আজকাল ওয়েবডেস্ক: চীনের এক ইনফ্লুয়েন্সার তাঁর সৃষ্টি প্রকাশ্যে আনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। বিড়ালদের জন্য একেবারে কার্যকর একটি ক্ষুদ্রাকৃতির ভূগর্ভস্থ রেলস্টেশন।
চীনের হেনান প্রদেশের বাসিন্দা ডিআইওয়াই নির্মাতা শিং ঝিলেই টানা চার মাস ধরে এই ক্ষুদে স্টেশনটি গড়ে তুলেছেন। যেখানে সূক্ষ্ম খুঁটিনাটি নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ১৬ আগস্ট তাঁর এই প্রকল্প উন্মোচনের পর দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় এবং মূলভূখণ্ড চীনের সোশ্যাল মিডিয়ায় মিলিয়ন ভিউ সংগ্রহ করে। ১২ লাখেরও বেশি অনুসারী থাকা শিং তাঁর হাতে বানানো অভিনব সব প্রজেক্টের জন্যই পরিচিত।
আরও পড়ুন: প্রশ্নফাঁস রুখতে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে স্কুল সার্ভিস কমিশন, থাকছে কোন নিয়মের বেড়াজাল
ক্ষুদে স্টেশনটি দেখতে একেবারে বাস্তবের মতো— ছোট্ট প্ল্যাটফর্ম, সেফটি ডোর, বিজ্ঞাপনের বোর্ড, এমনকি চলন্ত এসকেলেটরও আছে। নির্ভুলভাবে একটি ক্ষুদে ট্রেন এসে দাঁড়ায়, বিড়ালগুলো তাতে ওঠানামা করে। ট্রেনের বগিতেও আসন আর হ্যান্ডরেল বসানো রয়েছে, যেন সত্যিকারের মেট্রো। মাত্র কয়েকদিনেই ভিডিওটি ১০ কোটিরও বেশি ভিউ পায়। অনেক দর্শক প্রথমে ভেবেছিলেন এটি হয়তো ডিজিটালি বানানো।
সন্দেহ দূর করতে শিং পর্দার আড়ালের ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে দেখা যায় কীভাবে তিনি প্রতিটি অংশ হাতে বানিয়েছেন— রেললাইন থেকে শুরু করে ক্ষুদে এসকেলেটর পর্যন্ত। ভিডিওতে শিং বলেন, “যখনই কোনও সমস্যা এসেছে, আমরা সমাধান করেছি। আমার দৃঢ়তা কখনও ভাঙেনি, আর বহুবার ব্যর্থ হওয়ার পর অবশেষে স্টেশন তৈরি হল।”
এই সূক্ষ্ম প্রকল্পটি একটি বড় খালি ফ্যাক্টরির ভেতরে বানানো হয়। শিং ও তাঁর দল নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। ট্রেনের দরজা ও প্ল্যাটফর্মের দরজা একসঙ্গে খোলা-বন্ধ করার সমন্বয় করতে বিপুল শ্রম দিতে হয়। এসকেলেটরগুলো যেন নির্বিঘ্নে চলে, তার জন্যও সপ্তাহের পর সপ্তাহ চেষ্টা চালাতে হয়েছে। স্টেশন তৈরির পরেও রক্ষণাবেক্ষণ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। পরিষ্কার করার সময় তাঁরা বারবার নিচু ছাদে মাথা ঠুকতেন। শেষ পর্যন্ত শিং জায়গাটিকে পরিষ্কার রাখতে রোবট ভ্যাকুয়াম ও একটি ক্ষুদে সহকারী বট বসান।
শিং তাঁর স্ত্রী, এক ছোট ছেলে, একটি শিবা ইনু কুকুর এবং দুই বিড়াল— Not Bad আর Pretty Good-এর সঙ্গে থাকেন। বিড়াল দুটি খুব দ্রুতই তাদের নতুন আন্ডারগ্রাউন্ড খেলার মাঠে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে।
#Caturday #CatTown
— Nikki ???????????? (@nikki_miumiu)
A functional subway system.
I wish I got a town like this for my cats ???? pic.twitter.com/B3QtnxCclSTweet by @nikki_miumiu
এটাই শিং-এর প্রথম ভাইরাল প্রজেক্ট নয়। ২০২৩ সালে তিনি প্রথম আলোচনায় আসেন, যখন স্ত্রীর পোষা প্রাণীর দোকানের ভেতরে বিড়ালদের জন্য বিলাসবহুল একটি ক্ষুদে ফ্ল্যাট বানিয়েছিলেন। তাতে ছিল শোবার ঘর, বাথরুম, রান্নাঘর— এমনকি একটি ছোট লিফটও। দর্শকদের ইতিবাচক সাড়ায় অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি “ক্যাট টাউন” বিস্তৃত করেন। সেখানে তৈরি করেন সিনেমা হল, সুপারমার্কেট, বিলিয়ার্ডস হল, এমনকি ফুট স্পা। সবই ক্ষুদ্রাকৃতির কিন্তু কার্যকর প্রতিরূপ।
শিং জানিয়েছেন, এই সব সৃষ্টিকে বাস্তব রূপ দিতে তিনি নিজেই ৩ডি মডেলিং, কাঠের কাজ ও ওয়েল্ডিং শিখেছেন। তিনি বলেন, “শৈশব থেকেই আমি কিছু বানাতে ভালোবাসি। এই কাজ আজও আমাকে একদিকে সাফল্যের অনুভূতি দেয়, অন্যদিকে শিশুসুলভ আনন্দ জাগায়।”
এই প্রকল্প অনলাইনে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। দর্শকরা তাঁর সৃজনশীলতা, কারিগরি দক্ষতা ও নিষ্ঠার প্রশংসা করেছেন। অনেকে বলেছেন, বিড়ালরা নিজেদের আন্ডারগ্রাউন্ড রেলস্টেশন কীভাবে আরামে ব্যবহার করছে, তা দেখে মনে হচ্ছে এটি “পৃথিবীর সবচেয়ে কিউট সাবওয়ে।” একজন মন্তব্য করেন, “এমন কিছু থাকলে দারুণ হত, হয়তো একদিন আমরা একসঙ্গে এমন কিছু বানাতে পারব।”
