদর্থক উত্তর উঠে আসেনি। সমাধান সূত্রও উঠে আসেনি।
