আজকাল সারা বছর চুল পড়ার সমস্যায় নাজেহাল কম-বেশি সকলেই। মানসিক চাপ, খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম, রাসায়নিকের ব্যবহার এবং দূষণের বাড়বাড়ন্তের জেরে কম বয়সেই চুলের বারোটা বেজে যায়। যা আরও বেড়ে যায় বর্ষাকালে। বৃষ্টিভেজা চুল মুঠো মুঠো ঝরতে শুরু করে। শুধু চুল পড়া নয়, বৃষ্টির মরশুমে চুলের কিছু না কিছু সমস্যা লেগেই থাকে। চুল পড়া রুখতে কেউ ভরসা রাখেন নামী দামি প্রসাধনীতে, কেউ আবার ঘরোয়া টোটকায়। অনেক সময়ে হাজার যত্ন করেও অকালে চুলের ফাঁক দিয়ে উঁকি মারতে থাকে টাক। তবে হাতের কাছে কিছু ভেষজ থাকলে আর চিন্তা থাকে না। বাড়িতে এই সব ভেষজ দিয়েই চুলের পরিচর্যা করতে পারেন।
* আমলকিঃ ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের একটি পাওয়ার হাউস আমলকি। যা চুলের গোড়া শক্তিশালী করে এবং অকাল পক্কতা রোধ করে। একইসঙ্গে আমলকি মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে, খুশকি কমায় এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। নারকেল তেলে আমলকি পাউডার মিশিয়ে স্ক্যাল্পে লাগাতে পারেন। ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিন।
* অ্যালোভেরাঃ চুলের হাল ফেরাতে অ্যালোভেরার উপর ভরসা রাখতে পারেন। সিবাম উৎপাদন থেকে শুরু করে স্ক্যাল্পের পিএইচের ভারসাম্য রক্ষা করার কাজে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে এই ভেষজ। অ্যালোভেরার গুণে স্ক্যাল্পে ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে না। ফলে খুশকির হাত থেকে মুক্তি মেলে। এছাড়া চুলের গোড়ায় মজবুত করতে সাহায্য করে।
* ভৃঙ্গরাজঃ চুল স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ভৃঙ্গরাজের তুলনা নেই। বহু গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, এই ভেষজের ছোঁয়াতেই চুল পড়ার সমস্যা বাগে আসে। শুধু তাই নয়, নতুন চুল গজাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভৃঙ্গরাজ। বহু গুণের কারণেই বাজার চলতি নানা শ্যাম্পু, তেলে রয়েছে এই ভেষজের ব্যবহার। বাড়িতেও ভৃঙ্গরাজের রস করে স্ক্যাল্পে লাগালে কালো-ঘন চুল পাবেন অল্পদিনে।
* রোজমেরিঃ চুলের যাবতীয় সমস্যার রোজমেরিতেই লুকিয়ে সমাধান। বর্তমানে সুন্দর ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল পেতে অনেকেই রোজমেরি ওয়াটার বা এর তেল ব্যবহার করেন। স্ক্যাল্পকে ডিটক্সিফাই করে স্বাস্থ্যকর রাখতে রোজমেরির জুড়ি মেলা ভার। আর স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্য ঠিক থাকলে চুল পড়াও বন্ধ হয়। দ্রুত গজায় নতুন চুলও।
* মেথিঃ মেথি বীজে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং নিকোটিনিক অ্যাসিড থাকে, যা চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুলের গোড়া পুনর্গঠনে সাহায্য করে। সঙ্গে খুশকি কমায় এবং চুলের জেল্লায় বাড়ায়। মেথি বীজ সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন পেস্ট তৈরি করে মাথার ত্বকে লাগান। ৩০-৪০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
* জবাফুলঃ জবা ফুল এবং পাতায় প্রচুর পরিমাণে অ্যামিনো অ্যাসিড, ভিটামিন সি এবং উৎসেচক থাকে যা মাথার ত্বককে পুষ্টি জোগায় এবং শিকড়কে শক্তিশালী করে। টাটকা জবা ফুল নারকেল তেল বা অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে মিশিয়ে মাথার ত্বক এবং চুলে লাগাতে পারেন।

* নিমঃ নিমের শক্তিশালী অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা মাথার ত্বকের সংক্রমণ নিরাময় করে, খুশকি কমায় এবং চুলের গোড়া মজবুত করে। নিম পাতা জলে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিন। এবার সেই জল ছেঁকে নিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
* কারিপাতাঃ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যামিনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ কারিপাতা মেলানিন পুনরুদ্ধার করতে এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। সঙ্গে অকালে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যাও রোধ করে। কারি পাতা নারকেল তেলে ফুটিয়ে নিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে মাথার ত্বকে লাগান।রতে হবে নিজেকেই।
