আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাহুল দ্রাবিড়, ভিভিএস লক্ষ্মণ হতে পারলেন না শুভমান গিল-কেএল রাহুল জুটি। রবিবার ম্য়াঞ্চেস্টার টেস্টের পঞ্চম দিনের প্রথম সেশনেই আউট হয়ে ফিরে গেলেন তাঁরা। গিল আর্চারের শিকার এবং রাহুল এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরলেন স্টোকসের বলে। দ্বিতীয় ইনিংসে ০-২ হওয়ার পর দলের হাল ধরেছিলেন গিল এবং রাহুল। চতুর্থ দিনের শেষে তাঁদের পার্টনারশিপই ম্যাচে রেখেছিল ভারতকে। সমর্থকরা আশা করেছিলেন রবিবার তাঁরা দিনের বেশিরভাগ সময়টা ব্যাট করে বাঁচিয়ে দেবেন ম্যাচ। কিন্তু এদিন দিনের শুরুটা ভাল করলেও স্টোকসের একটা বিষাক্ত বল পিচে পড়ে সোজা কেএল রাহুলের প্যাডে লাগে। তিনি আর ফিরেও তাকাননি, সোজা হাঁটা দেন ডাগ আউটের দিকে। 

১০ রানের জন্য শতরান মিস করে কেএল রাহুল আউট হন ৯০ রানে। ঋষভ পন্থ ব্যাট করবেন কিনা জানা নেই।  রাহুলের পর নামেন ওয়াশিংটন সুন্দর। অন্যদিকেস ভালই খেলছিলেন শুভমান গিল। পিচ অসমান বাউন্স থাকায় বেশ কয়েকবার বল এসে লাগে তাঁর বুড়ো আঙুলে। এক একটা বল ডিফেন্স করার পর পরিষ্কার তাঁর চোখে মুখে যন্ত্রণার ছাপ দেখা যাচ্ছিল। তবে তা নিয়েও শতরান করেন গিল। ১৯৯০ সালে শচীন তেন্ডুলকারের পর গিলই প্রথম ভারতীয় ব্যাটার যিনি ম্যাঞ্চেস্টারে শতরান করলেন। ৯০ থেকে ১০০ রানে পৌঁছতে তাঁর লেগে যায় ৩৬ বল। এই শতরানের সঙ্গে তিনি ছুঁয়ে ফেললেন ডন ব্র্যাডম্যান এবং সুনীল গাভাসকারকে।

একই টেস্ট সিরিজে সবথেকে বেশি শতরান করা অধিনায়কের তালিকায় লেজেন্ডদের ছুঁয়ে ফেললেন ভারতীয় দলের নব অধিনায়ক। তবে শতরানের পর বেশিক্ষণ ক্রিজে টেকেননি তিনি। জোফ্রা আর্চারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল শরীর থেকে দূরে খেলতে গিয়ে কিপার স্মিথের হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন। গিলের পর নামা জাদেজাও প্রথম বলে ফিরে যাচ্ছিলেন। জো রুট ক্যাচ না ফেললে আরও বিপদ বাড়ত টিম ইন্ডিয়ার। উল্লেখ্য, শনিবার জয়সওয়াল এবং সুদর্শন ফেরার পর ম্যাচের হাল ধরেন লোকেশ রাহুল ও শুভমান গিল। ১৭২ রানের পার্টনারশিপ দুই ব্যাটারের।

এরপরেও কিন্তু বলা যাচ্ছে না ভারত ম্যাচ বাঁচিয়ে দেবে। কারণ খেলাটার নাম ক্রিকেট। বিশেষজ্ঞরা বলেন, মহান অনিশ্চয়তার এক খেলা। পঞ্চম দিন এই দুই ব্যাটারের উপরে অনেক কিছু নির্ভর করছে। বলা যায়, বাঁচা-মরা সবই এই দু'জনের উপরে। রবিবার তাঁরা যতক্ষণ ক্রিজে কাটাতে পারবেন, ততই মঙ্গল ভারতের। ক্রিকেট দেবতা অবশ্য কোন চিত্রনাট্য লিখে রেখেছেন ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টের জন্য, সেটাই দেখার। ভারতীয় বোলিংকে নিয়ে ছেলেখেলা করে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে রানের পাহাড় গড়ে। তৃতীয় দিনের শেষে ইংল্যান্ডের রান ছিল ৭ উইকেটে ৫৪৪। চতুর্থ দিনের শুরুতে বুমরাহর বলে লিয়াম ডসন (২৬) আউট হলেও ইংল্যান্ড অধিনায়ক স্টোকস ছিলেন দুরন্ত। তাঁকে রোখে কার সাধ্যি!

স্টোকস খেললেন ১৪১ রানের ইনিংস। ব্রাইডন কার্সকে সঙ্গে নিয়ে ৯৫ রানের পার্টনারশিপ গড়েন তিনি। সেঞ্চুরি হয়ে যাওয়ার পর স্টোকস আরও গতি আনেন নিজের ব্যাটিংয়ে। ভারতীয় বোলারদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করলেন স্টোকস। ১৬৪ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। বাকি ৪১ রান করেন ৩৪ বলে। শেষমেশ জাদেজার বলে তাঁর ক্যাচ ধরেন সাই সুদর্শন। স্টোকসের ইনিংসে সাজানো ছিল ১১টি চার ও ৩টি ছক্কা। ব্যক্তিগত ৪৭ রানে আউট হন কার্স। তিনি জাদেজার শিকার। ভারতীয় বোলিং নির্বিষ দেখায়। জাদেজা চার-চারটি উইকেট নেন। বুমরাহ ও ওয়াশিংটন সুন্দর ২টি করে উইকেট নেন।