আজকাল ওয়েবডেস্ক: ছেলের রুশ বন্ধুর সঙ্গেই প্রেম, বিয়ে! ৫০ বছর বয়সে ফের মা হতে চলেছেন চিনা উদ্যোগপতি। গোটা বিষয়টি রীতিমতো ভাইরাল সমাজমাধ্যমে
বয়স হোক বা সামাজিক নিয়ম, প্রেম যে কোনও গণ্ডি মানে না চিনের গুয়াংঝাউ শহরের এক উদ্যোগপতি যেন সেই কথাটিই নতুন করে প্রমাণ করলেন। বছর পঞ্চাশের ওই মহিলা সম্প্রতি বিয়ে করেছেন নিজের ছেলেরই এক রুশ সহপাঠীকে। ইন্টারনেটে ‘সিস্টার শিন’ নামে পরিচিত ওই মহিলা ছেলের বন্ধুর সন্তানের মা-ও হতে চলেছেন। নিজেই সমাজমাধ্যমে একথা স্বীকার করেছেন তিনি। এই অসমবয়সী প্রেমের কাহিনী চীনের সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ঝড় তুলেছে।
জানা গিয়েছে, ৩০ বছর বয়সে বিবাহবিচ্ছেদের পর একা হাতেই নিজের ছেলে ও মেয়েকে বড় করে তুলেছেন শিন। ভাবেননি ফের কোনও দিন কোনও পুরুষ আসবে জীবনে। কিন্তু তাঁর জীবনের মোড় ঘুরে যায় বছর ছয়েক আগে। চিনা নববর্ষের নৈশভোজে তাঁর ছেলে কাইকাই নিজের তিন বিদেশি বন্ধুকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান।
আমন্ত্রিতদের মধ্যেই ছিল ডেফু নামে এক রুশ ছাত্র। রাশিয়ার অধিবাসী হলেও চিনে বেশ কয়েক বছর থাকার সুবাদে ম্যান্ডারিন ভাষায় কথা বলতে স্বচ্ছন্দ তিনি। শিনের হাতের রান্না এবং আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়ে যান ডেফু। এক রাতের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে এসে পুরো এক সপ্তাহ থেকে যান তিনি। আর তাতেই দুই হৃদয়ের মিলন।
তবে কি প্রথম দর্শনেই প্রেম? শিন এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমি তখনও বুড়ো হইনি বরং বেশ আকর্ষণীয় ছিলাম। ডেফু আমার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল। বছরের পর বছর ধরে আমাকে নানা উপহার পাঠিয়ে ও সত্যিই আমাকে চমকে দিয়েছে।” তবে প্রথম দেখায় মোটেই প্রেম হয়নি তাঁদের। এমনই দাবি শিনের। বরং এই সম্পর্ক নিয়ে প্রথমে ঘোরতর আপত্তি ছিল তাঁর। তাঁদের মধ্যে বয়সের ফারাক ২০ বছরেরও বেশি। উচ্চতাতেও বিস্তর পার্থক্য, ডেফুর উচ্চতা ১.৯৫ মিটার (প্রায় ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি)। এই সব কারণে শিন তাঁর প্রেম প্রস্তাবে পাত্তা দেননি। তাছাড়া সাংস্কৃতিক ভিন্নতা এবং নিজের অতীত জীবনের ব্যর্থ সম্পর্কের অভিজ্ঞতাও তাঁদের সম্পর্কের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করতেন তিনি।
কিন্তু ছেলের উৎসাহেই শেষ পর্যন্ত মন বদলান শিন। নিজেকে দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। চলতি বছরের শুরুতে ডেফুর সঙ্গে আইনিভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন শিন।

আরও পড়ুন: ‘ধরবে নাকি?’ পুরুষাঙ্গ দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেন প্রযোজক! টাকার বিনিময়ে সঙ্গমও করেন কামসূত্রের নায়িকা?
আরও পড়ুন: ২৬৪৫ লিটার স্তন্য উৎপন্ন হয় বধূর শরীরে! 'রোজ রাতে ৩ ঘণ্টা..' বিপুল দুগ্ধ উৎপাদনের রহস্য ফাঁস করলেন নিজেই

আর বিয়ের ৭ মাসের মধ্যেই এসে গিয়েছে সুখবর। ফের একবার মাতৃত্বের স্বাদ পেতে চলেছেন শিন। গত জুন মাসে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর ঘোষণা করেন এই মহিলা উদ্যোগপতি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, “বেশি বয়সে মা হওয়ার ঝুঁকি থাকে ঠিকই, কিন্তু ডেফুর সঙ্গে থাকলে এই ঝুঁকিটুকু নেওয়াই যায়।”
জানা গিয়েছে, আগামী বছরের মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে তাঁদের সন্তান ভূমিষ্ঠ হতে পারে। সন্তানের জন্য তাঁরা ইতিমধ্যেই একটি খাট কিনে ফেলেছেন. অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন নতুন অতিথির জন্য।
এই ব্যতিক্রমী প্রেমের কাহিনী ঘিরে স্বাভাবিক ভাবেই দ্বিধাবিভক্ত নেটদুনিয়া। একদল নেটিজেন শিনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক নেটিজেন লিখেছেন, “সিস্টার শিন কঠোর পরিশ্রম করে নিজের জীবন গড়েছেন। অবশেষে তিনি ভালবাসাও খুঁজে পেয়েছেন। সত্যিই প্রশংসনীয়। উনি যেন সুস্থভাবে সন্তানের জন্ম দেন, সেই কামনা করি।”
অন্য দিকে, অনেকেই এই সম্পর্কের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এক সমালোচকের কথায়, “এটা সস্তা প্রচার পাওয়ার জন্য সাজানো নাটক ছাড়া আর কিছুই মনে হচ্ছে না।” অন্য এক নেটিজেনের কটাক্ষ, “শিনের বয়স কি ডেফুর বাবা-মায়ের সমান?”
তবে নেতিবাচক কোনও মন্তব্যে পাত্তা দিতে রাজি নন শিন। বরং সম্প্রতি নিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টের একটি ছবি পোস্ট করেছেন তিনি। সঙ্গে লিখেছেন এক অমোঘ লাইন, “সময়ই আমাদের ভালবাসা প্রমাণ করবে।”