হার্ট অ্যাটাক বোঝার জন্য সাধারণত রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস বা ওজনের মতো বিষয়গুলোকে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে আরও একটি নতুন ইঙ্গিত হল গলার পরিধি। বিশেষজ্ঞদের মতে, গলার মাপ ভবিষ্যতে হৃদরোগের আশঙ্কা নির্ধারণে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।
আসলে শরীরের অন্যান্য জায়গার তুলনায় গলায় জমে থাকা ফ্যাট বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এটি সরাসরি শ্বাসনালী ও গুরুত্বপূর্ণ রক্তনালীর আশেপাশে অবস্থান করে। ফলে এই ফ্যাট শরীরে শর্করা, কোলেস্টেরল ও রক্তচাপের মাত্রাকে আরও নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে। গলার মাপ নেওয়া যেমন সহজ একটি প্রক্রিয়া, তেমনি এটি ভবিষ্যতের বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে আগেভাগে ইঙ্গিত দিতে পারে। তাই গলার পরিধি শুধু ফ্যাশন বা সৌন্দর্যের মাপ নয়, এটি হতে পারে আপনার হৃদযন্ত্রের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার সতর্ক সংকেত।
শাংহাইয়ে হওয়া এক গবেষণায় ৫০ থেকে ৮০ বছর বয়সি প্রায় ১,৪০০ জন পুরুষ-মহিলার উপরে পরীক্ষা করা হয়। আট বছর ধরে পর্যবেক্ষণের পর দেখা গিয়েছে, পুরুষদের গলার মাপ যদি ৩৮.৫ সেমি ছাড়িয়ে যায় এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৩৪.৫ সেমির বেশি হয়, তবে হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।
আরও পড়ুনঃ প্রায়ই পায়ের তলায় জ্বালা করে? সাবধান! বিপদ আসার আগে বুঝুন এই সব মারাত্মক রোগের ইঙ্গিত
অন্য এক বড় গবেষণায় প্রায় ১২ হাজারমানুষকে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল। সেখানে দেখা গেছে, যাদের আগেই হৃদরোগের ঝুঁকি ছিল, তাদের মধ্যে গলার পরিধি বেশি হলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এমনকী অকালমৃত্যুর আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়।

তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, শুধু গলার মাপই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি নির্ধারণ করে না। এটি একটি সহায়ক সূচক মাত্র। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত ওজন বা কোলেস্টেরলের মতো অন্যান্য রিস্ক ফ্যাক্টরের সঙ্গে মিলে গলার মাপও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি গলার পরিধি নির্ধারিত সীমার বেশি হয়, তবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। নিয়ম করে ব্যায়াম করুন এবং সুষম খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান বিশেষ করে রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক আছে কিনা তা খেয়াল রাখুন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে জীবনধারায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনুন।
