আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইংরেজি ভাষায় যক্ষ্মাকে টিউবারকিউলোসিস বলে। মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে এই রোগ হয়ে থাকে। টিবি বা টিউবারকিউলোসিস একটি ছোঁয়াচে রোগ যা নিঃশ্বাসের মাধ্যমে একজনের থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।। টিবি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি যখন কাশি, হাঁচি দেয় কিংবা কথা বলে বা গান গায়, তখন এই ব্যাকটেরিয়া বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। রোগটি আমাদের দেহের সেই সব অংশকে আক্রমণ করে যেখানে রক্ত ও অক্সিজেনের পরিমাণ বেশি। সেকারণেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফুসফুসে টিবি হয়। ফুসফুসের টিবিকে বিজ্ঞানের ভাষায় পালমোনারি টিবিও বলা হয়। প্রখ্যাত কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যও টিবিতে আক্রান্ত হয়েই প্রাণ হারান। কাজেই বুঝতে পারছেন টিবি প্রতিরোধে সচেতনতা কতটা জরুরি জরুরি। সুকান্তের সময় অবশ্য এই রোগের চিকিৎসা ছিল না। এখন সেই অবস্থা বদলে গিয়েছে। হাঁচি বা কাশির সময় মুখ ঢেকে রাখা, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং সর্বোপরি সময় মতো চিকিৎসা টিবি সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
আরও পড়ুন: নিজে অক্ষম, স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা করতে প্রতিবেশীকে ভাড়া করলেন যুবক, ৭২ বার চেষ্টার পর কী হল ফলাফল?
টিবি বা যক্ষ্মা রোগের লক্ষণগুলি নির্ভর করে শরীরের কোন অংশ আক্রান্ত হয়েছে তার উপর। তবে, যেহেতু টিবির ব্যাকটেরিয়া সাধারণত বেড়ে ওঠে ফুসফুসে (পালমোনারি টিবি)। তাই এই রোগে কিছু সাধারণ লক্ষণ সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়।
তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাশি।
কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া।
রাত্রে ঘাম হওয়া।
ওজন কমতে পারে বা খিদে কমে যেতে পারে।
অতিরিক্ত ক্লান্তি লাগা।
বুকে ব্যথা ও ক্ষুধামান্দ্য।
জ্বর এবং শীত শীত ভাব।
এক্সট্রা পালমোনারি টিবি: এই ধরনের টিবিতে রোগ ফুসফুস থেকে শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। ফুসফুস থেকে সমস্যা হাড়ে, কিডনিতে কিংবা লিম্ফ নোডে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই এক্সট্রাপালমোনারি টিবি-র লক্ষণ কী কী?
১। লিম্ফ নোড টিবি: লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া।
২। হাড়ের টিবি: হাড়ের ব্যথা, ফোলাভাব, এবং বিকৃতি।
৩। কিডনির টিবি: প্রস্রাবের সাথে রক্ত, কোমরে ব্যথা।
৪। মস্তিষ্কের টিবি (মেনিনজাইটিস): মাথাব্যথা, জ্বর, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, চেতনা হ্রাস।
আরও পড়ুন: নিজে অক্ষম, স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা করতে প্রতিবেশীকে ভাড়া করলেন যুবক, ৭২ বার চেষ্টার পর কী হল ফলাফল?
সাধারণ কাশি এবং টিবির কাশির মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে, যা দেখে বোঝা যেতে পারে।
প্রথমত সাধারণ কাশি সাধারণত কয়েকদিন বা এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায়। কিন্তু টিবির কাশি তিন সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে চলতে থাকে।
পার্থক্য থাকে কাশির ধরনেও। সাধারণ কাশি শুকনো বা শ্লেষ্মা যুক্ত হতে পারে। টিবির কাশি প্রথমে শুকনো থাকে কিন্তু পরে শ্লেষ্মা বের হতে পারে, এই শ্লেষ্মাতে অনেক সময় রক্ত মিশে থাকে।
আরও পড়ুন: নিজে অক্ষম, স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা করতে প্রতিবেশীকে ভাড়া করলেন যুবক, ৭২ বার চেষ্টার পর কী হল ফলাফল?
এছাড়া অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে সাধারণ কাশির সঙ্গে সাধারণত জ্বর, সর্দি, গলা ব্যথা ইত্যাদি দেখা যায়। টিবির ক্ষেত্রে কাশির পাশাপাশি রাতের বেলা ঘাম হওয়া, ওজন কমে যাওয়া, ক্ষুধামান্দ্য, দুর্বলতা এবং বুকে ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়।
আবার কাশির সঙ্গে যদি জ্বর হয় সেই জ্বরের ধরনেও পার্থক্য থাকে। সাধারণ জ্বর কয়েকদিনের মধ্যে সেরে যায়। টিবির ক্ষেত্রে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের জ্বর দীর্ঘদিন ধরে থাকতে পারে, যা সাধারনত রাতের দিকে বাড়ে।
আরও পড়ুন: নিজে অক্ষম, স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা করতে প্রতিবেশীকে ভাড়া করলেন যুবক, ৭২ বার চেষ্টার পর কী হল ফলাফল?
যদি আপনার কাশি তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে থাকে এবং এর সঙ্গে অন্যান্য লক্ষণও দেখা যায়, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। টিবি একটি নিরাময়যোগ্য রোগ, চিকিৎসার দ্বারা টিবিকে প্রায় চিরতরে সারিয়ে তোলা সম্ভব। তার জন্য ৬ মাসের জন্য অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স অবশ্যই নিতে হবে। সময় মতো চিকিৎসা শুরু করাও জরুরি।
