আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি নাগপুরে এক মহিলার চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। তাঁর একের পর এক প্রতারণার ঘটনা প্রকাশ হতেই হুলুস্থুল চারিদিক। খবর অনুযায়ী, তিনি বহু পুরুষকে নিজের মিথ্যে পরিচয়ে বিয়ে করে তাঁদের কাছ থেকে একাধিকবার মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করতেন। সূত্রে জানা গিয়েছে অভিযুক্ত মহিলার নাম সামিরা ফাতিমা। তিনি একজন শিক্ষিকা বলে জানা গিয়েছে। গত ১৫ বছরে অন্তত আটজন পুরুষকে বিয়ে করেছেন বলে অভিযোগ। চলতি বছরের ২৯ জুলাই, নাগপুরের একটি চায়ের দোকান থেকে তাঁকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি তাঁর নবম সম্ভাব্য শিকারকে ফাঁদে ফেলতে যাচ্ছিলেন। এমন সময়ে পুলিশের হাতে ধরা খান অভিযুক্ত মহিলা। পুলিশ জানিয়েছে, সামিরা ফাতিমা একটি বিশেষ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। তারা বিয়েকে একটি 'মাধ্যম' হিসেবে ব্যবহার করে মূলত প্রভাবশালী ও বিবাহিত মুসলিম পুরুষদের ব্ল্যাকমেল করত। এরপর তাঁদের থেকে অর্থ আদায় করত। জানা গিয়েছে, এই সামিরা বিভিন্ন ম্যাট্রিমোনিয়াল ওয়েবসাইট ও ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে তার শিকারদের খুঁজে বের করত। অনেক সময় সে নিজেকে এক সন্তানের মা ও তালাকপ্রাপ্ত বলেও পরিচয় দিত। পাশাপাশি ভুয়ো কাহিনি শুনিয়ে সহানুভূতি ও বিশ্বাস অর্জন করত।
একটা পর্যায় পর বিশ্বাস অর্জনের পর সে ওই ব্যক্তিদের সঙ্গে ‘নিকাহ্’ সম্পন্ন করত। এরপর শুরু হত গল্পের নতুন মোড়। সামিরা পরে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ, সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার হুমকি কিংবা কখনও কখনও অভিযোগের মাধ্যমে বড় অঙ্কের অর্থ দাবি করত। এই টাকা সে কখনও ব্যাংকের মাধ্যমে আদায় করত। আবার কখনও নগদে এর লেনদেন চলত।
এক অভিযোগকারী জানিয়েছেন, সামিরা একজন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা এবং আরেকজনের কাছ থেকেও একইভাবে ১৫ লাখ টাকা আদায় করেছে। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এমনকি এই অভিযোগকারীদের মধ্যে রিজার্ভ ব্যাংকের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও রয়েছেন। পুলিশ অনুমান করছে, আদায়কৃত মোট অর্থ এর চেয়েও অনেক বেশি হতে পারে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সামিরা পূর্বেও তার গ্রেপ্তার চালাকির সঙ্গে এড়িয়ে গিয়েছিল। এখানেই শেষ নয়! এক পর্যায়ে সে নিজেকে গর্ভবতী বলেও দাবি করে আইনের চোখকে ফাঁকি দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সম্প্রতি নাগপুরের একটি চায়ের দোকানে নতুন একটি ফাঁদ পাতার সময় তাকে শনাক্ত করে পুলিশ। এরপর হাতেনাতে পাকড়াও করে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
বর্তমানে পুলিশ জানিয়েছে, পুরো চক্রটি কীভাবে কাজ করত এবং এর সঙ্গে আর কে কে জড়িত, তা জানতে তদন্ত জারি রয়েছে। সামিরাকে জেরা করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। খুব শীঘ্রই এর বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে৷
