আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তর প্রদেশে সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে৷ ঘটনাটি মোরাদাবাদ জেলার কারুলা এলাকায় ঘটেছে। খবর অনুযায়ী, এক ১৫ দিনের নবজাতককে তার মা ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফ্রিজারে রেখে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার এই ঘটনাটি ঘটে। এই হাড়হিম কাণ্ডে এলাকাজুড়ে চরম আতঙ্ক ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুটিকে যখন ফ্রিজারের মধ্যে রাখা হয়, তখন তীব্র ঠান্ডার কারণে সে জোরে জোরে কান্না শুরু করে। পরিবারের অন্য সদস্যরা শিশুটির কান্নার আওয়াজ শুনে দ্রুত সেখানে ছুটে যান। এরপর শিশুকে ফ্রিজার থেকে উদ্ধার করেন সকলে মিলে। সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে শিশুটির প্রাণ রক্ষা পায় এবং একটি বড়সড় দুর্ঘটনা অল্পের জন্য এড়ানো সম্ভব হয়।

ঘটনার জেরে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁরা আচমকা শিশুর কান্না শুনে চমকে ওঠেন। শুধু তাই নয় ফ্রিজারের ভেতর থেকে আওয়াজ পেয়ে হতবাক হন। এরপর শিশুটিকে উদ্ধার করে তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে একজন স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসক নিশ্চিত করেন যে শিশুটি বর্তমানে সুস্থ আছে এবং কোনও গুরুতর বিপদের মধ্যে নেই।

আরও পড়ুন: পঞ্চাশ হাজার টাকার বিনিময়ে মাত্র এক মাসের শিশুকে বিক্রি! অভাবের তাড়নায় যা করলেন বাবা-মা, শুনলে চোখে জল আসবে 

পরবর্তীতে ঘটনার তদন্ত ও চিকিৎসা মূল্যায়নের পর জানা যায়, শিশুটির মা প্রসব-পরবর্তী মনোরোগে (পোস্টপার্টাম সাইকোসিস) ভুগছিলেন। এটি একটি বিরল কিন্তু গুরুতর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, যা সন্তান জন্মের পর কিছু মায়েদের মধ্যে দেখা যায়। এমনকী তাঁদের বাস্তবতার সংস্পর্শ থেকে বিচ্ছিন্ন করে তোলে।

চিকিৎসকদের মতে, সন্তান জন্মের পর হরমোনের পরিবর্তন হয়৷ এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে নানা ধরণের মানসিক চাপের সৃষ্টি হয়। ফলস্বরূপ এই ধরণের বিরল রোগ দেখা দিতে পারে, যার ফলে আচরণগত সমস্যা, অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এমনকী নিজের বা সন্তানের ক্ষতি করার প্রবণতাও দেখা যায়। এই অসুস্থতা দ্রুত শনাক্ত করে চিকিৎসা শুরু করাই এর মোকাবেলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

আরও পড়ুন: সিনিয়র দাদার গোপন রহস্য ফাঁস তরুণের, শেষমেশ যা পরিণতি হল, জানলে শিউরে উঠবেন আপনিও, মাদ্রাসায় চরম বিক্ষোভ 

ঘটনার পর পরিবারের সদস্যরা দ্রুত ওই মহিলার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। বর্তমানে তাঁর চিকিৎসা চলছে বলে জানা গিয়েছে। পশাপাশি পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁরা শিশুর বেঁচে যাওয়ায় অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছেন। আরও জানান তাঁরা, শিশুর মায়ের পূর্ণ সুস্থতার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এই ঘটনা কারুলা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। ঘটনার প্রেক্ষিতে অনেকেই মা-বাচ্চার পরবর্তী যত্ন ও মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন হচ্ছেন। সম্প্রদায়ের মানুষ এখন পোস্টপার্টাম সাইকোসিস (Postpartum Psychosis) সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠছেন এবং সময়মতো হস্তক্ষেপের গুরুত্ব বুঝতে পারছেন।