আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজধানী দিল্লিকে সাংস্কৃতিক, আধ্যাত্মিক ও ঐতিহ্যের দিক থেকে আরও সমৃদ্ধ করতে স্বাধীনতা দিবসের মঞ্চ থেকে একাধিক পর্যটন প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা। উদযাপনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি জানান, যমুনা নদীর তীরে ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ ছট ঘাট, অত্যাধুনিক রিভার ক্রুজ পরিষেবা এবং ঐতিহাসিক স্থাপত্যগুলিকে একসঙ্গে যুক্ত করতে একটি ‘হেরিটেজ সার্কিট’ গড়ে তোলা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দিল্লির সমৃদ্ধ ইতিহাস, আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য ও আধুনিক আকাঙ্ক্ষা একে অনন্য করে তুলেছে। এই পর্যটন প্রকল্পগুলি শুধু অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে না, বরং প্রতিটি দর্শনার্থীর কাছে রাজধানীর সঙ্গে গভীর, প্রাণবন্ত সংযোগ স্থাপন করবে’।

সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সার্কিটের মাধ্যমে দিল্লির দুর্গ, স্মৃতিস্তম্ভ, জাদুঘর ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলি এক রুটে যুক্ত হবে, ফলে পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ আরও সহজ হবে এবং শহরে দীর্ঘ সময় অবস্থান করতে উৎসাহিত করবে। যমুনা নদীতে আধুনিক ক্রুজ পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে যাত্রীরা নদীর তীরবর্তী সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য উপভোগ করতে পারবেন। এ ছাড়া নদীর তীরে নিয়মিত সন্ধ্যা আরতির আয়োজন করা হবে, যা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী নদী পূজার ধাঁচে হবে। প্রস্তাবিত ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ ছট্‌ ঘাটটি হবে দেশের অন্যতম বৃহৎ নদীতীরবর্তী আধ্যাত্মিক সমাবেশস্থল, যা বিশেষত ছট্‌ পূজা এবং অন্যান্য উৎসবে লক্ষাধিক ভক্তকে আকর্ষণ করবে। পর্যটন প্রকল্পগুলি ধাপে ধাপে চালু হবে বলে জানানো হয়েছে। দিল্লির জন্য নিজের বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গির কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা বলেন, ‘ছোট হলেও দৃঢ় পদক্ষেপের মাধ্যমে আমরা গড়ে তুলব এক স্বাধীন, উন্নত দিল্লি—যে শহরকে বিশ্ব শ্রদ্ধার চোখে দেখবে এবং যা আমাদের দেশের সম্ভাবনার গর্বিত প্রতীক হয়ে উঠবে’।

দেশের প্রতিরক্ষা নিয়ে লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপন মঞ্চ থেকে বড় ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন যে দেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তি-ভিত্তিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য ২০৩৫ সালের মধ্যে  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা 'সুদর্শন চক্র' নামে একটি জাতীয় সুরক্ষা ঢাল প্রস্তুত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী মোদি সুদর্শন চক্র মিশনকে একটি শক্তিশালী, বহু-স্তরীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসাবে বর্ণনা করেছেন যা ‘কেবল আমাদের দেশকে রক্ষা করবে না, বরং সেই শত্রু দেশকে উপযুক্ত জবাব দেবে। ’মিশন 'সুদর্শন চক্র' ভগবান কৃষ্ণের সুদর্শন চক্র দ্বারা অনুপ্রাণিত বলে জানিয়েছেন মোদি। প্রধানমন্ত্রী আরও স্পষ্ট করেছেন যে, এই উন্নয়নের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্ত গবেষণা, উন্নয়ন এবং উৎপাদন ভারতেই করা হবে এবং এটি দেশের তরুণ প্রজন্মের হাতেই হাতেই প্রস্তুত করা হবে।

মহাভারতের উদাহরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, কীভাবে শ্রী কৃষ্ণ তাঁর সুদর্শন চক্র দিয়ে সূর্যকে ঢেকে দিনকে অন্ধকার করে দিয়েছিলেন, যাতে অর্জুন তাঁর প্রতিজ্ঞা পূরণ করতে সক্ষম হন। একইভাবে, ভারতের 'সুদর্শন চক্র'ও শত্রুদের প্রতিটি আক্রমণকে নিষ্ক্রিয় করতে এবং তাদের চেয়ে বহুগুণ বেশি শক্তি দিয়ে প্রতিশোধ নিতে সক্ষম হবে। মোদির কথায়, সুদর্শন চক্র মিশন শুরু করার জন্য কিছু মৌলিক পদক্ষেপের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আগামী দশ বছরে, আমরা এই অভিযানকে পূর্ণ শক্তির সঙ্গে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্য রাখি। সমগ্র আধুনিক ব্যবস্থা, এর গবেষণা, উন্নয়ন এবং উৎপাদন আমাদের দেশের মধ্যেই করা হবে, আমাদের যুবসমাজের প্রতিভা এবং আমাদের জনগণের দক্ষতা ব্যবহার করে’।