আজকাল ওয়েবডেস্ক: বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রাবাসে হঠাৎ করেই যৌনতার উচ্চস্বরে শব্দ ছড়িয়ে পড়ায় কার্যত বিব্রত হয়ে পড়লেন অন্যান্য ছাত্রছাত্রীরা। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওকে ঘিরে তৈরি হয়েছে প্রবল চর্চা। ভিডিওটি পোস্ট করেছেন @st_xoxx নামে এক তরুণী, যিনি ক্যাপশনে লিখেছেন— “আমার কানে আগুন ধরছে, তোমাদের লজ্জা নেই?”। মুহূর্তে ভাইরাল এই ক্লিপে ইতিমধ্যেই তিন লক্ষেরও বেশি লাইক পড়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছিল এক বিশ্ববিদ্যালয় আবাসনের রাতের আড্ডার সময়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, একদল পড়ুয়া ক্লান্ত হয়ে ফিরছিলেন। হঠাৎই তারা থমকে যান অস্বাভাবিক উচ্চস্বরে গোঙানি শুনে। চারিদিকে প্রতিধ্বনিতে এমন শব্দ ছড়িয়ে পড়ছিল যে বোঝা যাচ্ছিল না কোন ফ্ল্যাট থেকে আসছে। এক যুবক হেসে জিজ্ঞেস করেন, “শব্দটা কোথা থেকে আসছে বুঝতে পারছ?”। একজন তরুণী ইশারা করে বলেন, “ওই ফ্ল্যাটটা হবে, জানলা খোলা, পর্দা টানা আর লাল আলো জ্বলছে।” কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি কোন ঘর থেকে আওয়াজ আসছে।

অবশেষে শব্দ সহ্য করতে না পেরে বন্ধুরা দৌড়ে সরে যায় এবং চিৎকার করে বলে ওঠেন—“জানলা বন্ধ করো! আশা করি মজা পাচ্ছ!”। এই দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ পেতেই মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। টিকটকে ব্যবহারকারীরা একের পর এক কৌতুক ছুঁড়ে দেন। কেউ মন্তব্য করেছেন, “ওরা কি ভূত তাড়াচ্ছিল?” আবার আরেকজন লিখেছেন, “যা পাচ্ছে ওটা আমারও চাই।” একজন বলেন, “কেন ওরা যেন জনসমক্ষে ঘোষণা করছে।” এমনকি একজন মজা করে লিখে ফেলেন, “আমি হলে চিৎকার করে বলতাম—FINISH HER!”।

এই ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে, ভিডিওটি শুধু বিব্রতই করেনি, বরং মজার খোরাকও জুগিয়েছে বহু দর্শকের কাছে। তবে অনেকে আবার সমালোচনা করে বলেছেন, পড়াশোনার জায়গায় এভাবে গোপনীয়তা ভেঙে প্রকাশ্যে আসা ঘটনা অন্যদের মানসিক চাপ তৈরি করে। এখানেই শেষ নয়। কয়েক মাস আগেই বার্মিংহাম শহর একই কারণে আন্তর্জাতিক খবরে উঠে এসেছিল। ন্যাশনাল এক্সপ্রেস ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসের একটি বাসে পিছনের সিটে এক দম্পতিকে প্রকাশ্যে যৌনকর্মে লিপ্ত হতে দেখা যায়। বাসটি তখন নর্থফিল্ড লেজার সেন্টারের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে অন্য যাত্রীরা মুখ ফিরিয়ে নেন, তবে ভিডিও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেটির ক্যাপশন ছিল— “Average Birmingham bus commute” সঙ্গে খুলি ইমোজি।

আরও পড়ুন: সমকামী সঙ্গমের অভিযোগ, প্রকাশ্যে দুই ব্যক্তিকে চাবুক দিয়ে পেটানো হল ৭৬ বার, ১০০ জন ‘উপভোগ’ করলেন সেই শাস্তি

এই ধরনের ঘটনায় ছাত্রছাত্রীদের একাংশ মারাত্মক অস্বস্তি ও মানসিক চাপের শিকার হন। বিশ্ববিদ্যালয় আবাসনে পড়াশোনা ও শান্তিপূর্ণ জীবনযাপনের পরিবেশ নষ্ট হয়। অনেক সময় গোপনীয়তার আড়ালে থাকা অন্তরঙ্গ মুহূর্ত যখন জনসমক্ষে চলে আসে, তখন তা একদিকে হাস্যরসের উপাদান হয়ে দাঁড়ালেও অন্যদিকে তৈরি করে লজ্জা, অস্বস্তি এবং অস্বাস্থ্যকর কৌতূহল। মনোবিশ্লেষকদের মতে, এমন ঘটনার প্রভাব তরুণ সমাজের ওপর দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক হতে পারে। ব্যক্তিগত সম্পর্কের গোপনীয়তা যখন মজার উপাদান হয়ে যায়, তখন অন্যরা সেটিকে সহজভাবে নিলে নিজের সীমা ভাঙার প্রবণতা বাড়তে পারে। আবার অপরদিকে, যারা ঘটনাটির শিকার হন, তাদের কাছে এটি হয়ে ওঠে মানসিক আঘাতের অভিজ্ঞতা।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনও এ বিষয়ে কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে ছাত্রাবাসে নিরাপত্তা, নীতি-নিয়ম এবং গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার যুগে ব্যক্তিগত মুহূর্ত প্রায়শই জনসমক্ষে চলে আসছে, যা সমাজে নতুন ধরনের নৈতিক বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে।