আজকাল ওয়েবডেস্ক: ছোটবেলায় মায়ের হাতে রান্না অপছন্দের সব্জি পাতে পড়ার দুঃস্বপ্নটা আজও অনেকের কাছে টাটকা। লাউয়ের ঘণ্ট হোক বা ভিন্ডির তরকারি, ভারতীয় বাড়ির শিশুদের পাতে অবহেলায় পড়ে থাকা এমন কত সব্জিই তো বড়বেলার স্মৃতিতে গাঁথা। কিন্তু অপছন্দের পদ এড়াতে বায়না করে বকুনি খাওয়া ছাড়া আর কীই বা করা যেতে পারে? তাই না? মোটেই না। নাগপুরের এক ১৭ বছর বয়সি কিশোর যা করল, তা শুনলে চোখ কপালে উঠবে অনেকেরই। মায়ের উপর অভিমান করে বাড়ি থেকেই পালিয়ে গেল সে। কারণ একটাই, তার মা ঢেঁড়স রান্না করেছিলেন, আর ঢেঁড়স সে দু'চক্ষে দেখতে পারে না।
মুম্বইয়ের একটি সংবাদসংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনাটি নাগপুরের। এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই কিশোর সম্প্রতি দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় পাশ করেছে। কলেজে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল সে। এমনিতে সব ঠিকঠাক চললেও ভিন্ডির তরকারি নিয়ে মা ও ছেলের মধ্যে প্রায়শই ঝামেলা লাগত। মা পরিবারের জন্য ভিন্ডির সব্জি রান্না করলেও, ছেলে তা একেবারেই পছন্দ করত না। তাই পাতে ভিন্ডি পড়লেই মায়ের সঙ্গে ঝগড়া শুরু করত সে।
আরও পড়ুন: ২৬৪৫ লিটার স্তন্য উৎপন্ন হয় বধূর শরীরে! 'রোজ রাতে ৩ ঘণ্টা..' বিপুল দুগ্ধ উৎপাদনের রহস্য ফাঁস করলেন নিজেই
গত ১০ জুলাই রাতে কিশোরের মা ফের একবার ভিন্ডির তরকারি রান্না করেন। আর তাতেই কিশোরটি প্রচণ্ড রেগে যায়। ৪৯ বছর বয়সি মায়ের সঙ্গে তুমুল ঝগড়া করে রাগের বশে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যায় সে। বাবা মা ভেবেছিলেন রাগ কমলে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরবে। কিন্তু সে গুড়ে বালি। দীর্ঘক্ষণ কেটে গেলেও ছেলে বাড়ি না ফেরায় উদ্বিগ্ন বাবা-মা তড়িঘড়ি থানায় ছোটেন। তদন্তে নামে পুলিশের অ্যান্টি হিউম্যান ট্র্যাফিকিং ইউনিট। শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ খোঁজের পর দিল্লিতে খুঁজে পাওয়া যায় কিশোরকে।
আরও পড়ুন: ১২ জন স্ত্রী! বাচ্চা করাই নেশা! ১০২ সন্তানের বাবা হয়ে অবশেষে থামলেন ৬৮-র মুসা, কেন ক্ষান্ত দিলেন? কী বললেন এ যুগের ধৃতরাষ্ট্র?
তদন্তকারী এক পুলিশ আধিকারিক সংবাদমাধ্যমকে জানান, কিশোর রাত ১১টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে সোজা স্টেশন চলে যায় এবং দিল্লির ট্রেন ধরে। সারা রাত ছেলের খোঁজ না পেয়ে পরিবার পুলিশ স্টেশনে গিয়ে নিখোঁজ ডায়েরি করে। ইন্সপেক্টর ললিতা তোড়াসে এবং তাঁর দল কেসটির দায়িত্ব নেয়। দিল্লিতে থাকা তার বন্ধুদের ফোন করে পুলিশ শেষমেশ সন্ধান পায় কিশোরের।
কয়েক দিন পরই, পুলিশকর্মীরা তাকে দিল্লি থেকে বিমানে করে নাগপুরে ফিরিয়ে আনেন। নাগপুরে পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়ার পর পুলিশকর্মীরা কিশোরের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও করেন। খাবার নিয়ে সামান্য বচসা যে এমন মারাত্মক আকার নিতে পারে, তা হয়তো কেউই ভাবেননি। অপছন্দের একটি পদ এড়াতে এক কিশোরের এমন চরম পদক্ষেপ সত্যিই অবাক করার মতো, মত দুঁদে অফিসারদেরও।