আজকাল ওয়েবডেস্ক: মার্চে বিক্ষোভ দেখেছে নেপাল। বিক্ষোভ ছড়িয়েছে সেপ্টেম্বরেও। কিন্তু পরিস্থিতি এই আকার ধারণ করতে পারে, ঘূণাক্ষরেও ভাবতে পারেনি কেউ। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য, পুলিশের গুলিতে নেপালে প্রাণ গিয়েছে ১৪ জনের। বেশকিছু সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ১৪ নয়, সংখ্যাটা ১৬। 

শুক্রবার থেকে নেপালে ফেসবুক, ইউটিউব এবং এক্স-সহ বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ রয়েছে, যার ফলে নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার নয়। রবিবার থেকেই ছাত্র যুব, এককথায় জেন-জি-রা পথে। সোমবার বিক্ষোভ নতুন মাত্রা পায়। অনেকের মতে, কেবল অ্যাপ ব্যান নয়, সামগ্রিকভাবে নেপালের পরিস্থিতি, সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, সব মিলিয়েই সামনে এসেছে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ। তবে পাশাপাশি কারণ যাই হোক না কেন, মূল কারণ, একযোগে একগুচ্ছ অ্যাপ ক্যাব নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। প্রশ্ন ঘুরছিল গত কয়েক ঘণতায়, তাহলে কি পরিস্থিতি নিয়ে পুনরায় ভাবনা চিন্তা করবে নেপাল সরকার? 

আরও পড়ুন: প্রামাণ্য দ্বাদশ নথি হিসেবে জুড়ে গেল আধার! এসআইআর মামলায় বড় নির্দেশ শীর্ষ আদালতের ...

সূত্রের খবর, সে দেশের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন। যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী গুরুং সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। সূত্রের খবর, তিনি বলেন, 'সরকারের সিদ্ধান্ত জনগণের জীবনের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়।' একইসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমাদের জনগণের জীবন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি নীতিগতভাবে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার প্রয়োজন হয়, তাহলে আমাদের এর বিরুদ্ধে অটল থাকার কোনও মানে হয় না।'

সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন সূত্রে খবর, সোমবার সকাল থেকেই বাড়ছিল ক্ষোভের আঁচ। বেলা বাড়তেই বিক্ষোভের সামনে থাকা জেন জি-রা ব্যারিকেড ভেঙে পার্লামেন্টে ঢুকে পড়ে। তারপর থেকেই আরও উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত জানা গিয়েছে, নেপালে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৪ জনের। কোনও কোনও সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন সূত্রে খবর, প্রাণ গিয়েছে ১৬ জনের। আহত বহু।

সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টের দরজায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর, তাঁদের দেখলেই গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পুলিশ এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছে তাঁদের লক্ষ্য করে। পথে, প্রাণ হাতে নিয়ে তাঁদের স্লোগান, দুর্নীতি বন্ধ হোক, সোশ্যাল মিডিয়া-অ্যাপ নয়।

দ্য কাঠমান্ডু পোস্টের এক প্রতিবেদন অনুসারে, কিছু বিক্ষোভকারী এমনকি সংসদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন, কেউ কেউ গাছের ডাল এবং জলের বোতল ছুঁড়ে সরকার বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। পরিস্থিতি খারাপ হলে, পুলিশ জলকামান, টিয়ারগ্যাস এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করে। 


বিক্ষোভের পরিস্থিতিতে প্রাথমিকভাবে রাজধানীর বানেশ্বর এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছিল। নতুন বিধিনিষেধে বেশকিছু বদল করা হয়েছে। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত জানা গিয়েছে, রাষ্ট্রপতির বাসভবন (শীতল নিবাস), উপ-রাষ্ট্রপতির বাসভবন, লৈনচৌর, মহারাজগঞ্জ, সিংহ দরবারের চারপাশে, বালুওয়াতারে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন এবং সংলগ্ন এলাকাগুলির মতো বেশ কয়েকটি উচ্চ-নিরাপত্তা অঞ্চলে কারফিউ জারি। প্রধান জেলা কর্মকর্তা ছাবিলাল রিজাল জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে বারোটা থেকে রাত ১০:০০ টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। এই অঞ্চলগুলির মধ্যে জনসাধারণের চলাচল, জমায়েত, বিক্ষোভ বা ঘেরাও কার্যক্রম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।