আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি এক মায়ের আশ্চর্য অভিযোগ উঠে এসছে৷ ২০০৩ সালে নিখোঁজ হওয়া তাঁর মেয়ের কঙ্কালের দেহাবশেষ খুঁজে পেতে সাহায্য চান পৌঢ়া। ধর্মস্থলে ঘটে ঘটনাটি। ধর্মস্থলের কাছে মেয়ের কঙ্কাল আছে বলে তাঁর দাবি। গত দুই দশক ধরে ধর্মস্থলে কথিত গণকবর, নিখোঁজ হওয়া এবং নারী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপরাধের চলমান তদন্তের মধ্যে বর্তমানে এটি এসেছে। মঙ্গলবার এক মায়ের নতুন করে অভিযোগ দায়ের করার চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮ বছর বয়স ছিল তাঁর মেয়ের। এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ছাত্রী অনন্যা ভাট ২০০৩ সালের মে মাসে তাঁরই একদল বন্ধুর সঙ্গে ধর্মস্থলে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে অনন্যা নিখোঁজ হয়ে যান বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার অনন্যার মায়ের দায়ের করা অভিযোগ অনুসারে, অনন্যা ও তাঁর বন্ধুদের দলটি কেনাকাটা করতে গিয়েছিল ধর্মস্থলে। খবর অনুযায়ী, এরপর অনন্যা মন্দির দর্শন করতে চেয়েছিলেন। সূত্রে জানা গিয়েছে অনন্যা সেখানেই থেকে যান। পরবর্তীতে অনন্যার বন্ধুরা পুনরায় ফিরে এসে তাঁকে আর খুঁজে পাননি।
'অনন্যার বন্ধুরা আমাকে ফোন করে জানায় যে আমার মেয়ে নিখোঁজ। আমি তখন কলকাতায় ছিলাম। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছাতে আমার দুই দিন সময় লেগেছিল,' বলেন অনন্যার মা সুজাতা ভাট। সুজাতা ভাট একজন কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (সিবিআই) এর প্রাক্তন স্টেনোগ্রাফার ছিলেন। সম্প্রতি তিনি অবসর নিয়েছেন। অবসর নেওয়ার আগে প্রায় নয় বছর ধরে সিবিআইয়ের তদন্ত বিভাগে দায়িত্ব পালন করেছিলেন সুজাতা।
আরও পড়ুনঃ 'আমি গুহায় সন্তান জন্ম দিয়েছি ' রাশিয়ান যুবতীর চাঞ্চল্যকর দাবি! সত্য জানলে শিউরে উঠবেন ...
সুজাতা অভিযোগ করেন যে তিনি বেলথানগড়ি থানায় নিখোঁজ মেয়ের অভিযোগ দায়ের করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে তাঁকে কোনও ব্যাখ্যা ছাড়াই ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। 'আমি যখন মন্দির প্রাঙ্গণের কাছে অপেক্ষা করছিলাম, তখন চারজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তাঁকে অপহরণ করে এবং একটি ভয়ঙ্কর সতর্কবার্তা দেয়। তারা আমাকে হাত-পা বেঁধে একটি ঘরে আটকে রাখে। এরপর আমাকে পুনরায় ফিরে না আসতে এবং ঘটনার কোনওকিছু প্রকাশ না করতে বলে। তারা বলেছিল যদি আমি মুখ খুলি, তাহলে আমার মেয়ের মতোই পরিণতি হবে আমার ' সংবাদমাধ্যম সুজাতা ভাট জানান।
এরপর তিনি আরও বলেন যে, ওই অভিযুক্তদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়ে তিনি সাময়িকভাবে কোমায় চলে গিয়েছিলেন। বেঙ্গালুরুর উইলসন গার্ডেনের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। '২০০৩ সালের জুনে কোমা থেকে সেরে ওঠার পর, আমি মামলাটি ফের অনুসরণ করার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু কিছুই এগোয়নি,' তিনি জানান।
বর্তমানে গত দুই দশক ধরে ধর্মস্থলে গণকবর, নিখোঁজ হওয়া এবং মহিলা ও বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপরাধের তদন্ত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে , তিনি ফের আশা করা শুরু করেন। তিনি ভাবেন তদন্ত অবশেষে শেষ হবে। 'আমি আমার মেয়ের মৃতদেহর অবশেষ খুঁজে বের করার জন্য অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি মেয়ের শেষকৃত্য করতে চাই,' তিনি বলেন।
শুক্রবার কড়া নিরাপত্তার মধ্যে একজন দিনমজুর আদালতে জবানবন্দি দেন। এরপর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন যে তিনি ধর্মস্থল এবং এর আশেপাশে ১০০ টিরও বেশি মৃতদেহ ব্যক্তিগতভাবে দাফন করেছেন। খবর মারফত নিরাপত্তার কারণে তাঁর পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে।
রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন নাগলক্ষ্মী চৌধুরী সোমবার মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকে এই ঘটনার তদন্তের জন্য একটি বিশেষ তদন্ত দল (SIT) গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।
৪ জুলাই দিনমজুর ওই শ্রমিক প্রথমে ধর্মস্থল পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। ১০ জুলাই তাঁকে সাক্ষী সুরক্ষা প্রকল্প, ২০১৮ এর আওতায় সুরক্ষা দেওয়া হয়। শুক্রবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে তিনি বেলথানগড়ির প্রধান সিভিল জজ এবং বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে মাস্ক পরে হাজির হন এবং তাঁর আইনি দল তাঁকে কড়া পাহারা দেয়। বর্তমানে পুরো ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চলছে।
