আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্কুল থেকে ফিরে নিয়মিত যেত গৃহশিক্ষিকার বাড়িতে। দিদিমণি কড়াকড়ি করলেও, পড়াশোনা করতে মন্দ লাগত না তার। সেই গৃহশিক্ষিকার দ্বারাই চরম হেনস্থার শিকার হল এক নাবালক। যার জেরে ভয়াবহ পরিণতি তার। 

দিন কয়েক আগেই গৃহশিক্ষিকার কাছে বকুনি শুনেছিল আট বছরের এক নাবালক। কারণ? নাবালকের হাতের লেখা খারাপ। গৃহশিক্ষিকার মন মতো ছিল না নাবালক ছাত্রের হাতের লেখা। এর জেরে শুধুমাত্র বকাঝকা নয়, ছাত্রকে চরম শাস্তি দিলেন তিনি। জলন্ত মোমবাতিতে নাবালক ছাত্রের হাত রেখে দিলেন কয়েক মিনিটে। আগুন পুড়ে গিয়েছে নাবালকের হাতের তুলি। বিষয়টি তিনি লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন। তিনি শেষরক্ষা হয়নি। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের মালাডে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছিল গত ২৮ জুলাই সন্ধ্যায়। আহত নাবালকের নাম, মহম্মদ হামজা খান। আট বছরের নাবালক লক্ষধাম স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। হামজার বাবা মুস্তাকিন খান জানিয়েছেন, নাবালক স্কুল থেকে ফিরে রোজ সন্ধ্যায় রাজশ্রী রাঠোর নামের এক গৃহশিক্ষিকার বাড়িতে পড়াশোনা করতে যেত। 

আরও পড়ুন: ভারতের প্রধানমন্ত্রী কে? ছাত্রদের প্রশ্নে শুধু ঢোক গিললেন, আলিয়া ভাটকেও হার মানালেন স্কুল শিক্ষক!

প্রতি সন্ধ্যায় সাতটা থেকে ন'টা পর্যন্ত মালাডের জেপি ডেকস বিল্ডিংয়ে গৃহশিক্ষিকার ফ্ল্যাটে পড়াশোনা করতে যেত সে। নাবালককে গৃহশিক্ষিকার বাড়িতে পৌঁছে দিত তার দিদি। ঘটনার দিন সন্ধ্যাবেলাতেও সে পড়তে গিয়েছিল। রাতে ওই গৃহশিক্ষিকা ফোন করে জানান, হামজা খুব কান্নাকাটি করছে। তাকে যেন বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। 

বাড়িতে ফেরার পর নাবালক ঘটনার বিবরণ দেয়। সে জানায়, বাজে হাতের লেখার জন্য জলন্ত মোমবাতির উপরে নাবালকের হাতের তালু রেখে শাস্তি দিয়েছেন গৃহশিক্ষিকা। তড়িঘড়ি করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বাবাসাহেব আম্বেদকর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় নাবালককে। এই ঘটনার পরেই থানায় ওই গৃহশিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে আহত নাবালকের বাবা। ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, গত বছর আগস্ট মাসে এই কারণেই এক নাবালিকা নিগ্রহের শিকার হয় মহারাষ্ট্রে। খারাপ হাতের লেখার জন্য শাস্তি হিসেবে ছয় বছরের নাবালিকাকে চরম শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। ওই ঘটনাতেও শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। 

ঘটনাটি ঘটেছিল থানে জেলায়। নাবালিকার পরিবারের অভিযোগ, সকাল সাড়ে এগারোটায় নাবালিকাকে পড়াতে এসেছিলেন শিক্ষিকা। কিন্তু খুদের খারাপ হাতের লেখা দেখেই রেগে লাল হয়ে যান শিক্ষিকা। শাস্তি হিসেবে লাঠি দিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করেন ওই শিক্ষিকা। পড়ানোর পর কাঁদতে কাঁদতে বাবা-মায়ের কাছে ছুটে গিয়ে অভিযোগ জানায়। তার গায়েও আঘাতের চিহ্ন ছিল। 

নাবালিকাকে নিয়েই থানায় অভিযোগ জানায় পরিবার। অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তবে তাঁকে গ্রেপ্তার করেনি। 

গতবছরেই মহারাষ্ট্রের থানের বদলাপুরে স্কুলের মধ্যে যৌন নির্যাতনের শিকার হয় দুই নার্সারি পড়ুয়া। সেই স্কুলেও অভিযোগ ছিল সাফাইকর্মীর বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তারির পরেও বদলাপুর কাণ্ডে প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে মহারাষ্ট্র। একনাথ শিন্ডে সরকারের বিরুদ্ধে পথে নামেন বিরোধীরাও। প্রতিবাদে সামিল ছিলেন শরদ পাওয়ার, উদ্ধব ঠাকরেরাও।