আজকাল ওয়েবডেস্ক: শ্রীনগর বিমানবন্দরে সম্প্রতি মর্মান্তিক এক ঘটনার সাক্ষী রইল সবাই। স্পাইসজেট কর্মীদের উপর সেনা কর্মকর্তার হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন চারজন । খবর সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রীনগর বিমানবন্দরে অতিরিক্ত হ্যান্ড ব্যাগেজ নিয়ে এক বিরোধের জেরে স্পাইসজেটের চারজন গ্রাউন্ড স্টাফ গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। অভিযোগ এসছে এক সেনা কর্মকর্তার উপর। তিনি কর্মীদের উপর শারীরিকভাবে আক্রমণ চালান। আহতদের মধ্যে একজনের মেরুদণ্ড ভেঙে গিয়েছে এবং আরেকজনের চোয়াল ভেঙেছে বলে খবর।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে যখন ওই সেনা কর্মকর্তা দিল্লিগামী একটি ফ্লাইটে উঠতে যাচ্ছিলেন। তাঁর সঙ্গে প্রায় ১৬ কেজি হ্যান্ড ব্যাগেজ ছিল। প্রসঙ্গত, ভারতে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে সর্বোচ্চ ৭ কেজি পর্যন্ত হ্যান্ড ব্যাগেজ বহনের অনুমতি রয়েছে। বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্পাইসজেটের পক্ষ থেকে জানানো হয়। কর্মীরা অত্যন্ত ভদ্রভাবে তাঁকে অতিরিক্ত ব্যাগেজের কথা জানান এবং এর জেরে অতিরিক্ত চার্জ পরিশোধ করতে বলেন। কিন্তু অভিযুক্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত চার্জ দিতে অস্বীকার করেন। এরপর চেক-ইন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না করেই জোর করে অ্যারো ব্রিজে ঢুকে পড়েন। এটি স্বভাবতই বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

সূত্রে জানা গিয়েছে, পরে সিআইএসএফ সদস্যরা তাঁকে ফের গেটের দিকে নিয়ে যান। এরপরই ঘটে বিপত্তি। গেটের কাছে নিয়ে আসতেই ওই কর্মকর্তা আচমকা আক্রমণাত্মক হয়ে পড়েন এবং হাতাহাতি শুরু হয়।

স্পাইসজেটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'আমাদের কর্মীরা ঘুষি, লাথি এবং কিউ-স্ট্যান্ড দিয়ে বারবার আক্রমণের শিকার হন। একজন কর্মী অচেতন হয়ে পড়েন, তবুও তাঁকে লাথি মারা চলতেই থাকে। আরেকজন সহকর্মী তাঁকে বাঁচাতে গেলে তাঁর মুখে গুরুতর আঘাত লাগে। এমনকি নাক ও মুখ থেকে রক্ত বেরোতে থাকে।'

ঘটনার পর আহত কর্মীদের দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  তাঁরা এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে খবর মিলেছে। ঘটনার ভিডিও ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তা একটি চেক-ইন ইনফরমেশন বোর্ড দিয়ে কর্মীদের বেধড়ক মারধর করছেন। এহেন পরিস্থিতিতে সিআইএসএফ সদস্যরা হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছেন।

এই ঘটনার জেরে স্পাইসজেট ইতিমধ্যেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযুক্ত যাত্রীর বিরুদ্ধে ‘নো-ফ্লাই’ তালিকায় অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া শুরু করেছে। পাশপাশি বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রককেও একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই নৃশংস হামলার বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতম পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ একটা নয়, দুটো নয়, আটটা! গত পনেরো বছরে আটজন পুরুষকে প্রথমে বিয়ে, তারপর তাঁদের থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ

স্পাইসজেট জানিয়েছে, 'আমরা আমাদের কর্মীদের উপর যেকোনও ধরনের হিংসার তীব্র নিন্দা করছি। এই ঘটনার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনগত ও নিয়ন্ত্রক পদক্ষেপ গ্রহণ করব।' সিআইএসএফ নিশ্চিত করেছে যে তারা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনছে। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এক্ষেত্রে বিমান চলাচলে কোনও ব্যাঘাত ঘটেনি।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক সিনিয়র কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, তাঁরা এই ঘটনার বিষয়ে অবগত। তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করবেন তাঁরা। তিনি আরও বলেন, 'ঘটনাটি এই মুহূর্তে আমাদের নজরে এসেছে। এর তদন্তও জারি রয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী সবসময় দেশের সব নাগরিক পরিসরে শৃঙ্খলা ও পারস্পরিক সম্মান রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'