আজকাল ওয়েবডেস্ক: ডিকি বার্ড আর নেই। প্রয়াত প্রাক্তন কিংবদন্তি আম্পায়ার। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। ইংল্যান্ডের আম্পায়ারকে বিশ্বের অন্যতম সেরা আম্পায়ার বলে ধরা হয়। ১৯৯৬ সালে ভারত–ইংল্যান্ড টেস্ট খেলানোর পর আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকে সরে দাঁড়ান। সেই টেস্টে অভিষেক হয়েছিল সৌরভ গাঙ্গুলি এবং রাহুল দ্রাবিড়ের। সৌরভের বলে জাক রাসেলকে আউট দেওয়া বার্ডের ছিল শেষ সিদ্ধান্ত। ১৯৮৩–সহ তিনটি বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলিয়েছেন তিনি। ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব তাঁর মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। আম্পায়ারিংয়ের আগে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দীর্ঘদিন খেলেছিলেন।
আরও পড়ুন: ক্রিকেটের বাইরে এই খেলায় মজে রাহুল, কিনে ফেললেন দলও
১৯৫৬ সালে ইয়র্কশায়ারের হয়ে ক্রিকেট জীবনের শুরু। পরে লেস্টারশায়ারেও খেলেছেন। ১৯৬৪ সালে শেষ ম্যাচ খেলেন। তারপর ১৯৭৩ সালে আম্পায়ারিং শুরু করেন। ২৩ বছরের আম্পায়ার জীবনে ৬৬টি টেস্টে ও ৬৯টি ওয়ানডেতে দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড।
৬৬টি টেস্টের পাশাপাশি ৬৯টি এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। তাঁর অবসরের সময় দু’টিই ছিল বিশ্বরেকর্ড। ক্রিকেটজীবনে বার্ড ছিলেন জিওফ্রে বয়কটের সতীর্থ। ইয়র্কশায়ারের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলতেন। খেলেছেন লেস্টারশায়ারের হয়েও। কখনও ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার সুযোগ পাননি। চোটের জন্য খেলা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। ৯৩টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে দু’টি শতরান করেছিলেন। তবে ক্রিকেট থেকে নিজেকে কখনও দূরে রাখেননি বার্ড। অবসরের পর আম্পায়ার হিসাবে নিজেকে যুক্ত রেখেছিলেন। নিজেকে ২২ গজের কাছাকাছি রাখতে চেয়েছিলেন। তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্য ছাড়াই নিখুঁত সিদ্ধান্ত নিতেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন আম্পায়ার। ১৯৯৮ সালে হেডিংলেতে ইয়র্কশায়ার এবং ওয়ারউইকশায়ার ম্যাচে শেষ বার আম্পায়ার হিসাবে মাঠে নেমেছিলেন তিনি।
তাঁর আম্পায়ার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় ঘটনা ছিল ১৯৭৩ সালে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট। সেই ম্যাচে বোমাতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দর্শকরা ভয়ে মাঠ ছাড়তে শুরু করলেও ডিকি বার্ড দাঁড়িয়েছিলেন। কারণ হিসেবে মজা করে বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে সবচেয়ে নিরাপদ স্থানে। আমার চারিদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্লেয়াররা রয়েছেন।’ এরকমই রসিক ছিলেন তিনি। প্লেয়ারদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশতেও জানতেন। আবার আম্পায়ারিং নিয়ে অত্যন্ত খুঁতখুঁতে ছিলেন। প্রথম জীবনে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন থাকলেও পরে সরে আসেন ক্রিকেটে। তারপর আম্পায়ারিং। আর সেই ক্ষেত্রে কিংবদন্তির মর্যাদায় আসীন ডিকি বার্ড।
বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা আম্পায়ার হিসাবে বিবেচিত হলেও ছোটবেলায় বার্ডের প্রিয় খেলা ছিল ফুটবল। স্বপ্ন দেখতেন পেশাদার ফুটবলার হওয়ার। চোটের জন্য ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন সফল হয়নি তাঁর। ফুটবল ছাড়ার পর আঁকড়ে ধরেন ক্রিকেটকে। আম্পায়ার হিসাবে ক্রিকেটারদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশতে পারতেন। মাঠে খেলা পরিচালনার মাঝে নানা রসিকতা করতেন। তবে ক্রিকেটের নিয়মের ব্যাপারে ছিলেন কড়া ধাঁচের এবং খুঁতখুঁতে। আবহাওয়া একটু বিরূপ হলেই খেলা বন্ধ করে দিতেন। আউটফিল্ডে একটু জল থাকলেও খেলাতেন না। খেলোয়াড় হিসাবে অবসর নেওয়ার পর কিছু দিন কোচ হিসাবেও কাজ করেছেন।
