অল্প বয়সে বিশ্বখ্যাত গোয়েন্দা শার্লক হোমস-এর গল্প গোগ্রাসে পড়েননি এমন মানুষ কম। বাঙালি পাঠকদের কাছে ফেলুদার পাশাপাশি শার্লক হোমসও যথেষ্ট জনপ্রিয়। ব্রিটিশ লেখক স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের তৈরি কাল্পনিক চরিত্র শার্লক হোমস এক কথায় জগৎ বিখ্যাত। হোমসের গল্পের প্রথম সংকলন প্রকাশিত হয়েছিল ১৮৮২ সালে।
এবার সেই শার্লক হোমস চরিত্র বাংলা মোড়কে বড় পর্দায় ফুটে উঠবে। টিজারের পর সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে সায়ন্তন ঘোষাল পরিচালিত ‘সরলাক্ষ হোমস’ ছবির ট্রেলার। নাম ভূমিকায় অভিনয় করছেন ঋষভ বসু । ছবিতে শার্লক হোমসের বদলে নাম রাখা হয়েছে সরলাক্ষ হোমস।ছবির কাহিনীতে বলা হয়েছে ব্রিটিশরা সরলাক্ষ নাম উচ্চারণ করতে পারেন না বলেই তারা ‘শার্লক’ নামটি উচ্চারণ করেন। খুব স্বাভাবিক কারণেই লন্ডনের প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছে এই ছবি। একটি খুনের কিনারা করতে এই গোয়েন্দা সরলাক্ষকে ডেকে পাঠানো হয়। ছবির প্রতিটি মুহূর্ত যে থাকবে টানটান উত্তেজনা, তার ইঙ্গিত পাওয়া গেল ছবির এই ঝলকেই। যেমনটা গোয়েন্দা ছবিতে হয়। সেই সঙ্গে থাকবে দুরন্ত অ্যাকশন। এবং অবশ্যই অসহ্য সাসপেন্স। এই ছবির মাধ্যমেই বিলিতি গোয়েন্দা পাচ্ছে বাংলার রং।
এ ছবির প্রথম পোস্টারের ক্যাপশনে লেখা ছিল, “কোনও কিছুই যায় না এড়িয়ে সরলাক্ষের চোখ; বাস্কারভিলের দৈত্য দিয়েই সূচনা না-হয় হোক।” অর্থাৎ আর্থার কোনান ডয়েলের ‘দ্য হাউন্ড অফ দ্য বাস্কারভিলস’-এর প্রভাব সায়ন্তনের ছবিতে থাকবে। অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার, মিথ আর রহস্য— সব মিলিয়ে হাউন্ড অফ বাস্কারভিলস যেমন জটিল, তেমনই গা ছমছমে।
‘সরলাক্ষ হোমস’ ছবিতে ২২১ বি বেকার স্ট্রিটের বাড়ির মালিক শার্লক হোমস এর আদল অনেকটাই সরলাক্ষর সঙ্গে মিলে যায়। যদিও বয়সটা নিতান্তই কম। তবে তার সবটাই জুড়ে রয়েছে কলকাতা এবং বাঙালিয়ানা।উল্লেখ্য,পরিচালক সায়ন্তন জানিয়েছেন যে বাংলা ছবির অধিকাংশ প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা দের মধ্যে প্রায় প্রত্যেকেই কোন না কোনও গোয়েন্দা চরিত্রের অভিনয় করেছেন। তাই আমি এমন একজনকে এই গোয়েন্দা চরিত্রে চেয়েছিলাম যাকে নতুন করে গড়ে তোলা যায়। এই ছবিতে ঋষভ বসুর পাশাপাশি অর্ণ মুখোপাধ্যায়, রাজনন্দিনী পাল, কাঞ্চন মল্লিক, গৌরব চক্রবর্তী, সাহেব চট্টোপাধ্যায়, বাদশা মৈত্র ও আরও অনেক রয়েছেন। প্রযোজক এসকে মুভিজের তরফে যে ঋষভ বসু-কে কেন্দ্র করে বাংলা গোয়েন্দা ধারাকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে চাইছে তারা, এই পদক্ষেপ থেকেই তা স্পষ্ট।
বহু বছর ধরেই কথিত, লন্ডনের শীতল আবহাওয়া এবং অন্ধকার-ঘন জঙ্গলেই আনাগোনা এক অশরীরী হাউন্ডের...শিকারের গন্ধ পেলেই তার থাবা থেকে বেঁচে ফেরা মুশকিল! কেউ বলে অভিশাপ, কেউ বলে অশরীরী ছায়া—বাস্কারভিলস অঞ্চল ঘিরে রয়েছে গা-ছমছমে আতঙ্ক! সেই জমিদার পরিবারের একের পর এক সদস্যের রহস্য মৃত্যু কি সাধারণ কোনও ঘটনা? না কি এর নেপথ্যে রয়েছে কারওর সুপ্ত অভিসন্ধি! প্রশ্ন অনেক কিন্তু নেই কোনও সঠিক উত্তর। এই রহস্য অনুসন্ধানে, খুনের তদন্তেই আসছে ‘সরলাক্ষ’—সাধারণ মানুষের দৃষ্টি-বুদ্ধি-বিবেচনায় যা অধরা তা-ই ধরা দেয় সরলাক্ষের তীক্ষ্ণ নজরে। বিদেশের এই মৃত্যুলীলার শেষ কি তবে করতে পারবে বাঙালি গোয়েন্দা ‘সরলাক্ষ হোমস’?
শার্লকের চরিত্রকে বাংলার দর্শকদের মতো করে সাজানো কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল পরিচালকের। উতরোতে কি পারবেন? তা জানা যাবে আর কয়েকদিন পর ২৯ আগস্ট, এ ছবির মুক্তির পরেই। তবে আপাতত ছবির ঝলক দেখে নড়েচড়ে বসেছে নেটপাড়া।
অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার, মিথ আর রহস্য—এই জটিল কাহিনির সমাধান করতে পারবে কেবল একজন!
