মুম্বই পুলিশের অর্থনৈতিক অপরাধ দফতর, (ইকনমিক অফেন্সেস উইং) বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেট্টির স্বামী রাজ কুন্দ্রাকে ৬০ কোটি টাকার প্রতারণার মামলায় তলব করেছে। প্রথমে তাঁকে বুধবার হাজির হতে বলা হয়েছিল। তবে রাজ কুন্দ্রা সময় চেয়ে নোটিশের জবাব দেন, যার ফলে নতুন করে হাজিরার দিন ধার্য করা হয়েছে ১৫ই সেপ্টেম্বর ২০২৫।
শুধু রাজ কুন্দ্রাই নন, এই মামলায় ন্যাশনাল কোম্পানি ল’ ট্রাইব্যুনালের (এনসিএলটি) এক নিরীক্ষককেও সমন পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতারণার মামলায় বিনিয়োগকারীদের বিপুল অঙ্কের অর্থ গায়েব হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই অর্থের পরিমাণ প্রায় ৬০ কোটি টাকা।
রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে ওঠা ৬০ কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে চারদিকে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। অবশেষে নীরবতা ভেঙে মুখ খুললেন রাজ কুন্দ্রা। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, “আমরা কিছুই ভুল করিনি। সত্যিটা খুব তাড়াতাড়ি সবার সামনে আসবে।”

অভিযোগের জবাবে রাজ কুন্দ্রা স্পষ্ট বলেন, “এই অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমরা জানি আমরা নির্দোষ। তাই এতদিন চুপ করে ছিলাম। সত্যিটা আদালতের মাধ্যমেই বেরিয়ে আসবে।” শিল্পা শেট্টি এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও তাঁদের আইনজীবী পরিষ্কার করেছেন, এটি মূলত একটি সিভিল মামলা। অর্থাৎ এটি এখনও দেওয়ানি বিরোধের পর্যায়ে রয়েছে, কোনও অপরাধমূলক উদ্দেশ্য প্রমাণিত হয়নি।
তদন্তকারীরা মনে করছেন, রাজ কুন্দ্রার ভূমিকা এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তাই তাঁকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজিরা দিতে হবে। রাজ কুন্দ্রার আইনজীবী ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, তিনি তদন্তে সহযোগিতা করবেন। সব মিলিয়ে, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এই মামলার পরবর্তী ধাপ অনেকটাই স্পষ্ট হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মুম্বই সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই তারকা দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন লোটাস ক্যাপিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের ডিরেক্টর দীপক কোঠারি। তিনি তাঁর অভিযোগের মাধ্যমে জানিয়েছেন, ২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ওই সংস্থায় তিনি ৬০ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। যখন তিনি ওই সংস্থায় বিনিয়োগ করেন তখন ৮৭.৬ শতাংশ শেয়ার শিল্পা ও রাজের নামে ছিল। দীপক জানিয়েছেন, রাজেশ আরেজ নামে এক ব্যক্তি তাঁকে তারকা দম্পতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
ওই অভিযোগে কোঠারি আরও জানিয়েছেন, তাঁর কাছে মোট ৭৫ কোটি টাকার ঋণ চাওয়া হয়েছিল। ১২ শতাংশ হারে সুদ পাওয়ার কথা ছিল তাঁর। তখন ঠিক হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে তাঁকে। সেই মতো ২০১৫ সালে ৩১.৯৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন তিনি। এরপর ওই বছর সেপ্টেম্বর মাসে ফের কিছু টাকা বিনিয়োগ করেন তিনি। ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৬ সালের মার্চের মধ্যে আরও ২৮.৫৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন তিনি। সব মিলিয়ে ৬০.৪৮ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছিল। স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদও ৩.১৯ লক্ষ টাকা খরচ হয়।
প্রথমে শিল্পা শেঠি ও রাজ কুন্দ্রার আইনজীবী প্রশান্ত পাটিল অভিযোগকে 'ভিত্তিহীন ও দুর্বৃত্তিমূলক' বলে দাবি করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, “এই লেনদেনটি সম্পূর্ণ সিভিল প্রকৃতির এবং ২০২৪ সালের ৪ অক্টোবরলোটাস ক্যাপিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, মুম্বই এই বিষয়ে নিষ্পত্তি করেছে। এখানে কোনও অপরাধমূলক দিক নেই।”
