আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিয়ে বলে কথা। শত বাধা উপেক্ষা করলেন পাত্র। পছন্দের পাত্রীকে সেদিনেই বিয়ে করবেন বলে স্থির করেন তিনি। তাই বন্যাও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি তাঁর ইচ্ছের পথে। রীতিমতো 'সাত সমুদ্র, তেরো নদী' পেরিয়ে বিয়ের মণ্ডপে পৌঁছলেন তিনি। তাও আবার ভিজে একেবারে একশা হয়ে। সেই ভেজা কাপড় পরেই বিয়ের মণ্ডপে বসেন পাত্র। 

 

বাড়ি থেকে স্করপিও গাড়ি করে রওনা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু খানিকটা পথ যাওয়ার পরে আর এগোয়নি গাড়ি। বন্যায় আটকে পড়ে গাড়িটি। এরপর কখনও নৌকায়, কখনও আবার পায়ে হেঁটে কয়েক কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন তিনি। বন্যার জলে ভাসতে ভাসতে বিয়ের আসরে তিনি পৌঁছন। পাত্রকে সেই অবস্থায় দেখে চোখে জল চলে আসে পাত্রীর। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে বিহারে। গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টির পর বিহারের একাধিক গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এমনকী এখনও পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যা কবলিত। সেই বন্যাতেই আটকে পড়েন পাত্র। কিন্তু বন্যা বাধা হয়ে দাঁড়ালেও, তা উপেক্ষা করেই বিয়ের আসরে পৌঁছন পাত্র। 

 

ঘটনাটি ঘটেছে ভাগলপুরে। পাত্রের নাম, দেবমুনী কুমার। ভারী বৃষ্টির জেরে গঙ্গার জলস্তর বিপদসীমা পেরিয়ে যায়। অন্য সময় হলে স্বাভাবিকভাবেই ৩৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারতেন দেবমুনী। কিন্তু কাতাকোষ গ্রামে পৌঁছতে রীতিমতো কালঘাম ছুটে যায় তাঁর। জলমগ্ন গ্রামে পৌঁছতে কখনও নৌকায়, কখনও আবার পায়ে হেঁটে যেতে হয় তাঁকে। 

 

আরও পড়ুন: টিভিতে দেখেছিলেন ছেলেকে থানায় বসিয়ে রাখা হয়েছে, এরপর থেকেই ফোন সুইচড অফ, মহারাষ্ট্রে নিখোঁজ বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক

 

দেবমুনীর সঙ্গে ছিলেন ২৫ থেকে ৩০ জন আত্মীয় ও বন্ধুরা। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেবমুনীর বাবা রামদেব মণ্ডল জানিয়েছেন, কয়েক মাস আগেই বিয়ের দিনক্ষণ স্থির হয়েছিল। কাটিহার জেলার মনিহারি ব্লকের কাতাকোষ গ্রামের বাসিন্দা রামচন্দ্র চৌধুরীর মেয়ের সঙ্গে দেবমুনীর বিয়ে স্থির হয়। সেই বাড়িতেই বসেছিল বিয়ের আসর। কিন্তু ভারী বৃষ্টির জেরে বখরপুর গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বন্যা কবলিত ওই গ্রামে গাড়ি চলাচল করা যাচ্ছিল না। তাই নৌকায় করেই বিয়ের আসরে পৌঁছয় বরযাত্রীরা। 

 

জানা গেছে, বিয়ের আসরে যাওয়ার জন্য সুসজ্জিত স্করপিও গাড়িতে করে রওনা দিয়েছিলেন দেবমুনী। খানিকটা পথ যাওয়ার পর নদীর ধারে পৌঁছন তিনি। এরপর সেখান থেকে নৌকায় উঠে ফের যাত্রা শুরু করেন। সঙ্গে ছিলেন কনেপক্ষের কয়েকজন সদস্য। সেই সময় আকাশ ঝকঝকে পরিষ্কার ছিল। কিন্তু নৌকায় যাত্রা শুরুর পরেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি শুরু হয়। 

 

?ref_src=twsrc%5Etfw">July 30, 2025

কিছুদূর নৌকায় গিয়ে, তারপর কয়েক কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে যান পাত্র ও বরযাত্রীরা। কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পর রিক্সা পান তাঁরা। গভীর রাতে বিয়ের মণ্ডপে পৌঁছন সকলে। সেই সময় সকলেই ভিজে একশা হয়ে গিয়েছিলেন। ভেজা বিয়ের পোশাকেই মণ্ডপে পৌঁছন দেবমুনী। 

 

কিন্তু বিয়ের পরেও মনখারাপ পাত্রের। তিনি জানিয়েছেন, বন্যার কারণে বিয়ের অনুষ্ঠানে জাঁকজমক ছিল না। সকল আত্মীয়রাও বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি। পাশাপাশি ব্যান্ড পার্টিও আসতে পারেনি সঙ্গে।‌ ব্যান্ড পার্টি নিয়ে নাচগান করতে করতে বিয়ের আসরে পৌঁছনোর স্বপ্ন, তাঁর আর পূরণ হল না। তবে নির্ধারিত দিনেই পছন্দের পাত্রীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পেরে যারপরনাই খুশি তিনি।