আজকাল ওয়েবডেস্ক: পহেলগাঁও হামলার তদন্তে এবার উঠে আসছে একের পর এক ভয়ানক তথ্য। এই ঘটনার জেরে ২৬ জন পর্যটককে প্রাণ দিতে হয়েছিল। তবে এই হামলার পর একটি নারকীয় আনন্দে মেতেছিল জঙ্গিরা। তারা উল্লাসের প্রকাশ করেছিল আকাশে গুলি ছুঁড়ে। যেসব জঙ্গিরা এসেছিল তারা সেদিন এই হত্যালীলার পর নারকীল উল্লাস করেছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুসারে এই তথ্য সামনে আসার পর থেকেই সকলের চোখ কপালে উঠেছে।


সেদিনকার এক প্রত্যক্ষদর্শী তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-কে জানিয়েছেন যেভাবে জঙ্গিরা তাদের উল্লাস করেছিল তা কোনওভাবে বর্ণনা করা যায় না। সেখানে তাদের এই উল্লাস জানিয়ে দিয়েছিল তারা কতটা খুশি ছিল। সেদিনের সেই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে এই প্রত্যক্ষদর্শীর গলা আজও কেঁপে উঠেছিল।


সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ষড়যন্ত্র করেছিল পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই ও লস্কর ই তইবা। তবে এই হামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও সেনার তরফে। শুধু তাই নয়, একেবারে নিখুঁত ছকে এই জঙ্গি হামলা চালাতে বিশেষভাবে দক্ষ পাক জঙ্গিদের বেছে নেওয়া হয়েছিল। ওই প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, আইএসআই-এর তরফে লস্কর কমান্ডার সাজিদ জাটকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীরে যাতে শুধুমাত্র বিদেশি জঙ্গিদের নিযুক্ত করা হয়। এই হামলার গোপনীয়তা বজায় রাখতে কোনও কাশ্মীরি জঙ্গিকে এই দলে যুক্ত করা হয়নি।


২২ এপ্রিলের জঙ্গি হামলার পাক জঙ্গিদোলতির নেতৃত্বে ছিল সুলেমান। তদন্তকারীদের অনুমান এই ব্যক্তি পাকিস্তানের স্পেশাল ফোর্সের প্রাক্তন কমান্ডো। ২০২২ সালে জম্মুতে অনুপ্রবেশের আগে এই জঙ্গি লস্করের ঘাঁটি মুরিদকেতে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। স্যাটেলাইট ফোনের লোকেশন অনুযায়ী হামলার আগে ১৫ এপ্রিল এই সুলেমন ছিল কাশ্মীরের ত্রালে। তদন্তকারীদের অনুমান হামলার এক সপ্তাহ আগে পহেলগাঁওয়ের বৈসরণ উপত্যকায় ছিল এই জঙ্গি।


প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে ২৬ নিরস্ত্রকে হত্যা করে লস্করের সঙ্গী সংগঠন টিআরএফের চার জঙ্গি। এই হামলার জবাবে ৭ মে ভোর-রাতে অপারেশন চালায় ভারত। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ন’টি জঙ্গিঘাঁটি। এরপর ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির জনবহুল এলাকা এবং সেনাঘাঁটিকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় পাকিস্তান। সেই হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি প্রত্যাঘাত করে ভারত। তাতেই তছনছ হয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের অন্তত ১১টি বায়ু সেনাঘাঁটি। ভারতীয় সেনার অভিযানে নিহত হয়েছে ১০০ জনের বেশি জঙ্গি ও ৩৫-৪০ জন পাক সেনা। শেষ পর্যন্ত ইসলামাবাদের আর্জিতে সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয় নয়াদিল্লি।

আরও পড়ুন: কমতে পারে জিএসটি? কোথায় সবুজ সঙ্কেত দিল কেন্দ্রীয় সরকার


এই যুদ্ধবিরতিতে হস্তক্ষেপ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি নিজে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যোগসূত্র হয়েছিলেন বলেই দাবি ছিল তার। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের হস্তক্ষেপের পরেই ভারত এবং পাকিস্তান দুজনেই যুদ্ধবিরতির পথে যায়। এরপর দুই দেশের মধ্যে ফের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে ভারত জানিয়ে দেয় যদি কেউ ভারতের ওপর জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা করে তাহলে ফের ভারত তার যোগ্য জবাব দেবে। সেখানে শত্রু যে হোক না কেন ভারত সেই হামলার যোগ্য জবাব দেবে। সেখানে কোনওভাবেই কোনও হামলা বরদাস্ত করা হবে না।