আজকাল ওজন বেড়ে যাওয়া নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে। অনেকেই শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে নানা রকম ডায়েট, থেকে শরীরচর্চা করে থাকেন। তবে যদি বিশেষ কোনও চেষ্টা ছাড়াই হঠাৎ করে শরীরের ওজন দ্রুত কমতে শুরু করে, তাহলে তা চিন্তার ভাঁজ ফেলে বই কী! কারণ আচমকা ওজন কমে যাওয়া শরীরের বেশ কিছু গুরুতর রোগের সংকেত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে যদি কারও মোট ওজনের ৫ থেকে ১০ শতাংশ কমে যায় এবং এর পেছনে কোনও নির্দিষ্ট কারণ না থাকে, তবে অবশ্যই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের মতামত নেওয়া উচিত। তাহলে আচমকা ওজন কমে যাওয়া কোন কোন রোগের লক্ষণ হতে পারে, জেনে নিন-
• ক্যানসারঃ হঠাৎ ওজন কমার অন্যতম প্রধান কারণ ক্যানসার । বিশেষ করে পেট, ফুসফুস, লিভার, অগ্ন্যাশয় বা রক্তের ক্যানসারের ক্ষেত্রে রোগ শুরু হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে ওজন কমতে দেখা যায়।
• হরমোনজনিত সমস্যাঃ হাইপারথাইরয়েডিজমে শরীরে অতিরিক্ত থাইরয়েড হরমোন তৈরি হয়, যার ফলে বিপাকের হার বেড়ে গিয়ে ওজন দ্রুত কমে যায়।অ্যাডিসন’স ডিজিজ বা কর্টিসল হরমোনের ঘাটতিতেও ওজন কমতে পারে।
আরও পড়ুনঃ পুজোর আগে ত্বকের জৌলুস ফেরাতে চান? সহজ কটি নিয়ম মানলেই পাবেন ঝকঝকে ত্বক
• পাচনতন্ত্রের রোগঃ ক্রোন’স ডিজিজ, উলসারেটিভ কলাইটিস বা সিলিয়াক রোগে শরীর খাবারের পুষ্টি শোষণ করতে পারে না। ফলে ধীরে ধীরে ওজন কমতে থাকে এবং রোগী দুর্বল হয়ে পড়েন।
• মানসিক সমস্যাঃ খাদ্য গ্রহণজনিত রোগ যেমন অ্যানোরেক্সিয়া বা বুলিমিয়ায় ওজন কমতে পারে। আবার অনেক সময় বিষণ্নতা ও উদ্বেগের কারণেও খিদে কমে যায়। যার প্রভাব সরাসরি শরীরের ওজনে দেখা দেয়।

• ডায়াবেটিস ও অন্যান্য রোগঃ টাইপ-১ ডায়াবেটিসে শরীর যখন গ্লুকোজ ব্যবহার করতে পারে না, তখন শক্তির জন্য ফ্যাট ও মাংসপেশি ভেঙে ব্যবহার করে। ফলে ওজন দ্রুত কমে যায়। হার্ট ফেলিওর, টিউবারকিউলোসিস, এইচআইভি বা গুরুতর সংক্রমণেও অনিচ্ছাকৃত ওজন হ্রাস হতে পারে।
• ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ অনেক সময় দীর্ঘদিন কিছু ওষুধ খাওয়ার ফলে ক্ষুধামন্দা দেখা দেয় বা হজমে সমস্যা হয়। এর ফলেও ওজন কমে যেতে পারে।
আরও পড়ুনঃ ব্যায়ামের সময়েও দেখা যায় হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ! কোন কোন বিপদসংকেত না বুঝলেই ঘনিয়ে আসবে মৃত্যু?
• ক্যাশেক্সিয়া বা ওয়েস্টিং সিন্ড্রোমঃ এটি একটি জটিল অবস্থা, যেখানে শরীর থেকে একইসঙ্গে ফ্যাট ও মাংসপেশি নষ্ট হয়ে যায়। ক্যানসার, হার্ট ফেলিওর বা কিডনির শেষ পর্যায়ের রোগে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে,, যদি কারও শরীরের ওজন অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত কমতে থাকে, তাহলে তা একেবারেই অবহেলা করা উচিত নয়। সেক্ষেত্রে দেরি না করে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে রোগ শনাক্ত করা জরুরি। কারণ প্রাথমিক পর্যায়ে সঠিক চিকিৎসা শুরু করলে গুরুতর অনেক রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়
