আজকাল ওয়েবডেস্ক: খালের ধারে পড়েছিল একটি ভারী বস্তা। প্রথমে কেউই তা দেখে সন্দেহ করেননি। এদিকে সেই খালের ধারেই পৌঁছে গেল পুলিশ। বস্তাটি আলতো করে খুলতেই প্রথমেই বেরিয়ে এল ঠান্ডা হাত! সেই বস্তা থেকেই উদ্ধার হল এক নিথর দেহ। দৃশ্য দেখে পুলিশের পাশাপাশি শিউরে উঠেছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
জানা গেছে, এক বিবাহিত তরুণীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিল তাঁর চেয়ে বয়সে ছোট এক তরুণ। বারবার তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছিল। কিন্তু তরুণী প্রতিবার সেই বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন। অবশেষে অপমানিত হয়ে, রাগের মাথায় চরম প্রতিশোধ নিল ওই তরুণ। বিবাহিত তরুণীকে নয়, প্রেমের পথের কাঁটা তাঁর স্বামীকেই খুন করল সে।
কয়েক মাসে দেশজুড়ে তোলপাড় ফেলেছে একাধিক হত্যাকাণ্ড। যার মধ্যে, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্বামীদের নৃশংসভাবে খুন করতে দেখা গেছে একাধিক তরুণীকে। মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে রাজা রঘুবংশীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল তাঁর সদ্য বিবাহিত স্ত্রী সোনম রঘুবংশী। এই ঘটনার পর একাধিক রাজ্যে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এবারেও সেই প্রেম ঘিরেই আরও এক তরতাজা প্রাণ গেল।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের নভি মুম্বইয়ে। পুলিশ জানিয়েছে, নভি মুম্বইয়ের ভাসির বাসিন্দা ২৫ বছরের তরুণী ফাতিমা মণ্ডল ও তাঁর স্বামী আবুবাকার সুহাদলি মণ্ডল। ফাতিমার থেকে বয়সে দশ বছরের বড় ছিলেন তিনি। সুখের সংসারে কোনও অশান্তি ছিল না। তা সত্ত্বেও ঘটে গেল মর্মান্তিক ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, ফাতিমার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন ২১ বছর বয়সি আমিনুর আলি আহমেদ। তিনিও ওই এলাকার বাসিন্দা। ফাতিমা বিবাহিত জানা সত্ত্বেও নিত্যদিন তাঁকে উত্যক্ত করত আমিনুর। কখনও ফোনে, কখনও রাস্তায় মুখোমুখি হয়েই ফাতিমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিত সে। আর প্রতিবার আমিনুরের দেওয়া বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করতেন ফাতিমা।
আমিনুরের বিয়ের স্বপ্নের পথে কাঁটা ছিলেন ফাতিমার স্বামী আবুবাকার। সেই পথের কাঁটা সরাতেই খুনের পরিকল্পনা করেন তিনি। সোমবার রাতে যুবককে খুন করে বস্তায় দেহ ভরে আমিনুর। এরপর সেই বস্তাবন্দি দেহটি ভাসির খালে ফেলে দেন। প্রমাণ লোপাটের জন্য আবুবাকারের জামাকাপড় পানভেল- সিওন রোডের ধারে একটি ড্রেনের মধ্যে ফেলে দেয় সে।
সোমবার রাতে অফিস থেকে আর বাড়ি না ফেরায়, থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন ফাতিমা। পাশাপাশি আমিনুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান, তিনি বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করে। সম্ভবত এর পিছনে তার কোনও ভূমিকা রয়েছে। এরপরই আমিনুরকে আটক করে পুলিশ। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নেয় সে।
আমিনুর দেহটির সন্ধান দিতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। সেখানে পৌঁছে বস্তা থেকে নিথর দেহটি উদ্ধার করে তারা। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আমিনুরের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত এখনও জারি রয়েছে। আমিনুর বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছে।
