বলিউড তারকা আমির খান ও তাঁর পুরো পরিবার সম্প্রতি ভাই ফয়জল খানের বিস্ফোরক মন্তব্যে ও দাবিতে গভীরভাবে ক্ষুব্ধ। ফয়জলের অভিযোগ, তাঁকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে চিহ্নিত করে আমির খান এক বছরেরও বেশি সময় গৃহবন্দি করে রেখেছিলেন। এই প্রসঙ্গে শনিবার এক লিখিত বিবৃতিতে পরিবার জানিয়েছে, ফয়জলের বক্তব্য বিভ্রান্তিকর ও ভীষণ কষ্টদায়ক।


আমির খানের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—

“ফয়জল আমাদের মা জিনত তাহির হুসেন, বোন নিকাত হেগড়ে ও ভাই আমির খানের সম্পর্কে যে কষ্টদায়ক ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে আমরা অত্যন্ত দুঃখিত। এটি প্রথমবার নয় যে তিনি ঘটনাগুলো ভুলভাবে উপস্থাপন করেছেন। তাই আমরা স্পষ্ট করে জানাতে চাই, ফয়জলকে নিয়ে প্রতিটি সিদ্ধান্ত পরিবারের সম্মিলিত মত ও একাধিক চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে—তার মানসিক সুস্থতার স্বার্থে। এজন্য আমরা এতদিন এই কঠিন ও বেদনাদায়ক সময়ের বিশদ প্রকাশ করিনি।” পরিবার আরও অনুরোধ করেছে, গণমাধ্যম যেন বিষয়টিকে ‘চটকদার, মশলাদার গসিপ’-এ পরিণত না করে এবং সহানুভূতি প্রদর্শন করে।

 

 

ফয়জলের অভিযোগ, এক সাক্ষাৎকারে ফয়জল অভিযোগ করেন, কয়েক বছর আগে তাঁকে ‘স্কিৎজোফ্রেনিয়া’ আক্রান্ত বলে দাবি করে পরিবারের সদস্যরা ‘পাগল’ আখ্যা দেন এবং সমাজের জন্য ক্ষতিকর বলেও প্রচার করেন। তাঁর কথায়, “আমির আমাকে মুম্বইয়ের বাড়িতে এক বছরের জন্য বন্দি করে রেখেছিল। মোবাইল কেড়ে নিয়েছিল, বাইরে যেতে দিত না। ঘরের বাইরে দেহরক্ষীরা থাকত, আমাকে নানান ওষুধ খাওয়ানো হতো।”

তিনি জানান, সেই সময়ে তিনি বাবার সাহায্য চাইতে চেয়েছিলেন, কিন্তু যোগাযোগের কোনও সুযোগ পাননি। এক বছর পর জোরাজুরির পর তাঁকে অন্য বাড়িতে থাকতে দেওয়া হয়।

তবে ফয়জলের সঙ্গে আমিরের এই বিরোধ দীর্ঘদিনের। মাঝেমধ্যেই দু'ভাইয়ের চাপানউতোরের খবরের গুঞ্জন ঘোরাফেরা করেছে বলিপাড়ার বিভিন্ন গলিতে।  আমির ও ফয়জলের সম্পর্ক বরাবরই টানাপোড়েনপূর্ণ। অতীতে পারিবারিক আর্থিক বিষয়ে স্বাক্ষরের অধিকার নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে তাঁরা আদালত পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন। ফয়জল দাবি করেছেন, জেজে হাসপাতালে তাঁর ২০ দিনের মানসিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকেরা তাঁকে ‘মানসিকভাবে সুস্থ’ ঘোষণা করেছিলেন।

দু’ভাই একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন ধর্মের দর্শন পরিচালিত ২০০০ সালের ‘মেলা’ ছবিতে। তবে ব্যক্তিগত সম্পর্কে সেই উষ্ণতা বহু আগেই হারিয়ে গেছে বলে স্পষ্ট।


প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই ঘর ছেড়েছেন আমির খান।নিজের বাড়ি ত্যাগ করে পালি হিলে চারটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট প্রতি মাসে ২৪.৫ লক্ষ টাকায় লিজ নিয়েছেন। কারণ? ভার্গো হাউজিং সোসাইটিতে তাঁর নিজস্ব ফ্ল্যাটগুলি হাই-প্রোফাইল পুনর্নির্মাণের কাজ চলছে।

বলিউডের অন্দরের খবর, অভিনেতা মে ২০২৫ থেকে মে ২০৩০ পর্যন্ত, ৪৫ মাসের লক-ইন পিরিয়ড সহ পাঁচ বছরের লিজে স্বাক্ষর করেছেন। চুক্তিতে ১.৪৬ কোটি টাকারও বেশি সিকিউরিটি ফি, চার লক্ষ টাকার স্ট্যাম্প ডিউটি এবং ২০০০ টাকার রেজিস্ট্রেশন ফি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ভাড়া বার্ষিক ৫% হারে বৃদ্ধি পাবে। আমিরের পুরনো ঠিকানা ভার্গো কমপ্লেক্সে প্রিমিয়াম সমুদ্রমুখী  ফ্ল্য়াট থাকবে বলেই আন্দাজ করা যাচ্ছে। দাম প্রতি বর্গফুট ১ লক্ষ টাকার বেশি। নতুন কিছু ইউনিটের মূল্য ১০০ কোটি টাকারও বেশি বলে ধারণা।

আমিরের নতুন অস্থায়ী ঠিকানা, উইলনোমোনা, পূজা কাসা থেকে মাত্র ৭৫০ মিটার দূরে—যেখানে শাহরুখ খান এবং তাঁর পরিবার বর্তমানে বসবাস করছেন। কারণ মন্নত-এও আপাতত পুনর্নির্মাণের কাজ চলছে।