আজকাল ওয়েবডেস্ক: শুভমন গিলের পাশে দাঁড়ালেন গৌতম গম্ভীর। এককথায় বন্ধ করে দেন যাবতীয় ট্রোল। বরং সপাটে চড় মারলেন সমালোচকদের। দাবি, তরুণ অধিনায়কের প্রতিভা নিয়ে কোনওদিন প্রশ্ন ওঠেনি। জানান, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মানিয়ে নিতে প্লেয়ারদের সময় লাগে। একইসঙ্গে বলেন, তেন্ডুলকর-অ্যান্ডারসন সিরিজে শুভমনের পারফরমেন্স দলকে অবাক করেনি। চার টেস্টে এখনও পর্যন্ত গিলের রান ৭২২। ছাপিয়ে যান যশস্বী জয়েসওয়ালকে। গতবছর ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৭১২ রান করেছিলেন তরুণ ওপেনার। একমাত্র সুনীল গাভাসকর একটি টেস্ট সিরিজে এর থেকে বেশি রান করেন। ১৯৭১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ৭৭৪ রান করেন সানি। ১৯৭৮-৭৯ সালে ঘরের মাঠে ৭৩২ রান করেন কিংবদন্তি। ঘটনা প্রসঙ্গ গাভাসকর বলেন, 'শুভমন গিলের প্রতিভা নিয়ে কারোর কোনও প্রশ্ন ছিল না। যাদের সংশয় ছিল, তাঁরা শুধুমাত্র ক্রিকেট নিয়ে বাতেলা মারে। ক্রিকেট বোঝে না। অনেকের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে একটু সময় লাগে। চলতি সফরেই শুভমনের এই কীর্তিতে ড্রেসিংরুম অবাক নয়।' বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের যুগে নটি শতরান হয়ে গিয়েছে গিলের। ছুঁয়ে ফেলেন রোহিত শর্মাকে। রোহিত ৬৯ ইনিংস নিয়েছিলেন এই জায়গায় পৌঁছতে। গিল আরও দুটো ইনিংস কম নেন। ৬৭তম ইনিংসে নিজের নবম শতরান করে ফেলেন। গম্ভীর মনে করেন, ব্যাট করার সময় নেতৃত্বের চাপ নেন না গিল। জানান, ব্যাট করার সময় একজন ব্যাটার হিসেবে খেলেন, অধিনায়ক নয়।
গম্ভীর বলেন, 'গিলের প্রতিভা নিয়ে কোনওদিন কারোর সন্দেহ ছিল না। যারা ক্রিকেট বোঝে তাঁরা ওর প্রতিভা সম্বন্ধে অবগত। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ও নিজের মান রাখছে। নেতৃত্বের পাহাড়প্রমাণ চাপ নিয়েই এমন খেলছে। আমার মনে হয়, ব্যাট করতে নামার সময় সেসব ও মাথায় রাখে না। কারণ ও যখন ব্যাট করতে নামে, একজন ব্যাটার হিসেবে নামে, অধিনায়ক হিসেবে না।' সিরিজের চতুর্থ শতরান করে কিংবদন্তিদের সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছেন শুভমন। চতুর্থ টেস্টের চূড়ান্ত দিনে সিরিজের চার নম্বর শতরান করেন। ভারত পিছিয়ে থাকাকালীন সংগঠিত ১০৩ রান করেন গিল। একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে এক সিরিজে চারটে সেঞ্চুরি করে ডন ব্র্যাডম্যান, সুনীল গাভাসকরের তালিকায় প্রবেশ করলেন তরুণ তারকা। কোনও ক্রিকেটার অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম টেস্ট সিরিজে চারটে শতরান করেনি। এর আগে তিনটে সেঞ্চুরির নজির রয়েছে। এই তালিকায় ছিলেন ওয়ারউইক আর্মস্ট্রং, ডন ব্র্যাডম্যান, গ্রেগ চ্যাপেল, বিরাট কোহলি এবং স্টিভ স্মিথ।
ম্যাঞ্চেস্টারে প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতার পর কটাক্ষের মুখে পড়েন গিল। অ্যান্ডারসন-তেন্ডুলকর ট্রফির দল ঘোষণার পর থেকেই চর্চায় ভারতের তরুণ নেতা। লাল বলের ক্রিকেটে রোহিত শর্মার উত্তরসূরি ঘোষণার পর থেকেই ২৫ বছরের তরুণের ওপর যাবতীয় স্পটলাইট। কিন্তু তাঁর ওপর আস্থার মর্যাদা রাখেন। প্রথম দুই টেস্টে জোড়া শতরান এবং একটি দ্বিশতরান করেন। কিন্তু লর্ডস টেস্টে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন। ব্যাটার এবং অধিনায়ক হিসেবে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। মাত্র ১৬ এবং ৬ রান করেন। তবে তার থেকেও বেশি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল জ্যাক ক্রলির সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়া। চতুর্থ টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেই খারাপ ফর্ম অব্যাহত থাকে। সিরিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী মাত্র ১২ রানে ফেরেন। বেন স্টোকসের বলে এলবিডব্লু হন। প্রথম দুই টেস্টে দুর্ধর্ষ ফর্মে থাকার পর আচমকা পারফরম্যান্স গ্রাফ পড়তির দিকে। তার কারণ খোঁজার চেষ্টা করলেন ভারত এবং ইংল্যান্ডের দুই প্রাক্তনী সঞ্জয় মঞ্জরেকর এবং জোনাথন ট্রট। কিন্তু সবার মুখ বন্ধ করে আবার স্বমহিমায় ভারতের তরুণ নেতা।
