আজকাল ওয়েবডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম ভার্জিনিয়ার মার্শাল কাউন্টিতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত একই পরিবারের চার প্রবীণ সদস্য। পাঁচ দিন নিখোঁজ থাকার পর রবিবার উদ্ধার হয় তাঁদের মৃতদেহ। মার্কিন পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি একটি গভীর খাদে পড়ে গিয়েছিল, যার অবস্থান এতটাই দুর্গম ছিল যে, উদ্ধারকর্মীদের সেখানে পৌঁছাতে পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায়।
মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন – ডঃ কিশোর দিবান (৮৯), আশা দিবান (৮৫), শৈলেশ দিবান (৮৬), এবং গীতা দিবান (৮৪)। তাঁরা সকলেই নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা ছিলেন এবং তাঁদের গাড়ির নম্বর ছিল EKW2611।
তাঁরা ২৯ জুলাই, সোমবার, পেনসিলভানিয়ার ইরির পিচ স্ট্রিটে একটি বার্গার কিং-এ শেষবারের মতো দেখা গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁদের শেষ ক্রেডিট কার্ড লেনদেনের রেকর্ডও মেলে। ওই দিন রাতে তাঁদের 'প্যালেস অফ গোল্ড' নামক ধর্মীয় স্থানে থাকার কথা ছিল। উল্লেখ্য, প্যালেস অফ গোল্ড হচ্ছে ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রভুপাদের অনুসারীদের দ্বারা নির্মিত একটি বিখ্যাত মন্দির ও আশ্রম।
কিন্তু তাঁরা কখনই নির্ধারিত স্থানে পৌঁছাননি। মোবাইল ফোনেও তাঁদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তাঁদের ফোনের সর্বশেষ অবস্থান শনাক্ত করা যায় মার্শাল কাউন্টির মাউনডসভিলে, ৩১ জুলাই ভোর ৩টা নাগাদ।
পরিবারটির খোঁজে চার দিন ধরে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালায় স্থানীয় প্রশাসন, হেলিকপ্টার পর্যন্ত নামানো হয়। অবশেষে উদ্ধারকারী দল তাঁদের গাড়িটি খুঁজে পায় বিগ হুইলিং ক্রিক রোডের একটি পাহাড়ি খাদে, সম্পূর্ণ দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া অবস্থায়।
মার্শাল কাউন্টির শেরিফ মাইক ডঘার্টি বলেন, “এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনও তদন্তাধীন।”
তিনি জানান, দুর্ঘটনাটি ঠিক কীভাবে ঘটল তা জানার চেষ্টা চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, পাহাড়ি রাস্তায় গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
এই ঘটনার কয়েক সপ্তাহ আগে, আরেক ভারতীয় যুবতী — ২৪ বছর বয়সী সিমরন — নিখোঁজ হন নিউ জার্সিতে। জানা গিয়েছে, একটি অ্যারেঞ্জ ম্যারেজের সূত্রে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। তদন্তকারীদের মতে, তিনি হয়তো বিয়ের ইচ্ছা না রেখেই আমেরিকায় ঘুরতে এসেছিলেন এবং তারপর থেকে আর যোগাযোগ করেননি।
একাধিক ভারতীয় পরিবার এবং অভিবাসী সংগঠন এই ধারাবাহিক নিখোঁজ ও দুর্ঘটনাকে উদ্বেগজনক বলছে এবং ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকেও তদন্তে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
