আজকাল ওয়েবডেস্ক: রিকি লিন লাফলিন একজন শিক্ষিকা। ২৬ বছর বয়সী এই যুবতী মিসৌরির এক বিশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে এক ভয়াবহ অভিযোগ ওঠে। এক ১৬ বছর বয়সী ছাত্রকে যৌনভাবে প্ররোচনার অভিযোগ ওঠে এই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। সূত্রে জানা গিয়েছে তিনি অভিযোগের দোষ স্বীকার করেছেন। তিনি মিসৌরির সেন্ট জেমস হাই স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। তদন্তে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত সময় এক ছাত্রের সঙ্গে স্ন্যাপচ্যাটের মাধ্যমে যোগাযোগ শুরু করেন তিনি৷ এমনকি ছাত্রকে একাধিক নগ্ন ছবি ও ভিডিও পাঠিয়েছেন। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে শোরগোল৷
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্রটি পুলিশকে জানিয়েছে যে শিক্ষিকা প্রথমে তাঁর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগ করেন। এরপর একদিন আচমকা শ্রেণিকক্ষে তাঁকে চুম্বন করেন। পরবর্তীতে আরও ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য জোর করেন। ছাত্র দাবি করেছেন যে, স্ন্যাপচ্যাটে কথাবার্তার মাধ্যমে পরিস্থিতি খুব দ্রুত গতিতে এগোয়। এখানেই শেষ নয়। তরুণ আরও জানান, ১৪ অক্টোবর শিক্ষিকা তাঁকে তাঁর নিজের বাড়িতে আসার আমন্ত্রণ জানান। ওইদিন লাফলিন তাঁর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেন। ছাত্র তাতে রাজি হননি। ঘটনার জেরে তরুণ অস্বস্তি বোধ করেন এবং বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন।
সূত্রে আরও জানা যায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয় যখন ফেল্পস কাউন্টির এক গোয়েন্দা ম্যারিস কাউন্টির কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানান। এরপর থেকেই আইনের আওতায় সংস্থাগুলি আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করে। তদন্তের প্রেক্ষিতে ২৩ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে লাফলিনের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ আনা হয়। খবর অনুযায়ী এসব অভিযোগের মধ্যে ছিল- শিশুর পর্নোগ্রাফি রাখার অভিযোগ, ফৌজদারি মামলায় ভুক্তভোগীকে প্রভাবিত করার চেষ্টা , ধর্ষণ, নাবালককে যৌনভাবে শোষণ, প্রমাণ লোপাট করা, নাবালককে পর্নোগ্রাফিক উপকরণ সরবরাহ, ১৮ বছরের নিচে শিশুকে যৌন প্ররোচনা ইত্যাদি৷
এরপর ঘটে আশ্চর্য ঘটনা। মামলাটি শেষ পর্যন্ত ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। একটি প্লি ডিল (plea deal) বা স্বীকারোক্তিমূলক চুক্তির মাধ্যমে লাফলিন তাঁর বিরুদ্ধে আনা এই গুরুতর অভিযোগগুলো থেকে মুক্তি পান। তিনি আদালতে 'প্রথম ডিগ্রির শিশুর কল্যাণে হুমকির মতো' অপেক্ষাকৃত হালকা একটি অভিযোগে দোষ স্বীকার করেন। প্রসঙ্গত এই অপরাধে বাধ্যতামূলক কারাদণ্ডের বিধান না থাকায় তাঁকে কমপক্ষে পাঁচ বছরের প্রবেশন (probation) দেওয়া হয়। অর্থাৎ তাঁকে জেলে যেতে হয়নি। তবে এই সময়কালে আইনি নজরদারির অধীনে থাকতে হবে তিনি।
মামলাটি স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। বিশেষ করে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ ধরণের গুরুতর অভিযোগের জেরে মামলার নিষ্পত্তি নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। প্রসিকিউশন এবং ডিফেন্স উভয় পক্ষের আবেদনের পর, মামলাটি ২০২৩ সালের মে মাসে স্থান পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর মামলার স্থান পরিবর্তন করে গ্রান্ডি কাউন্টিতে নেওয়া হয়। জনপ্রিয় মামলা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর বিচার নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হওয়ার উদ্দেশেই এমন সিদ্ধান্ত। এমনকি জনসাধারণের প্রভাব এড়িয়ে যেন একটি সুষ্ঠু রায় নিশ্চিত করা যায়।
তবে এই ঘটনার জেরে স্থানীয় এবং জাতীয়ভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক এবং নিরাপত্তা বিষয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। সূত্রে জানা গিয়েছে লাফলিনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ এবং আইনি প্রক্রিয়ার ফলাফলের কারণে মামলাটি উল্লেখযোগ্য জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
